সুব্রত বিশ্বাস: জানলার কাচ ভেঙে একেবারে ফিল্মি কায়দায় কলকাতার (Kolkata) বি আর সিং হাসপাতালের (B.R Singh Hospital) পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক রোগী। বৃহস্পতিবার রাতে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাথমিক সন্দেহে অনুমান, ওই ব্যক্তি মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তবে আত্মহত্যার কারণ খতিয়ে দেখতে এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে চার চিকিৎসককে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনও করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, দু’দিন আগে ব্লাড সুগার, হাইপারটেনশন ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হন সোনারপুরের বাসিন্দা দিলীপ দে (৪০)। তিনি শিয়ালদহ ইলেকট্রিক বিভাগের কর্মী। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ হাসপাতালের কর্মী ও রোগীরা তাঁকে ওয়ার্ডের বাইরে পায়চারি করতে দেখেন। এরপর হঠাৎই দৌড়ে এসে একেবারে ফিল্মি কায়দায় জানলার কাচের উপর লাফিয়ে পড়েন। আর সেটি ভেঙে একেবারে পাঁচতলা থেকে নিচে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর পরিবারের লোকজনকে খবর দেওয়া হয়। তবে পরিবারের তরফ থেকে অবশ্য চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে মানুষের ‘দুয়ারে’ পৌঁছতে হবে, রাজ্যনেতাদের ‘টাস্ক’ দিয়ে গেলেন শাহ]
ইতিমধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। আত্মহত্যার কারণ খতিয়ে দেখতে চার চিকিৎসকের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি প্রচন্ড মাদকাসক্ত ছিলেন। এমনকী মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। তবে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ কিছু এখনও পাওয়া যায়নি।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে জানলার গ্রিল ভেঙে রেখে দেওয়ার জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন হাসপাতালের কর্মীরা। তাঁদের কথায়, মেরামতের জন্য গ্রিল ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তার বিকল্প না রাখায় রোগী জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিয়েছে। তবে পূর্ব রেলের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আগেই অভিযোগ করেছিলেন কর্মী সংগঠনের সর্বভারতীয় নেতা শিবগোপাল মিশ্র। তিনি বলেছিলেন, চিফ মেডিক্যাল ডিরেক্টর চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে উদাসীন। বহু প্রবীণ চিকিৎসক চাকরি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ওষুধ সাপ্লাইয়ের নানা গাফিলতি তৈরি হলেও সমস্যা সমাধান না করায় চিকিৎসকদের মধ্যে সমস্যাও বাড়ছিল। যার প্রভাব পড়ছে নানা ক্ষেত্রে। যদিও এনিয়ে স্বাস্থ্যদপ্তর কিছু জানাতে চায়নি।