shono
Advertisement

ক্যানসার রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা, চুল দান করে নজির বাংলার তিন তরুণের

যে ভাবে দল বেঁধে পুরুষেরা চুল দান করলেন, তা নিঃসন্দেহে অভিনব।
Posted: 09:42 AM Feb 07, 2021Updated: 12:29 PM Feb 07, 2021

গৌতম ব্রহ্ম: বাক্সবন্দি চুল। গোছা গোছা চুল। দেখলে বোঝার উপায় নেই যে, ওই সযত্নলালিত কেশদামের মালিক কোনও নারী নয়। এগুলো কয়েক দিন আগেও অল্পবয়সি কিছু তরুণ-কিশোর-যুবকের মাথায় শোভা পেয়েছে। কেউ এক বছর, কেউ দেড় বছর ধরে চুল বড় করেছেন। শ্যাম্পু, ময়েশ্চারাইজার সহযোগে চুলের যত্ন নিয়েছেন। এবার সাধের সেই কেশগুচ্ছই তাঁরা দান করলেন। যা কিছু দিনের মধ্যে পরচুলা হয়ে শোভাবর্ধন করবে বিরলকেশ ক্যানসার (Cancer) রোগীদের মাথায়।

Advertisement

শনিবার লেক গার্ডেন্সে ক্যানসার নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন (ONG) ক্যানসারজয়ীদের নিয়ে এক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। যার নাম ‘বিজয়িনী’। সেখানেই হাজির হয়ে চুল দান করেন তিন তরুণ। তাঁদের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেন কয়েকজন তরুণীও। সংগঠনের কর্ণধার ডা. অগ্নিমিতা গিরি জানিয়েছেন, ক্যানসার রোগীদের জন্য মহিলাদের চুল দান নতুন কিছু নয়। কিন্তু যে ভাবে দল বেঁধে পুরুষেরা চুলদান করলেন, তা নিঃসন্দেহে নজির।

[আরও পড়ুন : ফের খাস কলকাতায় শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, চিৎকার করে প্রাণ বাঁচাল খুদে]

বাস্তবিকই এক নয়া ট্রেন্ডের জন্ম দিলেন তিন তরুণ— কৃষ্ণেন্দু সাহা, অঙ্কুর শরাফ ও দ্বৈপায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম দু’জন উত্তরবঙ্গের, আর দ্বৈপায়নের বাড়ি সোদপুরের নাটাগড়ে। শুরুটা করেছিলেন কৃষ্ণেন্দু। বছর দুয়েক আগে অগ্নিমিতার সংগঠন ‘দিশা ফর ক্যানসার’-এ ওয়ার্কশপ করাতে যান নাট্যকর্মী কৃষ্ণেন্দু। তখনই জানতে পারেন, কেমোথেরাপি-রেডিওথেরাপির কারণে ক্যানসার রোগীদের মাথার চুল ঝরে যায়। এই কেশহীনতা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেয় বহু রোগীকে, বিশেষত মহিলাদের। এঁদের উইগ তৈরির জন্যই ভাল চুলের দরকার। একথা শোনার পরে আর কিছু ভাবেননি। তখনই চুল বড় করে তা দানের সংকল্প নেন কৃষ্ণেন্দু। চুলদানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে একটি পোস্টও করেন। তাতে লেখেন, “ভাল লাগা থেকে শেয়ার করছি। আত্মপ্রচারের জন্য নয়।” ওই পোস্ট দেখেই উজ্জীবিত হন অঙ্কুর এবং দ্বৈপায়ন। কিছুদিন আগে অঙ্কুর নিজের জন্মদিনে চুল কেটে তা কৃষ্ণেন্দুর হাতে তুলে দেন। সরকারি স্কুলে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টের চাকরি করা দ্বৈপায়নও জানিয়েছেন, “এ ব্যাপারে কৃষ্ণেন্দুই আমার অনুপ্রেরণা।” 

কৃষ্ণেন্দু অবশ্য তাঁর দুই কাছের মানুষের ক্যানসারে হারিয়ে দেওয়ার ঘটনাকেই ‘অনুঘটক’ হিসাবে দেখছেন। “আমার অন্যতম ‘মেন্টর’ মৌসুমি সেনকে ক্যানসার কেড়ে নিয়েছে। আমার এক প্রিয় বন্ধুর মাকে ক্যানসার কেড়ে নিয়েছে। এঁরাই আমার প্রেরণা।” প্রতিক্রিয়া তাঁর। ছেলেরা এভাবে চুলদানে এগিয়ে আসায় খুশি অগ্নিমিতা। জানালেন, কৃষ্ণেন্দু সত্যি ট্রেন্ডসেটার। তরুণ প্রজন্ম সঙ্গী হলে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই অনেক সহজ হয়।

[আরও পড়ুন : ফ্রন্টের সঙ্গে নয়, আপাতত জোট নিয়ে সিপিএমের সঙ্গে আলোচনা চায় কংগ্রেস]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement