shono
Advertisement

মাতৃভাষায় পুজোর পুষ্পাঞ্জলি দিলে ক্ষতি হয়? উত্তর দিলেন পুরোহিত কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্য

নিজের দীর্ঘ ৬০ বছরের পৌরোহিত্যের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন তিনি।
Posted: 07:22 PM Sep 23, 2022Updated: 08:55 PM Sep 23, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুজোর মন্ত্র মানেই তার ভাষা সংস্কৃত। একেই বদ্ধমূল ধারণা হিসেবে মেনে নিয়েছে আমাদের সমাজ। পুরোহিতরাও এই সংস্কৃত ভাষাতেই মন্ত্রোচ্চারণ করে থাকেন। যদিও সেই সংস্কৃত মন্ত্রের অর্থ অনেকেই হয়তো বুঝে উঠতে পারেন না। তবে বিশ্বাস করেন, এর ছন্দ, উচ্চারণ মনকে শান্ত করে, মনে জাগে ভক্তি। একইরকম ভাবে তাই পুজোর পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার সময় পুরোহিতের বলা মন্ত্র না বুঝেই আওড়ে যান সাধারণ মানুষ। সংস্কৃত মন্ত্র উচ্চারণ করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যাতেও পড়তে হয়। তবে সংস্কৃত ভাষাতেই যে মন্ত্রের ঐতিহ্য যথাযথ মর্যাদা পায়, এই বিশ্বাসকে সঙ্গী করেই সংস্কৃত মন্ত্রকে অভ্যাসে পরিণত করেছেন তাঁরা। তবে নিজের দীর্ঘ ৬০ বছরের পৌরোহিত্যের অভিজ্ঞতা থেকে পুরোহিত কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, মন্ত্র উচ্চারণ সেই ভাষাতেই হওয়া উচিত, যা আপনি নিজে বুঝবেন। তাতেই স্পষ্ট ভাবে দেবতার কাছে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করা যায়। একইসঙ্গে শুদ্ধ হয় উচ্চারণও। তাই বাঙালির মন্ত্রোচ্চারণ বাংলা ভাষায় হলে কোনও অসুবিধা নেই। এই প্রেক্ষিতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-এর উদ্যোগ ‘পুষ্পাঞ্জলি #ChantBangla’। কিন্তু রাতারাতি কি সংস্কৃত থেকে মন্ত্রের এই বঙ্গানুবাদ মেনে নেওয়া যায়? এতে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ক্ষতি হবে না তো? এরই উত্তর দিলেন পুরোহিত কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্য (Kaliprasanna Bhattacharya)।

Advertisement

তাঁর কথায়, “পুষ্পাঞ্জলি দিতে গিয়ে আমার নিজের ৬০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে দেখতে পাই, যারা মন্ত্রগুলি পাঠ করছে, তাদের চোখের মণি এদিক-ওদিক নড়াচড়া করে। তার থেকে বুঝতে পারি, তারা মন্ত্রগুলো বুঝতে পারছে না। এই মন্ত্রগুলোকে যদি নিজের মাতৃভাষায়, বাংলায় বলা যায়, তাহলে সে নিজের মনের ভাবটাও সুন্দরভাবে প্রকাশ করতে পারে।” এরপরই যোগ করেন, “যখন এই মন্ত্র রচনা হয়েছিল, তখন সকলে সংস্কৃত ভাষায় কথা বলত। এখন প্রত্যেক ভারতবাসী যদি নিজের ভাষায় মায়ের কাছে নিজের চাহিদাটা বলতে পারে, তার থেকে সুন্দর আর কী হতে পারে! সংস্কৃত কতগুলো কথা উচ্চারণ করে তার মানে বুঝলাম না, ফুল দিলাম। কিন্তু তারপর বুকে হাত দিয়ে মায়ের কাছে যে মনের ভাবটা প্রকাশ করছি, সেটা নিজের ভাষাতেই করি।”

[আরও পড়ুন: হিজাব কাণ্ডে ইরানের প্রতিবাদীদের পাশে WhatsApp, সাহায্যের আশ্বাস কর্তৃপক্ষের]

মায়ের কাছে অঞ্জলি দেওয়ার সময় আমরা যা উচ্চারণ করি, তার সবটাই কিন্তু মন্ত্র নয়। কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, “মন্ত্রের যে বীজ, যেমন মা দুর্গার মায়াবীজ ‘হৃং’, এটাই মন্ত্র। বাকিগুলো শব্দবিন্যাস করে তার রূপটা বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা ভেবে নিয়েছি পুরোটাই মন্ত্র। তাই সকলকে বলছি, নিজের মনের ভাবটাকে যদি নিজের ভাষায় প্রকাশ করা যায়, সবাই তা গ্রহণ করবে।”

[আরও পড়ুন: ডেডলাইন ৩০ নভেম্বর! ৫৯ হাজার শিক্ষকের মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]

বিশ্ব জুড়ে তাই বাঙালি এবার পুজোয় অঞ্জলি দেবে বাংলাতেই। মন্ত্রের বঙ্গানুবাদ করেছেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, পবিত্র সরকার (Pabitra Sarkar) ও কালীপ্রসন্ন ভট্টাচার্য। এই উদ্যোগের পাশে দাঁড়ান আপনিও। আপনার এলাকার পুজো কমিটিকে বাংলা মন্ত্রে পুষ্পাঞ্জলি আয়োজনে উৎসাহিত করুন। বাংলা মন্ত্র ডাউনলোড করতে এবং ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-এর উদ্যোগ ‘পুষ্পাঞ্জলি #ChantBangla’ বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন: chantbangla.org

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement