shono
Advertisement

বাড়তি ভাড়া দিলেও চলছে না এসি! ক্যাব যাত্রায় চূড়ান্ত যন্ত্রণার শিকার যাত্রীরা

কতদিনে সমস্যা সমাধান হবে সেই অপেক্ষায় যাত্রীরা।
Posted: 02:12 PM Jun 14, 2022Updated: 02:12 PM Jun 14, 2022

নব্যেন্দু হাজরা: বাড়ছে গরম। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অভিযোগও। ব্যস্ত সময়ে বাড়তি সারচার্জের টাকা গুনেও এসির হাওয়া পাচ্ছেন না যাত্রীরা। গরমে ঘেমে-নেয়ে একশা হচ্ছেন তাঁরা। যাত্রীদের দাবি, ৯০ শতাংশ ক্যাবেই এসি চলে না। করোনার অজুহাতে যা বন্ধ হয়েছিল, সেই রেওয়াজ এখনও চলছে। এসি চালাতে জোর করলে বাধছে বচসা। বাধ্য হয়ে অনেক সময় এসির হাওয়া খেতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকাও। পরিস্থিতি এমন হচ্ছে, অ্যাপ ক্যাবের যাত্রা আতঙ্কের হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

Advertisement

রবিবার সকালে মুকুন্দপুরের (Mukundapur) বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অসুস্থ বাবাকে বেলেঘাটার বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য ক্যাব (App Cab) বুক করেছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী সায়ন্তন নিয়োগী। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও চালক প্রথমে এসি চালাননি বলে অভিযোগ। গাড়ি কিছুটা যেতেই গরমে তাঁর বাবা ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। যা নিয়ে শুরু হয়ে তর্কাতর্কি। তখন বাড়তি ৫০ টাকা দেওয়ার কথা বলায় চালক এসি চালান।

[আরও পড়ুন: কয়লা পাচার মামলায় ফের অভিষেকপত্নীকে জেরা, রুজিরার বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের]

ভ্যাপসা গরমের ঠেলায় বাসের ভিড় ঠেলে অফিসে যাতায়াতই আতঙ্কের হয়ে দাঁড়াচ্ছে মানুষজনের। তাই যাত্রীরা অনেকেই যাতায়াতের মাধ্যম হিসাবে অ্যাপ ক্যাব বেছে নিচ্ছেন। ভাবছেন, এসির হাওয়া খেতে খেতে গন্তব্যে পৌঁছবেন। কিন্তু ভাবনাই সার। গরমে তেতেপুড়েই ক্যাবে চড়তে হচ্ছে তাঁদের। বেহালা থেকে ভবানীপুর যাবেন বলে এদিন ক্যাবে চড়েছিলেন কলেজ-ছাত্রী সায়নী চৌধুরী। এসি চালাতে বলতেই চালক সোজা জানিয়ে দেন, চলবে না। এসির জন্য বাড়তি টাকা লাগবে। শুরু হয় তীব্র বচসা। মাঝরাস্তাতেই ক্যাব ছেড়ে নেমে যান ওই ছাত্রী। শুধু সায়ন্তনবাবু বা সায়নীর সঙ্গেই অ্যাপ ক্যাবে এই হেনস্তার ঘটনা ঘটছে তেমনটা নয়। ফোস্কা পড়া গরমেও ক্যাবে এসি চলছে না অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। বাড়তি ভাড়াতেও মিলছে না সুরাহা।

কিন্তু কী কারণে এই এসি বন্ধ রাখা হচ্ছে ক্যাবে? ইউনিয়নের নেতা থেকে চালকরা বলছেন, জ্বালানির খরচ কিছুটা সাশ্রয় করতেই তাঁরা এসি চালাচ্ছেন না। ধরা যাক, একটা নন এসি গাড়ি, যেখানে এক লিটার তেলে ১৫ কিলোমিটার ছোটে। সেখানে এসি চালিয়ে গাড়ি ছোটালে তা যাবে ১২ কিলোমিটার। আর তা জ্যামে দাঁড়ালে খরচ আরও বেশি। তেলের খরচ বেড়েই চলেছে, সঙ্গে পুলিশ কেস। তার উপর এসি চালিয়ে গাড়ি চালালে মালিক, ক্যাব সংস্থাকে টাকা দেওয়ার পর চালকের পকেটে আর কিছু থাকছে না। সেই কারণেই এসি বন্ধ রাখছেন তাঁরা। গাড়িতে এসি চালালে তো ইঞ্জিনের উপর চাপ পড়ে। সেক্ষেত্রে জ্বালানির খরচ বেশি হয়। গাড়ির চাহিদাও আগের তুলনায় এতটাই কমে গিয়েছে যে, সারচার্জও আগের মতো উঠছে না বলে দাবি চালকদের। ফলে তাঁদের রোজগার কমেছে। তাই এসি বন্ধ রেখেই যেটুকু সাশ্রয় করা যায়, সে চেষ্টাই করেন তাঁরা।

[আরও পড়ুন: তপন দত্ত হত্যা মামলা: CBI তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের মামলা]

যাত্রীদের বক্তব্য, যে টাকায় এতদিন এসি গাড়িতে চড়া যেত, সেই টাকাতেই কেন নন এসিতে চড়বেন তাঁরা। এসি না চালালে ভাড়া সেক্ষেত্রে কিছুটা কমানো উচিত। সমস্যা এড়াতে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির নিয়ন্ত্রণে রাজ্যে জারি হওয়া সরকারি নির্দেশিকা বলবৎ করার দাবি উঠেছে। তবে সরকার জানিয়েছে, তা বলবৎ করতে আরও দিন দশেক অন্তত অপেক্ষা করতে হবে। চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবহিত আছে অনলাইন ক্যাব অপারেটর গিল্ড। ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘আমরা দাবি জানিয়েছি, প্রতি কিলোমিটার নূন্যতম ভাড়া ২৫ টাকা করতে। আর এসি, নন এসি অপশন রাখা হোক যাত্রীদের জন্য।” অন্যদিকে সিটু পরিচালিত অ্যাপ ক্যাব সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ মনু বলেন, “সব ক্যাব যে এসি বন্ধ রাখছে, তেমনটা নয়। তবে ভাড়া না বাড়ালে এসি চালিয়ে কোনও টাকাই চালকের পকেটে থাকছে না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement