shono
Advertisement

গরম পেয়ালায় চুমুক দিয়ে গলা তো ভেজান, বিভিন্ন চায়ের স্বাস্থ্যগুণ জানলে অবাক হবেন

গ্রিন টি'র উপকারিতা জানেন?
Posted: 07:19 PM Jan 02, 2022Updated: 07:19 PM Jan 02, 2022

চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে গলা ভেজান না এমন মানুষের সংখ্যা নগণ্যই বলা চলে। গরম পেয়ালায় চুমুক দিয়ে গলা তো ভেজাচ্ছেন কিন্তু বিভিন্ন লিকার চায়ের স্বাস্থ্যগুণ জানেন? তা  নিয়ে আলোচনা করলেন ডায়েটিশিয়ান সৌম্যেন্দু ঘোষ।

Advertisement

চা, শুনলেই যেন একটা তৃপ্তি, শান্তি মনে নাড়া দেয়। মনখারাপে, বিরক্তিতে, ক্লান্তিতে কিংবা হালকা গল্পের মেজাজে চা (Tea) চাইই চাই। এই শান্তির চুমুক অনেক কিছুকে মনে থেকে উগরে দেয়, আবার সুখস্মৃতিকে উসকেও দেয়। ‘চা কি আমরা খাব না? খাব না আমরা চা?’ এই প্রশ্ন মনে তো দাগ কাটবেই। শুধু মন ভাল রাখতেই নয়, শরীর সুস্থ রাখতেও চা পানের বিকল্প কিছু নেই। এখন বাজারে এসেছে নানা প্রকারের চা। দুধ-চিনি মেশানো চায়ের ককটেল নাকি লিকার চা কোনটি আপনার সারাদিনের ডায়েটে থাকলে ভাল, কেন ভাল সেটা জেনে চুমুক দিন।

হোয়াইট টি
একদম কচি চা পাতা থেকে যে চা তৈরি হয়, তাই হল হোয়াইট টি। এই চা সবচেয়ে দামি। এই লিকারের রং হালকা হলুদ বর্ণের হয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা গ্রিন টি-এর চেয়েও বেশি।

ওলং টি
এই চা, একদম কচি চা পাতা থেকেই তৈরি তবে হোয়াট টি’র চেয়ে একটু আলাদা। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। এই চায়ের ঔষধি গুণ অনেক।

  • ওজন কমায়।
  • ক্লান্তি কাটায়।
  • রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
  • মন ভাল রাখতে সাহায্য করে।

হার্বাল টি
১. সিনেমন টি:
চা পাতার সঙ্গে অল্প দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে পান স্মৃতিশক্তি ঠিক রাখে, সিস্ট (পিসিওএস)-এর সমস্যায় ভাল, ওজন কমায়, হার্ট ভাল রাখে, রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
২. তুলসি চা: সর্দি-কাশিতে তুলসি পাতা, মধু চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে উপকারী। ফুসফুসের কার্যকারিতা ঠিক রাখে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. লবঙ্গ চা: চায়ের সঙ্গে লবঙ্গ থেঁতো করে পান করলে তা অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টি ব্যাকটিরিয়াল।
৪. আদা চা: ৪ গ্রাম আদা চায়ে মিশিয়ে পান করলে অনেক ভিটামিন, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি মিনারেল মিলবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি ব্যথানাশক। টেনশন বা স্ট্রেস থেকে পেটের সমস্যা রোধ করে, অ্যালার্জি, ব্রংকাইটিস প্রতিরোধ করে। রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৫. লেবু চা: ওজন কমায়, ক্লান্তি কমায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

গ্রিন টি
‌সমীক্ষা বলছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ব্যক্তি দিনে চার-পাঁচ কাপ গ্রিন টি পান করতেই পারেন নিঃসন্দেহে।

  • এই চা ৭০ শতাংশ হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমায়। বিভিন্ন গবেষণার তথ্য, গ্রিন টি টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।
  • যাঁদের দাঁতে বা মাড়ির সমস্যা রয়েছে তাঁদের এই চা পানে অনেক উপকার মেলে।
  • গ্রিন টি, মধু দিয়ে পান করা অনেক বেশি ভাল। মহিলাদের ৩০-বছর বয়সের পর হাড়ের ক্ষয় ও পেশি দুর্বলতা প্রতিরোধ করে।
  • গ্রিন টিতে উপস্থিত ‘ক্যাথেচিন’ নামক ফ্লাভেনয়েড অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। গ্রিন টিতে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মাত্রা অনেক বেশি। এই চায়ে ক্যাফিনের মাত্রা অনেক কম।
  • চুল পড়ার সমস্যা কমে।
  • মহিলাদের হরমোনাল সমস্যা রোধ করে।

 

চা টিপস

  • চায়ে ‘ট্যানিন’ নামক উপাদান থাকে। খাবার খাওয়ার পর চা পান করলে এই উপাদান শরীরে দ্রবীভূত হতে পারে না। তাই বলা হয়, যে কোনও খাবার খাওয়ার ৩০-৪০ মিনিট পর চা পান করলে শরীরে চায়ের স্বাস্থ্যগুণ মেলে।
  •  চায়ের মধ্যে ট্যানিন থাকে। যা শরীরে আয়রন দ্রবীভূত হতে দেয় না। তাই ছোলা, ডাল, মাছ, মাংস, ডিমসিদ্ধ ইত্যাদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পর চা পান একেবারেই অস্বাস্থ্যকর।
  • চায়ের সঙ্গে অল্প বাদাম, আমন্ড, হালকা বিস্কুট খেলে ক্ষতি নেই।
  • গ্রিন টিতে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ক্লোরাইড ইত্যাদি মিনারেল রয়েছে। তাই কিডনির সমস্যা থাকলে গ্রিনটি পান করা যাবে না।
  • ব্ল্যাক টি দুধ ও চিনি ছাড়া পান করলে, তা দিনে চার বার পান করলেও ক্ষতি নেই।
  • এছাড়া গ্রিন-টিও দিনে তিন-চার বার পান করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত চা পান চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে করুন।
  • গ্রিন-টি কিংবা ব্ল্যাক টি বড় কফি কাপে পান নয়। ছোট চা-এর কাপে (১৫০ এমএল) চা পান করুন । ক্ষতি নেই।
  • অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গ্রিন টি দিনে দু’বার পান করা যেতে পারে, তবে তা বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো অবশ্যই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement