মণিশংকর চৌধুরী: আরজি করের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার বড় পদক্ষেপ কলকাতা পুলিশের। কলকাতা পুলিশের এলাকায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর ময়নাতদন্ত করতে গেলে এখন থেকে বাধ্যতামূলক হচ্ছে চালান। শনিবার লালবাজারের তরফে এই বিষয়ে সব থানাকে বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে। আরজি কর এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্য। তার পরই এই ইস্যুতে পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুলিশ।
গত সেপ্টেম্বর মাসে আরজি কর মামলায় নিহত চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্য। ময়নাতদন্তের সঙ্গে চালান কেস ডায়েরির সঙ্গে কেন দেওয়া হয়নি? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। এই ইস্যুতে রাজ্যের জবাব তলব করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী পুলিশের তরফে মৃতদেহ নিয়ে ময়নাতদন্তে পাঠানোর সময়ে একজন কনস্টেবলের ওই ফর্ম সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার কথা। আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ার পর প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। পরে রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল জানান, কলকাতা পুলিশের ক্ষেত্রে এই চালান (ফর্ম-৫৩৭১) ছাপানো অনেক দিন হলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর পরিবর্তে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে লিখিত রিকুইজিশন পাঠানো হয় যে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হচ্ছে, তার বিভাগীয় প্রধানের কাছে।
অথচ নিয়ম অনুযায়ী শুধু রাজ্য পুলিশ না, রেল দুর্ঘটনায় কার মৃত্যু হলে মৃতের ময়নাতদন্তের জন্য চালান বাধ্যতামূলক। ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়েছিল এই নিয়ম। পশ্চিমবঙ্গ সহ সব রাজ্যে এখনও এই নিয়ম চালু রয়েছে। কিন্তু যে কোনোও কারনেই হোক কলকাতা পুলিশ এলাকায় যেসব মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে সেগুলিতে একটা সময় এই নিয়ম চালু থাকলেও কবে যে নিয়ম বন্ধ হয়েছে বলতেই পারে না বিভিন্ন থানা।
উল্লেখ্য, এই চালানে নথিভুক্ত থাকে মৃতদেহ কী অবস্থায়? কোথায় পাওয়া গেছে? মৃতের শরীরে কোনোও দাগ আছে কী না? মৃতের সঙ্গে কী কী ছিল? চালানের দুটি কপি করতে হয় তদন্তকারী পুলিশকর্মীকে। একটি হাসপাতালে, অপরটি মৃতের পরিবারকে দেওয়া হয়। এটাই দীর্ঘদিনের নিয়ম। এবার পুরানো নিয়ম নতুন করে চালু করার নির্দেশ দেওয়া হল লালবাজারের তরফে।