রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: স্যালাইনের বিষক্রিয়ায় প্রসূতি মৃত্যুতে রাজ্যের তৃণমূল সরকার ও স্বাস্থ্য দপ্তরকে একহাত নিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিপিএম নেতা বলেন, 'রাজ্যের হাসপাতালে নিষিদ্ধ, জাল স্যালাইন সাপ্লাইয়ের দুষ্ট চক্র চলেছে, কিন্তু সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যার জেরেই মৃত্যু হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতির। গুরুতর অসুস্থ হয়ে কোমায় রয়েছেন আরও তিনজন।'
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুতে একের পর এক মারাত্মক অভিযোগ সামনে আসছে। অভিযোগ, মেয়াদ উত্তীর্ণ, নিম্নমানের স্যালাইন ও ওষুধপত্র ব্যবহার করা হয়েছে রোগীদের। স্যালাইনের বোতলে ছত্রাকও মজুত ছিল বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে বৃহষ্পতিবারই হাসপাতাল সুপারকে লিখিতভাবে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। তার মধ্যেই শুক্রবার সকালে মারা যান মামনি রুইদাস(২০) নামে এক প্রসূতি। অসুস্থ হয়েছেন আরও চারজন। তাঁদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। এদিন সকালে তাঁদের মধ্যে একজনের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে। কীভাবে এই গাফিলতি ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে এদিন সকালেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্যবিভাগের ১৩ প্রতিনিধির দল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেন তাঁরা।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভে দেখায় এসএফআই, ডিওয়াইএফআই। পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধাক্কাধাক্কি হয় বিক্ষোভকারীদের। যার জেরে আটক করা হয় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বিবৃতি দেন সিপিএম নেতা সেলিম। তিনি বলেন, 'বেআইনি কারবারের বিরুদ্ধে শনিবার মেদিনীপুরে ছাত্র যুব মহিলাদের বিক্ষোভের সময় পুলিশ সিপিআই(এম)’র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক বিজয় পাল-সহ ১৫ জন আন্দোলনকারীকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। রবিবার সিপিআই(এম)’র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্মেলনের প্রাক্কালে পুলিশের এই অতিসক্রিয়তা থেকে নবান্নের ছত্রছায়ায় দুর্নীতিচক্রের কারবার স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।'
এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যভবন অভিযানের হুঁশিয়ারি দিয়ে সেলিমের অভিযোগ বলেন, 'টাকা কামানোর জন্য মানুষের প্রাণ নিয়ে খেলছে তৃণমূল সরকারের। এমন পরিস্থিতি চললে দরকার হলে রোগী, ডাক্তার, ছাত্র-যুব, শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর সবাই মিলে স্বাস্থ্যভবন অভিযান করতে হবে।'