shono
Advertisement
RG Kar Case

সেমিনার রুমের ম্যাট্রেসেই ধর্ষণ-খুন, ক্রাইম সিনে বদল হয়নি, বলছে আদালতের রায়

রায়ে ক্রাইম সিন পরিবর্তন বা অন্য কোথাও ঘটনাস্থল সংক্রান্ত যাবতীয় দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বিচারক।
Published By: Subhajit MandalPosted: 09:07 AM Jan 23, 2025Updated: 11:25 AM Jan 23, 2025

অর্ণব আইচ: আর জি কর-কাণ্ডে ‘ক্রাইম সিনে’র কোনও পরিবর্তন হয়নি। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস নির্দেশের কপিতে মন্তব‌্য করেছেন, আর জি করের চারতলায় সেমিনার হলে যেখান থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়, সেই জায়গাটিই তাঁর খুন ও ধর্ষণের ঘটনাস্থল। অর্থাৎ, স্টেজের উপর নীল রঙের ম্যাট্রেসের উপর থেকেই উদ্ধার হয়েছিল নির্যাতিতার দেহ। অন‌্য কোথাও খুন করে যে সেমিনার হলে নির্যাতিতার দেহ রেখে দেওয়া হয় বলে বিভিন্ন মহল থেকে উঠে আসা দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন বিচারক। নির্যাতিতাকে ওই ম‌্যাট্রেসের উপরই যে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে, তা নির্দেশের কপিতেই জানিয়ে দিয়েছে আদালত।

Advertisement

নির্দেশের কপিতে আদালত জানিয়েছে, নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীরা সওয়ালে জানান যে, সেমিনার রুম ‘সিন অফ ক্রাইম’ বা ঘটনাস্থল নয়। ফরেনসিক রিপোর্টে সেমিনার রুম বা যে ম‌্যাট্রেসের উপর নির্যাতিতার দেহ উদ্ধার হয, সেখানে কোনও ধ্বস্তাধস্তির চিহ্ন মেলেনি। যে কাঠের স্টেজ থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে, তা বাদে ঘরের অন‌্য কোথাও জৈবিক চিহ্ন বা দাগ মেলেনি। ফলে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাটি সেখানে ঘটেনি। এর ‘উত্তরে’ আদালত জানায়, দেহ উদ্ধারের প্রায় ৬ দিন পর, গত ১৪ আগস্ট যখন কেন্দ্রীয় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন, তখন তদন্তের জন‌্যই ঘটনাস্থলে বহু ব‌্যক্তির পায়ের ছাপ পড়েছে। অথচ নির্যাতিতার ম‌্যাট্রেসের তুলো ও অংশ, কম্বল, বেডশিট ও অন‌্য যা কিছু, তা কলকাতা পুলিশ ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠিয়েছে। ফলে তাতেই নমুনা মিলেছে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, অপরাধী ও সিবিআইয়ের আইনজীবীরা নির্যাতিতার ছবি ও দেহের ছবির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কিন্তু ছবিগুলি অত‌্যন্ত ভালোভাবে খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, যে বেডশিটের উপর নির্যাতিতা ঘুমোচ্ছিলেন, সেটিই ধ্বস্তাধস্তির চিহ্ন বহন করে। ছবি ও ভিডিও দেখে নির্যাতিতার উপর অত‌্যচারের চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে। নির্যাতিতা ঘুমোচ্ছিলেন। তাঁকে সামনে থেকে আক্রমণ করা হয়। এই হামলা ছিল তাঁর ভাবনার বাইরে। তাই তিনি ভালোভাবে বাধা দিতে পারেননি। নির্যাতিতার উপর যে জোর খাটানো হয়েছিল ও তাঁর দেহের সঙ্গে স্পর্শ হয়েছিল অপরাধী সঞ্জয়ের দেহ, তার প্রমাণ মিলেছে।

আইনজীবীদের প্রশ্ন ছিল, ধ্বস্তাধস্তি হলে নির্যাতিতার সামগ্রীগুলি একই জায়গায় থাকল কীভাবে? এই ব‌্যাপারে আদালতের বক্তব‌্য, একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, নির্যাতিতার মোবাইল, ল‌্যাপটপ, খাতা ছিল তাঁৎ দেহের ডানদিকে। সেগুলিতে কোনও ধ্বস্তাধস্তির চিহ্ন ছিল না। কিন্তু জলের বোতল ম্যাট্রেসের উপর পড়ে ছিল। একটি লাল কম্বল তিনি বালিশের মতো মাথায় দিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। কিন্তু ছবি দেখে স্পষ্ট যে, অন‌্য লাল কম্বল, যেটি তিনি গায়ে দিয়েছিলেন, সেটি এমনভাবে ম‌্যাট্রেসের বাইরে পড়ে ছিল যে, বোঝাই যায় সেটি জোর করে তুলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সওয়ালে বলা হয়, নির্যাতিতার ব‌্যাগ একইভাবে পড়ে ছিল কেন? আদালত জানান, ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, তাঁর ব‌্যাগ ছিল টেবিলের উপর, আর নির্যাতিতা ঘুমোচ্ছিলেন কাঠের স্টেজে। ফলে ব‌্যাগ এদিক-ওদিক যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। শেষ পর্যন্ত আদালত জানিয়েছে, তথ‌্য, নথি ও প্রমাণ দেখে এটা স্পষ্ট যে, সেমিনার হল, বিশেষ করে স্টেজ ও আরও ভালভাবে বলতে গেলে ম‌্যাট্রেস হচ্ছে ক্রাইম সিন বা ঘটনাস্থল, যেখান থেকে উদ্ধার হয় নির্যাতিতার দেহ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আর জি কর-কাণ্ডে ‘ক্রাইম সিনে’র কোনও পরিবর্তন হয়নি।
  • শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস নির্দেশের কপিতে মন্তব‌্য করেছেন, আর জি করের চারতলায় সেমিনার হলে যেখান থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়, সেই জায়গাটিই তাঁর খুন ও ধর্ষণের ঘটনাস্থল।
  • স্টেজের উপর নীল রঙের ম্যাট্রেসের উপর থেকেই উদ্ধার হয়েছিল নির্যাতিতার দেহ।
Advertisement