সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হাজির রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান! রবিবার দুপুরে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে সনাতন সংস্কৃতি সংসদের আয়োজনে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে এলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শুধু আসাই নয়, মঞ্চে উঠে রীতিমতো মাইক্রোফোনের সামনে সংস্কৃত উচ্চারণে গীতাপাঠও করলেন। এদিনের অনুষ্ঠানের এটাই সবচেয়ে চমকপ্রদ ছবি হয়ে রইল নিঃসন্দেহে। যদিও আমন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও রামদেব-সহ একাধিক তারকা ব্যক্তিত্ব আসেননি। গীতাপাঠের আসরে তাই বঙ্গ বিজেপির নেতারাই মধ্যমণি। দীর্ঘদিন পর একসারিতে দেখা গেল শমীক ভট্টাচার্য, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষদের। নিজের আসন ছেড়ে মাটিতে বসে গীতাপাঠ শুনলেন শুভেন্দু অধিকারী।
ব্রিগেডে গীতাপাঠের আসরে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। ছবি: অরিজিৎ সাহা।
ছাব্বিশের ভোটের আগে হিন্দুত্ব অস্ত্রে শান দিতে ডিসেম্বরের প্রথম রবিবার ব্রিগেডে গীতাপাঠের আয়োজন করে সংঘ ঘনিষ্ঠ সংগঠন সনাতন সংস্কৃতি সংসদ। ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের আয়োজন করা হয়। তবে রবিবার ব্রিগেডের ভিড়ে স্পষ্ট, ৫ লক্ষ জনসমাগম হয়নি। এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা বেলডাঙা রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান মহারাজ প্রদীপ্তানন্দ অর্থাৎ কার্তিক মহারাজ। সভাপতিত্ব করেন মহামণ্ডলের সদস্য জ্ঞানানন্দজি মহারাজ। আরতির পর সকাল সাড়ে ১০ নাগাদ শুরু হয় বেদ ও গীতাপাঠ। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে। এরপর মঞ্চে উপস্থিত আয়োজক ও বিশিষ্ট সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
মঞ্চে বক্তব্য রাখেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের শক্তি। মানুষ আমাদের হাতিয়ার। শত্রু আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলা নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে প্রস্তুত। বাংলা ধর্মীয় ঔদ্ধত্য শেষ করতে প্রস্তুত।’’ তবে ‘ধর্মীয় ঔদ্ধত্য’ বা ‘শত্রু’ বলতে তিনি কোন দিকে নিশানা করছেন, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য বা বিশদ ব্যাখ্যা শোনা যায়নি বোসের মুখে।রবিবারের গীতা পাঠের আসরে উপস্থিত থাকার জন্য নিজের দিল্লি সফর রাজ্যপাল কাটছাট করেছেন বলে রাজভবন সূত্রে খবর।
ব্রিগেডে গীতাপাঠের আসরে ভক্তদের ভিড়।ছবি: অরিজিৎ সাহা।
ব্রিগেডে গীতাপাঠের আসরে যোগ দিতে ভোর থেকেই কলকাতামুখী ভক্তরা। শুধু বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নয়, দেশ ও বিদেশ থেকেও ভক্তরা এসেছেন। সকালে শিয়ালদহ, হাওড়া স্টেশন-সহ আশপাশের বহু এলাকায় তাঁদের ভিড় চোখে পড়েছে। নেপাল, বাংলাদেশ থেকেও বহু হিন্দুদের সমাগম হয়েছে ব্রিগেড ময়দানে। সকলেই বিশিষ্ট সন্ন্যাসীদের কণ্ঠে গীতাপাঠ শুনতে এসেছেন। কেউ কেউ আসার পথে আমজনতার মধ্যে গীতা বিলি করে তাঁদের ব্রিগেডের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মত, ছাব্বিশের আগে এ ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান গেরুয়া শিবিরকে বিশেষ অক্সিজেন জোগাতে পারবে না। ভোটের লড়াই ময়দানে নেমেই করতে হবে।
ব্রিগেডে গীতাপাঠে মগ্ন সাধুসন্তরা। ছবি: অরিজিৎ সাহা।
