রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গ বিজেপির দুই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় ও দিলীপ ঘোষের দ্বন্দ্বে আরও ঘি ঢাললেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। ত্রিপুরার রাজ্যপাল থাকাকালীন তথাগতবাবুর সময় চেয়েও পাননি তিনি। এমন কথা প্রকাশ্যে বলে দিয়ে তথাগতকে কার্যত অস্বস্তিতে ফেললেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরই শ্রোতার আসনে একই সারিতে তথাগতবাবুর তিনটি আসন দূরে বসে থাকা দিলীপ ঘোষকে মানিক সম্বোধন করলেন, 'সবার প্রিয় নেতা' বলে। একজনের বিরুদ্ধে অনুযোগ, অন্যজনের প্রশংসা করলেন প্রকাশ্যে। যা নিয়েই চর্চা চলল বুধবার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে গেরুয়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
এদিন ন্যাশনাল লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে প্রধানমন্ত্র নরেন্দ্র মোদির নির্বাচিত বক্তব্য সংকল নিয়ে একটি বই প্রকাশ হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্চ ফাউণ্ডেশন। যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। ভাষণের শুরুতে মঞ্চের সামনেই শ্রোতার আসনে একই সারিতে বসা তথাগত রায় ও দিলীপ ঘোষ সম্পর্কে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। তথাগত রায়ের প্রসঙ্গে মানিক সাহা বলেন, "উনি(তথাগত) ত্রিপুরার রাজ্যপাল ছিলেন। আমি দেখা করার জন্য সময় চেয়েছিলাম। উনি সময় দেননি। আমি সাধারণ মানুষ তো।" আর তারপরই দিলীপ ঘোষের প্রশংসা করে মানিক বলেন, "আমাদের সবার প্রিয় দিলীপ ঘোষ। আমার বাড়ি গিয়েছিলেন আগরতলায়। সব সময় ওঁকে পেয়েছি।" দুই নেতা সম্পর্কে দুরকম বিশেষন দেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। আর দিলীপ ঘোষ যে বঙ্গ বিজেপিতে জনপ্রিয় তা ফের আরেকবার সামনে আসে।
বর্তমান রাজ্য বিজেপিকে তথাগত অবশ্য দিলীপবাবুর ঘোরতর বিরোধী বলেই পরিচিত। দিলীপ ও তথাগত সম্পর্কে মানিক সাহার দুরকম মনোভাব প্রকাশ করা নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "তপন শিকদার, দিলীপ ঘোষের পর সফল নেতা বিজেপি পায়নি। তথাগত রায়ের ট্র্যাক রেকর্ড দেখুন। ইঞ্জিনিয়ার-শিক্ষিত। মেট্রো শুরুর সময় মাটি তোলার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ছিলেন, কিন্তু বিজেপির রাজনীতিতে মাটির তলার গাছটা পুঁততে পারেননি। যারা আসবে তাদেরকেই আমরা হারাব।" বঙ্গ বিজেপির সফল সভাপতি বলা হয়ে থাকে দিলীপ ঘোষকে। কুণালও এদিন সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছেন যে পার্টিতে দিলীপ সফল, তথাগত নয়। মোদির নির্বাচিত বক্তৃতা সংকলন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এদিন মঞ্চে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন বিহারের স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রী মঙ্গল পাণ্ডে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রিসার্চ ফাউণ্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. অনির্বান গঙ্গোপাধ্যায়, পদ্মশ্রী পূর্ণদাস বাউল, পদ্মশ্রী প্রীতিকনা গোস্বামী, স্বরূপ প্রসাদ ঘোষ। আর বইটির সংকলক বিজেপি নেতা রথীন্দ্রনাথ বোস। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন দলের যুব মোর্চার সভাপতি ডা: ইন্দ্রনীল খাঁ। আর শ্রোতার আসনে দিলীপ ঘোষ, তথাগত রায় থেকে শুরু করে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, রাহুল সিনহা, শমীক ভট্টাচার্য, দেবশ্রী চৌধুরিদের উপস্থিতি ছিল।