shono
Advertisement

রিহ্যাব থেকে ফিরলেও কমেনি মাদকাসক্তি! নেশাই প্রাণ কাড়ল একবালপুরের তরুণীর?

তরুণী মাদক বিক্রির সঙ্গে যোগ ছিল বলেও অনুমান।
Posted: 12:33 PM Nov 20, 2020Updated: 12:33 PM Nov 20, 2020

অর্ণব আইচ: সুন্দরী ও ডাকাবুকো। প্রতিবাদীও। এই বলেই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে পরিচিত ছিলেন নয়না। বেশি রাতেও স্কুটি নিয়ে তাঁকে কখনও হেস্টিংস, কখনও বা ময়দান অথবা ভবানীপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যেত। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাদকচক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন এই তরুণী। তবে কি নেশাই কাড়ল প্রাণ?

Advertisement

জানা গিয়েছে, সাবা ওরফে নয়নার সঙ্গে কখনও বান্ধবী সোনম আবার কখনও সোনমের মা রেশমাকেও স্কুটি নিয়ে ঘুরতে দেখা যেত। গত দুই মাস ধরে সোনম ও রেশমার সঙ্গেই থাকতেন সাবা খাতুন ওরফে নয়না। একবালপুরের (Ekbalpur) বাঙালি ওয়ার্সি লেনের স্টোরগলির বাসিন্দা রেশমার কথায়, সাবা ওরফে নয়না মাঝেমধ্যে মদ্যপান করতেন ও গাঁজা খেতেন। কিন্তু তিনি মাদক বিক্রি করতেন, এমন অভিযোগ সত্যি নয়। কোনও মাদক পাচারকারীর সঙ্গে নয়নার যোগাযোগ সরাসরি অস্বীকার করেন রেশমা। কিন্তু বুধবার গভীর রাতে যখন একবালপুরের এম এম আলি রোড থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় নয়নার দেহ উদ্ধার হয়, তখন তাঁর পকেট থেকে গাঁজা ও অন্য মাদক পাওয়া গিয়েছিল, অভিযোগ এমনই। অথচ মাত্র চার মাস আগে নয়না ফিরে এসেছেন মাদকের পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে।

বেহালার (Behala) একটি কেন্দ্রে টানা আট মাস চিকিৎসা হয় তাঁর। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাদকচক্রর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণেই বাড়িতে থাকতেন না নয়না। স্কুটি করে নয়না ও তাঁর বন্ধু-বান্ধবীদের দেখা যেত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে। এদিন নয়নার জেঠিমা সুলতানা বিবি রেশমার বাড়ি গিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন, একজন অবিবাহিত মেয়েকে কী কারণে তিনি নিজের কাছে রাখতেন? কেন তাকে বাড়িতে ফেরত যেতে বলতেন না? তাহলে কি রেশমা কোনও কাজে লাগাতেন নয়নাকে? যদিও রেশমা সম্পূর্ণভাবে তা অস্বীকার করে উত্তর দেন, মেয়ে সোনমের বান্ধবী থাকার সুবাদে নয়নাকে তিনি থাকতে দিতেন। পরিবারের প্রশ্ন, দিনকয়েক আগে হঠাৎই কীভাবে ৫০ হাজার টাকা হাতে এসেছিল নয়নার? নয়নার বোন সুনয়না জানান, তার দিদি বলেছিলেন জেঠিমা এই টাকা দিয়েছেন। জেঠিমা সুলতানা বিবি তা অস্বীকার করলে তখন বলেন, এক বন্ধুর কাছ থেকে পেয়েছেন ওই টাকা। এদিন রেশমা স্বীকার করেন যে, ওই টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি মোবাইল ফোন কেনেন নয়না। দিন পনেরো আগে বাকি ২৫ হাজার টাকা দিঘা ও মন্দারমণিতে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গিয়ে খরচ করে আসেন। রেশমার দাবি, কয়েকজন বন্ধুর নাম উল্কি করে নিজের হাতে লিখে রেখেছিলেন সাবা খাতুন ওরফে নয়না।

[আরও পড়ুন: দেশের ৬ শহর থেকে বিমান চলাচল নিয়মিত হোক, রাজ্যের কাছে আবেদন সৌগত রায়ের]

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছেন নয়না ও সুনয়না। তাঁদের এক ভাই আছে। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ভাইবোনদের মা ও বউদির কাছে রেখে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে নতুন সংসার পাতেন বাবা শেখ দুলারা। পঞ্চম শ্রেণির পর পড়াশোনা করেননি নয়না। ধীরে ধীরে বিভিন্ন লোকের সাথে মিশতে শুরু করেন। সুন্দরী নয়নার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে এগিয়ে এসেছিলেন বহু তরুণ। বিয়েও করতে চেয়েছিলেন। বোনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু সংসারের দিকে না গিয়ে ক্রমে বাউন্ডুলে হতে শুরু করেন তিনি। কুসঙ্গে পড়ে বিড়ি-সিগারেট থেকে শুরু করে ক্রমাগত মদ্যপান, গাঁজা অন্যান্য মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যোগ হয় মাদকচক্রের সঙ্গে। যদিও প্রচণ্ড ডাকাবুকো মেয়েটিকে কেউ কটূক্তি করলে রাস্তায় নেমে স্কুটি থামিয়ে মারপিট শুরু করে দিতেন। রাতবিরেতে বের হতে ভয় পেতেন না। যদিও রেশমার দাবি, রাত দশটার মধ্যেই বাড়ি ফিরে আসতেন নয়না। বছর দুই আগে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান। মূলত দিদিমার কাছে থাকতেন। কিন্তু মাদকে এতটাই আসক্ত হয়ে গিয়েছিলেন যে, মামা ইব্রাহিম ও দিদিমা মিলে মাদক ছাড়ানোর জন্য বেহালায় একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে তাঁকে ভরতি করিয়েছিলেন।

[আরও পড়ুন: ‘সুজাপুরে বোমা তৈরি হচ্ছিল না, দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য’, রাজ্যপাল-বিজেপিকে কড়া জবাব রাজ্যের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement