shono
Advertisement

গেমিং অ্যাপ প্রতারণা কাণ্ড: মাথার উপর টালির ছাদ মহিলার, অ্যাকাউন্টে ৩৮ কোটি!

পুলিশের জালে ওই মহিলা।
Posted: 09:14 AM Sep 30, 2022Updated: 09:14 AM Sep 30, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: টালির ছাদের ঘরে বাস। বেহালার বাসিন্দা সেই মহিলার ব‌্যাংক অ‌্যাকাউন্টে ৩৮ কোটি টাকা! চক্ষু চড়কগাছ লালবাজারের গোয়েন্দাদের। তবে এই অদ্ভুতুড়ে কাণ্ডের সূত্র ধরেই গোয়েন্দারা প্রমাণ পেলেন, গেমিং অ‌্যাপ প্রতারণায় জড়িত গার্ডেনরিচের ব‌্যবসায়ী আমির খানের জালিয়াতির জাল কতদূর ছড়ানো। ওঁদের দাবি, গেমিং অ‌্যাপ মারফত কোটি কোটি টাকার প্রতারণা ছাড়াও যৌনতার টোপ দিয়ে ডেটিং অ‌্যাপ, চাকরির টোপ ও পণ‌্য বিক্রির নামে কলকাতা-সহ সারা দেশ, এমনকী বিদেশিদেরও ফাঁদে ফেলেছে আমির ও তার সঙ্গীরা। দক্ষিণ ভারতের কয়েক হাজার মানুষ আমিরদের ফাঁদে পা দিয়ে কোটি কোটি টাকা খুইয়েছেন। তাই দক্ষিণ ভারতে আমিরের কোনও সহযোগী রয়েছে বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের। সুমা নস্কর নামে বেহালার ওই মহিলাও গ্রেফতার হয়েছেন।

Advertisement

আশ্চর্যের আরও বাকি ছিল। আমিরের এক সঙ্গীকে জেরা করে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি অফিসে হানা দিতেই পুলিশের নজরে আসে ‘ভূতুড়ে কাণ্ড।’ অফিসটি বন্ধ থাকলেও একাধিক কম্পিউটার চলছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। পুলিশের অভিযোগ, বিদেশের সার্ভার ব‌্যবহার করেই কোনও অ‌্যাপের মাধ‌্যমে ‘রিমোট’ বা ‘রোবোটিক’ কন্ট্রোলে অফিস চালানো হচ্ছিল এবং এর পিছনে রয়েছে আমির খানের গেমিং অ‌্যাপ জালিয়াতি চক্রের এক মূল অভিযুক্ত শুভজিৎ শ্রীমানি। আমির-কাণ্ডে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে সুমা নস্কর ছাড়াও প্রসেনজিৎ সরকার, রাহুল রায়, শমিত মণ্ডল ও প্রতীক বাজপেয়ী নামে চারজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে লালবাজার। গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃত সুমা নস্করের ব‌্যাংক অ‌্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার হওয়া ৩৮ কোটি টাকা এসেছিল আমির, শুভজিৎ-সহ কয়েকজনের অ‌্যাকাউন্ট থেকে। সুমার অ‌্যাকাউন্টে গিয়ে তা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে রূপান্তরিত হয়।

[আরও পড়ুন: বাগুইআটি কাণ্ডের ছায়া বহরমপুরে, যুবককে অপহরণ ও খুন, রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার দেহ]

সল্টলেকের অফিসটি থেকে মিলেছে ৮২টি সিম বক্স (যার এক-একটায় ২৭টি সিম), মোট তিন হাজারেরও বেশি সিম কার্ড, ২৮২৬টি এটিএম কার্ড ও ব‌্যাঙ্ক অ‌্যাকাউন্টের নথি। কীভাবে ই-নাগেটসের মতো একের পর এক অ‌্যাপ বানিয়ে ও সেগুলির নাম পালটে চক্রটি জালিয়াতির জাল বিছিয়েছিল, হাতেনাতে তার প্রমাণ। সল্টলেকের অফিসের সূত্র ধরে ও ধৃতদের জেরা করে নাগেরবাজার, গিরিশ পার্ক, পোস্তা, বেকবাগান, নিউ মার্কেট, ইলিয়ট রোড, রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড, পদ্মপুকুর, মহাবীরতলায় প্রায় এক ডজন অফিসের সন্ধানও মেলে। এক-একটা অফিস থেকে এক-একরকম ভাবে প্রতারণা করা হত। যৌনতার টোপ দিয়ে ফাঁদে ফেলা হত বহু মানুষকে। গিরিশ পার্কের অফিস থেকে ১৫ জন মহিলা আটক হয়। দুবাই ও মালয়েশিয়া ছাড়াও কয়েকটি দেশ থেকে চক্র পরিচালিত হত। মূল পান্ডা শুভজিৎ শ্রীমানি বি কে পাল অ‌্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা। দুবাইয়ে বসে সে কারবার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। যদিও গোয়েন্দাদের কাছে খবর, সে এখন ভারতেই কোথাও গা ঢাকা দিয়ে আছে।

[আরও পড়ুন: ভুয়ো পরিচয়ে পরপর ২৪ বিয়ে! আঠাশের যুবকের কীর্তিতে হতবাক পুলিশ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement