অর্ণব আইচ: গল্ফগ্রিনের আবর্জনার স্তূপে মুণ্ড উদ্ধারের ঘটনায় প্রকাশ্যে মহিলার নাম, পরিচয়। তদন্তে নেমে গভীর রাতে পুলিশ জানতে পারে, ওই মহিলার নাম খাদিজা বিবি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের মুড়াগাছা কালীতলা পারুল গ্রামের বাসিন্দা। বিয়ে হয়েছিল মগরাহাটের রাধানগর গ্রামে। পরিচারিকার কাজ করতেন। আতিকুর লস্কর নামে এক রাজমিস্ত্রির সঙ্গে তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের জেরেই মহিলাকে খুন করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান। পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল আতিকুরকে শুক্রবাত গভীর রাতে আটক করে। রাত পর্যন্ত জেরা চলে আতিকুরের। আতিকুরের বাড়ি বাসকডাঙ্গা পঞ্চগ্রামে।
এদিকে, মৃত্যুর কারণ জানতে এদিন কাটা মুন্ডু উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মহিলাকে প্রথমে মাথায় আঘাত করা হয়। তারপর শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করা হয়। খুনের পর দেহ টুকরো করা হয়। এই ঘটনায় রিজেন্ট পার্ক থানা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি মামলা রজু করেছে। তদন্তে লালবাজার রিজেন্ট পার্ক থানা-সহ গল্ফগ্রিন ও নেতাজিনগর থানাকে নিয়ে সিট গঠন করেছে। কেন এই নৃশংসতা তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে গল্ফগ্রিনে এক আবাসনের পিছনে আবর্জনা নিতে এসেছিলেন সাফাইকর্মীরা। সেই সময় তাঁরা সাদা প্লাস্টিকে মোড়া বলের মতো কিছু একটা পড়ে থাকতে দেখেন। তাতে রক্ত দেখতে পাওয়ায় সন্দেহ হয় তাঁদের। ভালো করে দেখতেই বুঝতে পারেন, ওটা এক মহিলার কাটা মুন্ডু। খবর পেয়ে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। কাটা মুন্ডুটা উদ্ধার করে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনাস্থলে আসেন ডিসি (এসএসডি) বিদিশা কলিতা ও লালবাজারের হোমিসাইড টিম। নিয়ে আসা হয় স্নিফার ডগ। এদিন চারশো মিটার দূরত্বে একটি আবাসনের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে যায় ওই স্নিফার ডগ। কিন্তু সেখানে অবশ্য কিছু মেলেনি। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, টাওয়ার জাম্পিং করে খুনিকে চিহ্নিত করা হয়। মহিলার নাম পরিচয় জানতে কলকাতা-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার থানাগুলিতেও ছবি পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, প্রণয়ঘটিত কারণের জেরে মহিলাকে খুন করা হয়। বাকি দেহাংশের উদ্ধারের কাজ চলছে। পুলিশের অনুমান, প্রমাণ লোপাটে দেহাংশ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন এলাকার আবর্জনার স্তূপে। সেই কারণেই, সংলগ্ন এলাকার ভ্যাটে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। দেহ বস্তায় ভরে জলে ফেলে দেওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। ফলত, কাটা মুন্ডুর রহস্য উদঘাটনে আবর্জনার স্তূপ, জলাধার থেকে শুরু করে বহু জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।