গৌতম ব্রহ্ম: স্বাধীনতা দিবস বদলের দাবি তোলায় আরএসএস মোহন ভাগবতের তীব্র নিন্দা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে দিলেন সংবিধান পাঠ। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র নিন্দার সুরে জানালেন, ''বাবাসাহেব আম্বেদকর সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। তাঁকে আমরা সবাই শ্রদ্ধা করি। আর তাঁকে এমন অপমান! আমি একথা শুনে অবাক, হতাশ। এটা দেশবিরোধী মন্তব্য। স্বাধীনতায় বিশ্বাসী আমরা। সার্বভৌমত্ব, একতায় বিশ্বাসী।''
বিতর্কের সূত্রপাত গত সোমবার। ইন্দোরের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। সেখানে বক্তব্য রাখতে উঠে অযোধ্যায় রামমন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিনকে 'প্রকৃত স্বাধীনতা' বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “আগে এই দিনটিকে বলা হত বৈকুন্ঠ দ্বাদশী। তবে এখন থেকে বিশেষ এই দিনকে আমাদের প্রতিষ্ঠা দ্বাদশী বলা উচিত। কারণ কয়েকশো বছর ধরে শত্রুর আক্রমণ সহ্য করা ভারত আসল স্বাধীনতা ওইদিন পেয়েছে। এতদিন স্বাধীনতা ছিল, কিন্তু তা প্রতিষ্ঠিত ছিল না।”
এই মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব কংগ্রেস থেকে বিভিন্ন বিরোধী দলগুলি। এনিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে এর তীব্র নিন্দা করে ভাগবতকে সংবিধানের পাঠ পড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, "আমি মনে করি, আমাদের দেশ ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীন হয়। এই যে মন্তব্য করেছেন উনি, হয় জেনে করেছেন, অথবা না জেনে, আমি জানি না। কিন্তু আমি মনে করি, এটা দেশবিরোধী মন্তব্য। আপনারা কী মনে করেন? যে কোনও দল বা সংগঠন চাইলেই কি দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, যখন ইচ্ছে পালটে দিতে পারে? এটা হয় না। আমাদের স্বাধীনতা আমাদের গর্ব। আমাদের সাধারণতন্ত্র আমাদের গর্ব, গণতন্ত্র গর্ব আমাদের।''
এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গান্ধীজি, নেতাজি, আবুল কালাম আজাদ, বাবাসাহেব আম্বেদকর, ভগৎ সিং থেকে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বিদ্যাসাগর, রামমোহন রায়, চিত্তরঞ্জন দাশ, মাতঙ্গিনী হাজরা, বিনয়-বাদল-দীনেশ, বাঘাযতীন, বাসন্তীদেবী-সকলের নাম উল্লেখ করেন। বলেন, ''সাধারণ মানুষও আন্দোলনে ছিলেন, কতশত মানুষ দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আমরা ভুলিনি।"