shono
Advertisement

ভাগাড় আতঙ্কে ফাঁকা রেস্তরাঁ, হেঁসেলেই আমিষ স্বাদে বিপ্লব খুঁজছে নয়া প্রজন্ম

মাছ, মাংসের চড়া বাজারে 'ঘরমুখী' জেন ওয়াই। The post ভাগাড় আতঙ্কে ফাঁকা রেস্তরাঁ, হেঁসেলেই আমিষ স্বাদে বিপ্লব খুঁজছে নয়া প্রজন্ম appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:02 AM May 21, 2018Updated: 08:57 PM Aug 21, 2018

শ্রীষিতা ঘোষ: আলস্যমাখা রবিবারের দুপুর। গরম ধোঁয়া ওঠা সরু চালের ভাত, সঙ্গে লাল লাল পাঁঠার ঝোল। কিংবা রুই-পোস্ত বা মৌরলা মাছের ঝাল। বিকেলের ফুরফুরে হাওয়ায় ছাদে ধূমায়িত এক কাপ চায়ের সঙ্গে গরমাগরম চিকেনের ‘লেগপিস’ ভাজা। রাতে কষা চিকেন কারি বা চিংড়ি মালাইকারি। সবটাই বাড়ির হেঁসেলে মা-ঠাকুমা-বউয়ের হাতে পাকানো।

Advertisement

ভাগাড়ের মাংস-আতঙ্কের জেরে ‘রেস্তরাঁ কালচার’ থেকে মুখ ফিরিয়েছে বাঙালি। তা বলে আমিষ ছাড়তে রাজি নন মোটেই! তাই রেস্তরাঁ স্টাইলের হরেকরকম আমিষ আইটেম এখন ঘরেই বানিয়ে ফেলতে শুরু করেছেন গৃহিণীরা। আর তাই সকাল হতেই লাইন লেগে যাচ্ছে খাসি বা চিকেনের দোকানের সামনে। সবারই যে মাংস চাই একদম ‘ফ্রেশ’! সামনে দাঁড়িয়ে থেকে মুরগি কাটিয়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন সকলে। হোটেল, রেস্তরাঁ যাওয়ার হিড়িক কমতেই গেরস্থ বাড়ির হেঁশেলে চাহিদা বেড়েছে পাঁঠার মাংসেরও। ভাগাড়-আতঙ্কের জেরে আমজনতা ভেবেছিল মুরগি, মাটনের দাম কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু কোথায় কী? রবিবার শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের বিভিন্ন বাজারে মাটন বিক্রি হয়েছে ৫৪০ থেকে ৫৬০ টাকায়। রবিবার বা অন্য ছুটির দিন সকাল সাতটা বাজতে না বাজতেই লাইন পড়ে যাচ্ছে কসাইয়ের দোকানে। দামের এই ম্যারাথন দৌড়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই চিকেনও। কাটা চিকেন খুচরো বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৬০-১৭০ টাকা দরে। গোটা মুরগি কিনলে যদিও দামটা একটু কম পড়বে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও তা ১১০ থেকে ১২০-এর কমে বাজারে মেলা দায়।

[বিষ খাইয়ে খুন দাদাকে, তিন বছর পর অভিযোগ জানালেন সাঁতারু মাসুদুরের বোন]

দমদম বাজারের এক মুরগি বিক্রেতা অর্ধেন্দু হালদারের কথায়, “মানুষ হোটেলে যাচ্ছে না। তাই আমরাও আর সেভাবে হোটেলে চিকেন সাপ্লাই করছি না। সবাই বাড়িতেই মাংস কিনে খাচ্ছেন। দামটা খানিকটা বেশি থাকলেও চিকেনের বিক্রি কমেনি।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউমার্কেট এলাকার এক মাংস বিক্রেতা জানান, বাজারে এখনও অনেকেই লুকিয়ে মরা মুরগি বিক্রি করছে। যেগুলি তারা খুবই কম দামে বিক্রি করছে। কিন্তু ভাল জাতের সুস্থ মুরগির দাম বাজারে অনেকটাই বেড়েছে।

দাম চড়লেও অবশ্য তাতে খুব একটা আমল দিতে চাইছেন না আম বাঙালি। তাঁদের সাফ কথা, হোটেল, রেস্তরাঁয় খেতে গেলে খরচটা অনেকটাই বেশি হত।  তার উপর আবার চিকেন, মাটনের বদলে কুকুর, বিড়ালের মাংস প্লেটে আসার ভয়। তার থেকে বাড়িতে মাংস কিনে এনে রান্না করে খাওয়াই সবথেকে স্বাস্থ্যকর। উত্তর কলকাতার হাতিবাগানের বাসিন্দা সুমনা দত্ত বলেন, “হোটেল, রেস্টুরেন্টে আর যাচ্ছি না। ছেলের আবদারে তাই বাড়িতেই এখন চিকেন বিরিয়ানি, মাটন কোর্মা বানিয়ে দিচ্ছি। বাজারে মাংসের দাম অনেকটাই বেশি। কিন্তু কী করা যাবে! এতবছরের অভ্যাসটা তো ছাড়া যাবে না।”

[বেদম মারে ছাত্রের পায়ে বসল বেতের দাগ, গ্রেপ্তার হোমের শিক্ষক]

ভাগাড় কাণ্ডের ঘটনা জানাজানির পরই রাজ্যের মানুষ মাংস ছেড়ে মাছের দিকে ঝুঁকছিল। আর সেই সুযোগে বাজারে রীতিমতো দাম চড়িয়ে বসেছে মাছেরও। প্রমাণ সাইজের কাটা রুই, কাতলা মিলছে প্রায় ৩০০ টাকার কাছাকাছি দামে। আস্ত মাছ হলে দামটা কিছুটা কম রয়েছে। দাম চড়িয়েছে পাবদা, ট্যাংরা, ভেটকিও। এক কেজি থেকে দেড় কেজির ইলিশের দাম ঘোরাফেরা করছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকার মধ্যে। এদিকে পচা মাংসের কারবার সামনে আসতেই রেকর্ড ব্যবসা করেছে রাজ্যের মৎস্য উন্নয়ন নিগমও। দেশি রুই, কাতলা থেকে শুরু করে বিদেশি কোবিয়া, সিলভার পমপিনো। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছের চাহিদা। নিগমের তরফে জানানো হয়েছে, আগে নিজস্ব স্টল, গাড়ি এবং অ্যাপ বুকিংয়ের মাধ্যমে খুচরো বাজারে প্রতিদিন প্রায় ছ’শো থেকে সাড়ে ছ’শো কেজি কাঁচা মাছ বিক্রি করত সংস্থা। এখন প্রতিদিন ন’শো থেকে সাড়ে ন’শো কেজি করে মাছ বেচছে নিগম। ভাগাড়-আতঙ্ক থেকে রেস্তরাঁ প্রেমী জেন ওয়াই ‘ঘরমুখী’ হওয়ায় বাড়ির হেঁশেলেই স্বাদ বিপ্লবের ধুম পড়েছে৷

The post ভাগাড় আতঙ্কে ফাঁকা রেস্তরাঁ, হেঁসেলেই আমিষ স্বাদে বিপ্লব খুঁজছে নয়া প্রজন্ম appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement