shono
Advertisement

ঠিক কী কারণে সুপারি কিলার নিয়োগের প্রস্তুতি? এবার জেরার মুখে ভুয়ো IPS-এর বান্ধবী

পুলিশের হাতে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
Posted: 09:23 AM Jul 31, 2021Updated: 09:23 AM Jul 31, 2021

অর্ণব আইচ: সুপারি কিলার নিয়োগের প্রস্তুতি নিয়েছিল ভুয়ো আইপিএসের। সেই সম্পর্কে জানতে এবার লালবাজারের গোয়েন্দাদের জেরার মুখে ভুয়ো আইপিএস রাজর্ষি ভট্টাচার্যের বান্ধবী। তাকে লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিজেকে এনআইএ ও ‘র’এর কর্তা বলে পরিচয় দিয়ে পার্ক স্ট্রিটে (Park street) এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তোলাবাজি করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিল রাজর্ষি।

Advertisement

ভুয়ো আইপিএস কাণ্ডে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। রাজর্ষির নিরাপত্তারক্ষীর মোবাইল থেকে উদ্ধার হল কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের ভুয়ো পরিচয়পত্র। গোয়েন্দারা নিশ্চিত যে, নিরাপত্তারক্ষী অভিজিৎ দাস ওরফে সন্তুকেও রাজর্ষি পুলিশকর্মী বলেই পরিচয় দিত। সেই ভুয়ো পরিচয়পত্রটির জন্য চলছে তল্লাশি। কীভাবে নিরাপত্তারক্ষীর ওই ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি হল, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ অফিসারের সঙ্গে পার্ক স্ট্রিটের একটি নামী, অভিজাত হোটেলেই পরিচয় হয়েছিল রাজর্ষির। সেখানেই তাঁকে ডেকে তাঁর কাছ থেকে সে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। এদিকে, তদন্তে উত্তর শহরতলির দমদমের এক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গেও রাজর্ষির যোগাযোগের বিষয়টি উঠে এসেছে। শনিবার রাজর্ষি ও তার নিরাপত্তারক্ষী এবং গাড়ির চালককে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হতে পারে।

[আরও পড়ুন: মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র চিকিৎসকে হেনস্তা রোগীর পরিবারের, নাম জড়াল বিধায়ক নির্মল মাজির

পুলিশ জানিয়েছে, ভুয়ো পুলিশকর্তা রাজর্ষির সঙ্গে উত্তর কলকাতার সিঁথির বাসিন্দা এক মহিলার আলাপ হয়। ওই মহিলা বিবাহিত ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। তবে স্বামীর সঙ্গে এখন মহিলার বিশেষ সম্পর্ক নেই। বলিডউডের এক গায়কের আত্মীয়াও তিনি। সিঁথিতেই ওই মহিলার সঙ্গে রাজর্ষির বন্ধুত্ব হয়। পরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। পার্ক স্ট্রিটে যাতায়াত ছিল মহিলার। ওই মহিলাকে রাজর্ষি বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু মহিলার উপর নজর পড়ে অন্য একজনের। ত্রিকোণ প্রেমেই সৃষ্টি হয় সমস্যা। নিজেকে আইপিএস বলে পরিচয় দিয়ে রাজর্ষি তাদের দু’জনের জীবন থেকে সরে যেতে বলে ওই ব্যক্তিকে। কিন্তু তিনিও একসময় নাছোড়বান্দা হয়ে যান। তার ফলেই রাজর্ষি পথের কাঁটা ওই ‘শত্রু’কে সরিয়ে ফেলতে সুপারি কিলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। রাজর্ষি ওই ব্যক্তিকে টোপ দিয়ে ডেকে খুনের ছক কষেছিল। তার জন্য সে নিজের লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনও অস্ত্রও সুপারি কিলারের হাতে তুলে দিত বলেই সন্দেহ পুলিশের। সে যে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, তা প্রমাণিত। খুনের ছক সম্পর্কিত কিছু তথ্য তার বান্ধবীর কাছে রয়েছে, এমন সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। তার সঙ্গে রাজর্ষির যোগাযোগের ব্যাপারেও বিস্তারিত তথ্য পেতে চায় পুলিশ। তাই ওই বান্ধবীকে পাঠিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এমনকী, ওই ষড়যন্ত্রে অন্য কেউ রয়েছে কি না, পুলিশ সেই তথ্যও জানার চেষ্টা করছে। যে ব্যক্তিকে খুনের ছক কষা হয়েছিল, লালবাজারে ডেকে পাঠানো হচ্ছে তাঁকেও।

পুলিশ জানিয়েছে, পার্ক স্ট্রিট থানার যে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর মোবাইলের নম্বর থেকে কয়েকজন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রাজর্ষিকে জোগান দেয়, তার সঙ্গে পার্ক স্ট্রিটের অভিজাত হোটেলেই রাজর্ষির যোগাযোগ হয়। ওই হোটেলে রাজর্ষির প্রায়ই যাতায়াত ছিল। সেখানে সে নিজেকে আইপিএস বলেই পরিচয় দিত। তার হাবভাব দেখে পার্ক স্ট্রিট ও দমদমের ওই দুই পুলিশ অফিসার তাকে আইপিএস বলেই মনে করেছিলেন। তাঁদের ভাল জায়গায় বদলি করে দেওয়ারও টোপ দেয় রাজর্ষি। ওই সুপারি কিলার খোঁজার ক্ষেত্রে সে দুই পুলিশ অফিসারের কোনও সাহায্য চেয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: PAC Row: কেন Mukul Roy-এর বিরুদ্ধে করা মামলা জনস্বার্থের? জবাব তলব হাই কোর্টের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement