shono
Advertisement

হাতের মেহেন্দি তরতাজা নাবালিকাকে ঠেলে দিয়েছিল মৃত্যুর মুখে! প্রাণ ফেরাল কলকাতার হাসপাতাল

ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ওই নাবালিকা।
Posted: 11:10 AM Jul 24, 2022Updated: 11:10 AM Jul 24, 2022

অভিরূপ দাস: হাত জুড়ে মেহেন্দির আঁকিবুঁকি। শখের প্রসাধনী যে তরতাজা ষোড়শীকে মৃত্যুর কিনারে এনে দাঁড় করাবে, কে ভেবেছিল? ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) সেই সুনীতা ঝাওয়ারকে কার্যত পুর্নজন্ম দিল কলকাতার হাসপাতাল।

Advertisement

আত্মীয়ার বিয়ের জন্য দু’হাতে মেহেন্দি করেছিল সুনীতা। বিয়ে খেয়ে আচমকাই পেট খারাপ। জলের মতো পায়খানা হচ্ছিল। একাধিক বার জলের মতো পাতলা পায়খানা হওয়ার ফলে শরীরে জল কমে গিয়েছিল। তাড়াহুড়োয় রোগীকে এক স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। হাতজুড়ে গাঢ় মেহেন্দির আঁকিবুঁকি। শিরা ঠাওর করতে পারেননি চিকিৎসক। স্যালাইনের সূঁচ ঢুকিয়ে দেন আর্টারি বা ধমনির মধ্যে। এরপরই বিপত্তি।

[আরও পড়ুন: SSC Scam: ‘ও দাদা পার্থ, তোমার কেরিয়ারটা নষ্ট করল অর্থ’, গানে গানে পার্থকে আক্রমণ বিজেপি বিধায়কের]

আর্টারির প্রেশার অত্যন্ত বেশি থাকে। স্যালাইনের সুচ সেখানে ঢুকিয়ে দেওয়ার ফলে হিতে বিপরীত হয়। বুদবুদ করে রক্ত উঠে আসতে থাকে উপরের দিকে। সূঁচ ঢুকে যাওয়ায় আর্টারি বন্ধ হয়ে যায়। রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। শেষমেশ কালো হতে থাকে গোটা হাত। পচন ধরতে শুরু করে। মেয়ের এমন অবস্থা দেখে দেরি করেননি সুনীতার মা-বাবা। ৪৪০ কিলোমিটার উজিয়ে তাকে নিয়ে আসা হয় মুকুন্দপুর আমরি হাসপাতালে।

প্লাস্টিক রিকনস্ট্রাকশন সার্জন ডা. অনির্বাণ ঘোষের অধীনে ভরতি করা হয় তাঁকে। যে হাত বাদ দিয়ে দিতে হত, ধীরে ধীরে সেই হাতে সাড় ফিরিয়ে দিয়েছেন ডা. ঘোষ। কী থেকে এমন বিপত্তি? ডা. অনির্বাণ ঘোষ জানিয়েছেন, ১৬ বছরের মেয়েটি মেহেন্দি করেছিল হাতে। দুটো কারণে এমন বিপত্তি, মেহেন্দির নকশাকে বাঁচাতে গিয়েই ভুল জায়গায় সূঁচ ঢোকানো হয়। অন্যদিকে গাঢ় নকশার জন্য শিরা ঠাওর করতে পারেননি চিকিৎসক। হাতুড়ে চিকিৎসক ভুল করে ধমনির মধ্যে স্যালাইনের সুচ ঢুকিয়ে দেন। আর্টারিতে শিরা প্রবেশে কী হতে পারে? শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নিশান্তদেব ঘটক জানিয়েছেন, আর্টারি বা ধমনিতে স্যালাইনের সুচ ঢুকিয়ে দেওয়া অত্যন্ত মারাত্মক। আর্টারির যে অংশে সূঁচ ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তার নিচের অংশে রক্ত সঞ্চালন বিঘ্নিত হয়। রক্ত সঞ্চালন বিঘ্নিত হলে ধীরে ধীরে ওই অংশের কোষগুলো মরে যেতে থাকে। চিকিৎসা পরিভাষায় একেই বলা হয় নেক্রোসিস।

যেমনটা হয়েছিল সুনীতারও। হাতের শিরা পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে শিরা, ধমনিগুলো করে পুনর্স্থাপন করা হয় হাসপাতালে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করা হচ্ছে রক্ত চলাচল। ডা. অনির্বাণ ঘোষ জানিয়েছেন, মেহেন্দি বাঁচাতে গিয়ে গোটা হাতটাই বাদ চলে যেত সুনীতার। ত্বকে পচন ধরেছিল। রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘা হয়ে গিয়েছিল। যেমনটা হয় অতিরিক্ত ঠান্ডায় ফ্রস্ট বাইটে। ঝাড়খণ্ডের কন্যার কনুইয়ের পর থেকে নিকষ কালো হাতটা বাঁচিয়ে তিলোত্তমা প্রমাণ দিল পড়শি রাজ্যের ভরসা এখনও পশ্চিমবঙ্গ।

[আরও পড়ুন: SSC দুর্নীতিতে জড়িত মোনালিসা দাস! খবরের শিরোনামে বোনের নাম দেখে হতবাক দাদা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement