স্টাফ রিপোর্টার : "সেবাশ্রয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত উদ্যোগ। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না, সরকারি প্রচেষ্টাকে বাদ দিয়ে এ ধরনের প্রচেষ্টায় চিকিৎসা ব্যবস্থার কোনও পরিবর্তন আসবে।" শুক্রবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বারুইপুরে একটি বেসরকারি ডায়ালিসিস সেন্টারের উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই এমনই মন্তব্য করেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
নতুন বছরের শুরু থেকেই নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে ‘সেবাশ্রয়’ নামের স্বাস্থ্যশিবির করে চলেছেন অভিষেক। তবে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের এমন প্রচেষ্টাকে ‘ভাল উদ্যোগ’ বলে জানিয়েছেন স্পিকার। সরকারি পরিষেবায় কি তাহলে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের আস্থা নেই? এমনই প্রশ্নের উত্তরে সেবাশ্রয়ের সাফল্য এবং আমজনতাকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বছরভর ও ধারাবাহিকতা নিয়ে এদিন কার্যত সংশয় প্রকাশ করেছেন স্পিকার। বিমানবাবুর কথায়, "সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা সরকারকেই দায়িত্ব নিয়ে করতে হবে। কোনও মানুষ সরকারি চিকিৎসা ব্যক্তিগতভাবে দায়িত্ব নিয়ে করবেন, সেটা আমার পক্ষে বলা মুশকিল।"
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিদিনই বিনামূল্যে সরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন, সে কথাও উল্লেখ করেন স্পিকার। নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভাতেই সেবাশ্রয়ের শিবির করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি ওষুধ, পথ্য সবই ওই শিবির থেকে দেওয়া হচ্ছে। বস্তুত আর জি কর কাণ্ডের পর অভিষেকের এমন শিবির পরিচালনা নিয়ে রাজ্য সরকারের ‘সমান্তরাল’ পরিষেবা চালু করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল। যদিও স্বয়ং অভিষেক এমন অভিযোগ খণ্ডন করে বলেছেন, "রাজ্য সরকার যথেষ্ট করেছে। আমি আমার মতো করে চেষ্টা করছি।"
এদিনই বিষ্ণুপুর বিধানসভায় চলা সেবাশ্রয় শিবিরে আসেন অভিষেক। প্রথমে পানাকুয়া ও পরে আমগাছিয়া হয়ে কুলেরদাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পৈলান যুব সংঘের মাঠে শিবিরের চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি রোগীদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল। বিষ্ণুপুরের পানাকুয়ার শিবিরে জটিল ও বিরল অসুখ নিয়ে অসুস্থ কৃতী মান্না নামে একটি শিশুর চিকিৎসার বিষয় নিয়েও কথা বলেন সাংসদ। পরে শিশুটির বাবা-মাকে তাঁদের সন্তানের চিকিৎসার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দেন তিনি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন এবং প্লাস্টিক সার্জারির ব্যবস্থাও করবেন বলে অভিষেক আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁরই উদ্যোগে সেবাশ্রয় শিবির থেকে জরুরি অস্ত্রোপচার করার জন্য আলতাফ হোসেন নামে ৯ বছরের এক শিশুকে ভর্তি করা হয়েছিল জগন্নাথ গুপ্ত হাসপাতালে। গত ১৮ জানুয়ারি তার অস্ত্রোপচার হয়। এদিন অভিষেক হাসপাতালে গিয়ে ওই শিশুটির সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন। পরে নিজের ফেসবুকে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ লেখেন, "শিশুটির নির্মল-প্রাঞ্জল হাসিকে স্মৃতির মণিকোঠায় আবদ্ধ করে রাখলাম। তার এই হাসিমুখই আমার আগামীর জনসেবার প্রেরণা হয়ে থাকবে।"