গৌতম ব্রহ্ম: দীর্ঘ লড়াইয়ে সাফল্য। এবার শুধুই এমবিবিএস ডাক্তার নয়, আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরাও ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন। তা সমান ভাবে মান্যতাও পাবে। গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে এমনই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার।
এ নিয়ে কেন্দ্রের নির্দেশিকা ছিল। রাজ্য়েরও সায় ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি এবং সিদ্ধা চিকিৎসকদের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে প্রচুর সমস্যা হত। দেহ সৎকার করতে গিয়ে মৃতের পরিজনদের বিপাকে পড়তে হয়েছে, এমন নজিরও বহু আছে। অনেক সময়ই মর্ডান মেডিসিনের ডাক্তাররা এই বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে বসতেন। দুই শ্রেণির চিকিৎসকদের এই দড়ি টানাটানির জেরে দিনের পর দিন তীব্র সমস্যায় পড়তে হয়েছে মৃতের পরিবারকে। এমনকী এই জন্য শ্মশান থেকে দেহ ফিরিয়েও আনার ঘটনাও ঘটেছে। ফিরে এসে মর্ডান মেডিসিনের চিকিৎসকে দিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করাতে হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘জেলে চাল পাঠাব, পিষে সিন্নি বানাবেন’, অনুব্রতর গড়ে দাঁড়িয়ে কটাক্ষ সুকান্ত মজুমদারের]
এই সমস্যা এতটাই তীব্র আকার নিয়েছিল যে রাজ্যের আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা এর বিরুদ্ধে বেশ কয়েক দফা বিক্ষোভও দেখান। বহু জেলাশাসক, বিডিওর দপ্তরেও বিক্ষিপ্ত ভাবে চলেছিল আন্দোলন। অবশেষে মিটল সমস্যা। রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিল, এমবিবিএস ডাক্তারদের মতোই যাঁরা ইন্ডিয়ান মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, সেই চিকিৎসকরাও এবার থেকে ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন এবং তা সমান ভাবে গ্রাহ্য হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই সংক্রান্ত একটি আইন ইতিমধ্যেই রয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদনও দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু কার্যত উপেক্ষিতই হত এই অর্ডার। এবার রাজ্য গেজেট নোটিফিকেশন দেওয়ায় সেই জটিলতার অবসান ঘটল। রাজ্য আয়ুর্বেদ পরিষদের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. প্রদ্যুৎ বিকাশ কর মহাপাত্র বলেন, “এতদিন গেজেট নোটিফিকেশন না থাকায় মর্ডান মেডিসিনের চিকিৎসকদের কাছে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে আমাদের। সমস্যায় পড়তে হত মৃতের পরিবারকেও। বহু অশান্তির পর অবশেষে জটিলতা কাটল। এবার আমরা অনেক সম্মান নিয়ে কাজ করতে পারব।”
ডা. সুমিত সুর জানান, তাঁরাও তো এমবিবিএস চিকিৎসকদের মতোই চার-পাঁচ বছর ধরে চিকিৎসা নিয়ে লেখাপড়া করেন। মৃত্যু হল কি না, তাঁরাও বোঝেন। তাই এভাবে তাঁদের খাটো করার কোনও মানে হয় না। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে তাই দারুণ খুশি আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা।