স্টাফ রিপোর্টার: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর নেপথ্যে কি স্যালাইনে বিষক্রিয়া? ৩ প্রসূতির সংকটজনক অবস্থার জন্য কি দায়ী রিঙ্গার ল্যাকটেটই? নবান্নের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বসেছিল ১৩ বিশেষজ্ঞের কমিটি। প্রাথমিক তদন্ত শেষে কমিটির দাবি, 'অভিযুক্ত' রিঙ্গার ল্যাকটেট থেকে বিষক্রিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম। বরং স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের কাছে জমা পড়া রিপোর্টে 'হিউম্যান এরর' এবং অন্যান্য ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকেই দায়ী করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে যে সমস্ত সিনিয়র চিকিৎসকের ডিউটিতে থাকার কথা ছিল তাঁরা কেউ ছিলেন না। দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সূত্রের দাবি, দুই পিজিটি চিকিৎসক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সেই রাতে ১ হাজার ২৫০ বোতল রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন ব্যবহার করা হয়েছিল। অথচ বিষক্রিয়া হয়েছে মাত্র ৪ জনের। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, সেদিন রাতে ব্যবহৃত অন্যান্য ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে প্রসূতিদের উপর। চিকিৎসকরা কী কী ওষুধ ব্যবহার করেছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কমিটির সদস্যরা একটা বিষয় একমত যে শুধুমাত্র রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন থেকে এই অসুস্থতা হতে পারে না।
এ প্রসঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক তথা তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য সৌমিত্র ঘোষ বলছেন, "সংশ্লিষ্ট ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার রিঙ্গার ল্যাকটেট বা স্যালাইন থেকে এই সংক্রমণ ছড়ানো বা অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। একই ব্যাচের স্যালাইন অন্যান্য রোগীদেরও দেওয়া হয়েছে। তাহলে কীভাবে চার প্রসূতি অসুস্থ হলেন তা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্যভবনে বৈঠকে বসেছেন বিশেষজ্ঞরা।" প্রাথমিক এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখছেন স্বাস্থ্যসচিবও।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসব করাতে এসে কেশপুরের মামনি রুইদাস নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। সন্তান জন্মের পর তাঁকে যে স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল, তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে পরিবার। আরও তিন প্রসূতি – মাম্পি, নাসরিন ও মিনারা বিবির শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় গ্রিন করিডর করে মেদিনীপুর থেকে এসএসকেএমে আনা হয়েছে। তবে তাঁদের এই পরিস্থিতির জন্য স্যালাইন দায়ী নয় বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।