স্টাফ রিপোর্টার: এক একটির দাম এক কোটিরও বেশি। কলকাতায় চালুও হয়েছিল ঘটা করে। কিন্তু মাস ছয়েক হতে চলল রাস্তায় সেগুলির দেখা মেলা ভার। কথা হচ্ছিল পরিবহণ নিগমের ভলভো বাসের। একদিকে তেলের খরচ বেশি, অন্যদিকে রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যার কারণে আপাতত সেগুলোর জায়গা হয়েছে ডিপোতেই। সিটিসির গোটা কয়েক দূরপাল্লার ভলভো চললেও অধিকাংশ বাসই এখন ডিপোয় পড়ে মরচে ধরার অপেক্ষায়।
কিন্তু কেন এই অবস্থা? পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা জানান, বছর পাঁচেক আগে থেকে পরিবহণ দপ্তর এসি ভলভো বাস নামানো শুরু করেছিল। নেমেছিল প্রায় শ’খানেক ভলভো। তার মধ্যে কলকাতাতেই সিএসটিসির ৬৩টা বাস নামানো হয়েছিল। আপাতত যার অধিকাংশই বিশ্রামে। এক আধিকারিকের কথায়, “বলতে গেলে প্রায় পঞ্চাশ কোটি টাকার ভলভোকেই বসিয়ে দিতে হয়েছে। কারণ, এই বাসে অস্বাভাবিক তেল খরচ। পরিবেশবান্ধব বাস ঠিকই, কিন্তু এক লিটার তেলে মোটে দেড় কিলোমিটার রাস্তা যায়। যেখানে অন্য বাসে আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার। এই টানাটানির সময় তাই আর আমরা ভলভোকে রাস্তায় নামাই না।” জানা গিয়েছে, ভলভোর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাসে অনেক কিছু বদলানোর প্রয়োজন। কিন্তু ওই সংস্থা টাকা না পাওয়ার কারণে রক্ষণাবেক্ষণ করছে না। আর বকেয়া টাকা না মেটালে তা করবে না। কিন্তু পরিস্থিতি যা এই টাকা না মেটালে কোটি কোটি টাকার বাস বাসিয়ে রাখতে হবে নিগমের। তাতে ক্ষতি বাড়বে।
[আরও পড়ুন: ‘মারলে পালটা শিক্ষাও পাবে বিজেপি’, নাম না করে দিলীপকে হুঁশিয়ারি জ্যোতিপ্রিয়র]
করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ন’মাস ধরে নাগাড়ে পরিষেবা দিলেও রাজ্য পরিবহণ নিগমের সরকারি বাসে তেমন যাত্রী নেই। আর তাতেই খরচ বিরাট আকার নিয়েছে। কিন্তু আয় হয়নি। অর্থাভাবে জ্বালানি কিনতে না-পারায় কলকাতা ও শহরতলির বিস্তীর্ণ অংশে বাস পরিষেবায় ব্যাপক কাটছাঁট করতে হয়েছে। দুপুরের দিকে অধিকাংশ বাসের ট্রিপ বাতিল করতে হচ্ছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রুটে এসি বাস প্রায় বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ডিজেলের দাম বাবদ সংস্থার কাছে আইওসি বা ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের বকেয়া পৌঁছেছে সাড়ে তিন কোটি টাকার কাছাকাছি। অন্য দুই রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা এইচপিসিএল এবং বিপিসিএল-কে ধরলে অঙ্কটা প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। বিভিন্ন ডিপোয় তেল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাস পরিষেবা বাতিল করতে হচ্ছে। ফলে সংকট এখন শিয়রে। যেখান থেকে বেরোতে এখন অর্থ দপ্তরের দিকে তাকিয়ে সব ক’টি নিগম।