অভিরূপ দাস: ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও করোনার সঙ্গে লড়াই করেছেন যে কোয়াক চিকিৎসকরা, জরুরি ভিত্তিতে টিকা পাবেন তাঁরাও। পাশাপাশি টিকা দেওয়া হবে স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবারের সদস্যদেরও, সিদ্ধান্ত রাজ্যের।
ডাক্তারি ডিগ্রি না থাকলেও শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে করোনা (Corona Virus) মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন কোয়াক ডাক্তাররাও। ডিগ্রিধারী চিকিৎসকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করেছিলেন তাঁরা। সূত্রের খবর, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগী দেখতে গিয়ে মারা গিয়েছেন ৪০ জন কোয়াক ডাক্তার। পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত এদের টিকাকরণের (Vaccination) ঘোষণা করল পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যদপ্তর। স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে এই সমস্ত ডিগ্রিহীন চিকিৎসককে টিকা দেওয়া হবে। রাজ্যের ৩৮ হাজার গ্রামে হাতুড়ে ডাক্তারের সংখ্যা প্রায় দু’লক্ষ। প্রতিটি জেলায় ছড়িয়ে থাকা এই সমস্ত হাতুড়ে ডাক্তারকে খুঁজে টিকা দেওয়ার দায়িত্ব জেলাশাসক (DM) এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের। শহরাঞ্চলে সেই টিকাকরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরসভাকে।
[আরও পড়ুন: ‘৩৫৬ ধারা বাগবাজারের রসগোল্লা নয় যে চাইলেই মিলবে’, শুভেন্দুকে তীব্র কটাক্ষ তৃণমূলের]
উল্লেখ্য, হাতুড়ে চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন, সরকারি স্বীকৃতি না থাকায় তাঁরা কোনওরকম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ গ্রামাঞ্চলে অগুনতি করোনা আক্রান্ত মানুষকে তাঁরা পরিষেবা দিচ্ছেন। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে চিকিৎসক-সহ রাজ্যের প্রতিটি স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবারের সদস্যদেরও জরুরি ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হবে। কারণ, তাঁদের পরিবারের লোকেরা প্রতিনিয়ত কোভিড রোগীর সংস্পর্শে আসছেন। তাই তাঁরা প্রত্যেকেই ‘হাই রিস্ক’ জোনে রয়েছেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের এই নির্দেশিকায় খুশি চিকিৎসকরা। ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের পক্ষ থেকে ডা. রাজীব পাণ্ডে জানিয়েছেন, “এই নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছি। স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবারের লোকেদের জরুরি ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তারই ফলশ্রুতি আজকের এই নির্দেশিকা।” চিকিৎসকদের পরিবারের লোককে টিকা দেওয়ার দাবিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছিল চিকিৎসকদের আরেক সংগঠন ‘প্রোটেক্ট দ্য ওয়ারিয়র্স’। সংগঠনের পক্ষ থেকে ডা. অনির্বাণ দলুই বলেন, “চিকিৎসকরা রোজই রোগী দেখে বাড়ি ফিরছেন। বাড়িতেই রয়েছেন বয়স্ক মা-বাবা। বয়স্কদের ক্ষেত্রে সুগার, প্রেশার জাতীয় কোমর্বিডিটি থাকলে ভয়ংকর আকার নেয় কোভিড। ডাক্তারদের থেকে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের যে কোনও সময় অসুখ ছড়াতে পারে। সেকথা ভেবেই চিকিৎসকদের বয়স্ক মা-বাবাকে করোনা টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ।