অর্ণব আইচ: এসএসসির ফল প্রকাশের পরও তা পালটে ‘আপডেট’ করা হয়েছিল। তালিকায় ঢোকানো হয়েছিল চাকরিপ্রার্থীর নাম। নিয়োগ দুর্নীতির বিচারপর্বে এমনই দাবি এক সাক্ষীর। এদিকে, সোমবারই সিবিআইয়ের নিয়োগ দুর্নীতির তিনটি মামলার বিচারপর্বের অষ্টম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হতে পারে। এরপর মুক্তি পেতে পারেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কারণ, সুপ্রিম নির্দেশ ছিল তেমনই। বলা হয়েছিল. ৩ মামলায় মোট ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর মুক্তি পেতে পারেন পার্থ। ফলে আগামিকাল সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর পার্থর মুক্তির ব্যাপারে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে আবেদন জানাতে পারেন তাঁর আইনজীবীরা। আদালত নির্দেশ দিলে সেই নির্দেশনামা পৌঁছবে প্রেসিডেন্সি জেলে। যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন পূর্ব যাদবপুর এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রেসিডেন্সি জেল ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনামা পাঠালে চিকিৎসকদের অনুমতি নিয়ে মুক্তি পেয়ে বাড়ি যেতে পারেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে, এসএসসির এক আধিকারিকের পদে কর্মরত ওই সাক্ষী সিবিআইয়ের নিয়োগ দুর্নীতির বিচারপর্বে এসএসসির ওয়েবসাইটে চাকরিরপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান। তিনি আদালতে জানান, এসএসসির ফল প্রকাশের পর তাঁদের অফিসেই একসঙ্গে বসেছিলেন কয়েকজন আধিকারিক। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সমরজিৎ আচার্য, পর্ণা বসু ও আরও কয়েকজন। আলোচনা চলার মাঝেই এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য আধিকারিক পর্ণা বসুকে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠান। তাঁদের মধ্যে কিছু আলোচনা হয়। কিছুক্ষণ পর পর্ণা বসু বেরিয়ে এসে তাঁদের জানান, ফল সংশোধন করতে হবে। সুবীরেশ ভট্টাচার্য পর্ণা বসুকে একটি চূড়ান্ত তালিকা দেন। তাঁকে বলা হয়, পুরনো তালিকা পালটে ও আপডেট করে চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করতে হবে। পর্ণা বসু সুবীরেশ ভট্টাচার্যর সেই নির্দেশ অন্যদের জানান। সেইমতো চূড়ান্ত তালিকাটি প্রকাশ করা হয়েছিল। যদিও ওই তালিকায় কাদের নাম ছিল, তা জানেন না বলে ওই সাক্ষী আদালতে জানিয়েছেন।
চূড়ান্ত তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা অযোগ্য চাকরিপ্রার্থী কি না সাক্ষী তা-ও আদালতে জানাতে পারেননি। ওই সাক্ষীর বয়ানে উঠে এসেছে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, যেদিন নিয়োগপত্র বিলি করা হয়, সেদিনই ‘অ্যাটনডেন্স’-এর জায়গায় এক মহিলা চাকরিপ্রার্থীর নাম ঢোকানো হয়। ওই মহিলা চাকরিপ্রার্থী ‘অ্যাটেনডেন্স’ খাতায় সইও করেন। অথচ তাঁর নাম আগে ছিল না। ওই সাক্ষীর দাবি, এসএসসির প্রাক্তন কর্তা শান্তিপ্রসাদ সিংয়ের নির্দেশেই ওই নামটি দেওয়া হয়। অর্থাৎ হঠাৎই শান্তিপ্রসাদের নির্দেশে ওই নামটি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি ওই সাক্ষীর। একই সঙ্গে ‘আরটিআই’ নামে একটি ফাইল থেকে অঙ্কিতা অধিকারীর নামও প্যানেলে ঢোকানো হয় বলে আদালতে জানিয়েছেন ওই সাক্ষী।
