সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিউমোনিয়া, হৃদরোগের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শনিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যু সংবাদ শুনে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি তাঁর স্বজন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে রবীন্দ্রসদনে গায়ককে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সেই আবেগের কথা প্রকাশ করে ফেললেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ''সকাল থেকে আমি নিজেকে সামলাতে পারছিলাম না। অনেকক্ষণ ধরে কিছু বলতে পারিনি। তারপর অরূপকে (অরূপ বিশ্বাস) ফোনে বলে দিলাম, কী কী করতে হবে। আমি কখনও অতি পরিচিতদের মৃত্যুর পর তাঁদের মুখ দেখি না। জীবিত অবস্থায় যেমন দেখেছিলাম, তেমনই আমার স্মৃতিতে রাখতে চাই। কিন্তু প্রতুলদার বিষয়টা আলাদা। এখানে আসতেই হল, না এসে উপায় ছিল না।''
শনিবার সকালে ৮২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাংলার পথে পথে তাঁর পথচলায় ইতি পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। ভুগছিলেন নিউমোনিয়ায়, পরে অন্ত্রে অপারেশন হয় তাঁর। তারপর হৃদরোগেও আক্রান্ত হন। এসবের সঙ্গে লড়াইয়ের শেষে হার মানতে হয় 'বাংলায় গান গাই'-এর স্রষ্টাকে। দিন দুই আগেই প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে দেখতে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেরিয়ে জানিয়েছিলেন, তাঁর ডাকে গায়ক সাড়া দিয়েছেন। শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। এরপর শনিবার সকালে মিলল তাঁর প্রয়াণ সংবাদ। আর তাতেই কার্যত ভেঙে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। স্তব্ধবাক হয়ে যান। অনেকক্ষণ খবরটা বিশ্বাস করতে পারেননি বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ''আপনজনের থেকেও অধিক ছিলেন। কষ্টে থাকতেন। আমি অনেকবার বলেছিলাম, আমরা একটা ব্যবস্থা করে দিই। কিন্তু উনি বলতেন, 'ঠিক চালিয়ে নেব'। আমি যখন হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম, তখন উঠে বসলেন, আমি আঙুলে হাত বুলিয়ে দিলাম। কথাও বললেন। আমাদের চিকিৎসকরা খুব চেষ্টা করেছিলেন, সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষে আর কিছু করা গেল না। কী বলব আর?'' এসব কথা বলার সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর চোখে-মুখে ফুটে উঠছিল যন্ত্রণা, স্বজন হারানোর বেদনা।