shono
Advertisement

করোনা আবহে সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাব, বাড়ছে শিশুদের দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা

পুজোর পর সংক্রমণ বাড়লে সমস্যা আরও প্রকট হবে, মত বিশেষজ্ঞদের।
Posted: 11:24 AM Oct 10, 2020Updated: 11:24 AM Oct 10, 2020

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: করোনা ভাইরাসের (Cooronavirus) দাপট ঠেকাতে লকডাউন (Lockdown)। আর লকডাউন এবং সংক্রমণ আতঙ্কে সঠিক সময়ে চোখের চিকিৎসা না পেয়ে অন্ধত্ব প্রায় অনিবার্য রাজ্যের ৭-৯ শতাংশ শিশুর। এই শিশুদের বয়স ০-৫ বছরের মধ্যেই। সংখ্যাটা প্রায় কয়েক হাজার। এই তথ্য রাজ্যের একমাত্র চক্ষু উৎকর্ষ কেন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজির। জাতীয় অন্ধত্ব নিবারণ কর্মসূচিতে রাজ্যের উদ্যোগে নিখরচায় রেটিনোপ্যাথির চিকিৎসা হয়। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণ।

Advertisement

চক্ষু বিশেষজ্ঞদের অভিমত, মানুষের দৃষ্টিশক্তি পূর্ণতা পায় পাঁচ বছরের মধ্যে। কিন্তু যেসব শিশু ৩২ সপ্তাহের আগে জন্মায় অথবা ওজন অস্বাভাবিক কম থাকে বা ‘নিকু’তে রাখতে হয়, জন্মের পর দীর্ঘ সময় অক্সিজেন দিতে হয়, এইসব শিশুদের দৃষ্টিশক্তিও স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম থাকে। ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজির হিসাব বলছে, ১০০ শিশু জন্মালে তাদের ৭-৯ জন শিশুর এই সমস্যা থাকে। চক্ষু (Eye) চিকিৎসার পরিভাষায় এই সমস্যাকে বলে ‘রেটিনোপ্যাথি অফ প্রিম্যাচিওরিটি’।

এই শিশুদের সঠিক সময়ে চোখের চিকিৎসা না হলে ভবিষ্যতে অন্ধত্ব (Blindness) ভবিতব্য। ঘটনা হল করোনার দাপট ঠেকাতে টানা লকডাউনের ফলে এই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছে কয়েক হাজার শিশু। অন্তত এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কলকাতার রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজির অধিকর্তা ডা. অধ্যাপক অসীমকুমার ঘোষ। অধ্যাপক ঘোষের কথায়, “প্রতিমাসে প্রায় ৩০০ শিশুর রেটিনোপ্যাথির চিকিৎসা হত। কিন্তু প্রায় ছ’মাস এই শিশুরা চিকিৎসা পায়নি। যদিও হাসপাতাল খোলা ছিল। কিন্তু করোনা আতঙ্কে তাদের আনা হয়নি। এই শিশুদের ভবিষ্যৎ ভেবে আমি শঙ্কিত। কারণ, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে অন্ধত্ব হতে পারে।”

[আরও পড়ুন: শরীরে ভাইরাস কম থাকলেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি, বলছেন চিকিৎসকরা]

এখানে মনে রাখতে হবে, আরআইও ছাড়া রাজ্যের এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসা হয়। কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের সব জেলা থেকে শিশুদের এই দু’টি হাসপাতালে পাঠানো হয় উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার জন্য। ‘রেটিনোপ্যাথি অফ প্রিম্যাচিওরিটি’র মতো পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের আরও একটি গুরুতর চোখের সমস্যা এমব্ল্যায়োপিয়া বা চশমা না পরা এবং জন্মগত ছানির সমস্যা। ইনস্টিটিউট অফ অপথালমোলজির চিকিৎসক অধ্যাপকদের অভিমত, দেখা গেল জন্মের পর শিশুটির চোখের গঠনগত কোনও সমস্যা নেই, কিন্তু দৃষ্টিশক্তি খুব কম। এই শিশুদের চোখ পরীক্ষা করে চশমা পরলেই রোগমুক্তি। কিন্তু চশমা না পরলে কৈশোরেই অন্ধত্বের শিকার হয়।

শুধুমাত্র করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে শিশুরা (Baby) চিকিৎসা পরিষেবা পায়নি। এই ধরনের শিশুর সংখ্যাও কয়েক হাজার। আবার জন্মগত ছানি কাটানোর কাজও বন্ধ ছিল। অধ্যাপক অসীমকুমার ঘোষের কথায়, “এখন অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক, কিন্তু বাস-ট্রেন চলছে না। ফলে আগে যেমন বিভিন্ন জেলা থেকে শিশুরা আসত। সুস্থ হয়ে দৃষ্টি ফিরে পেত। তেমনটা এখনও হয়নি। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পুজোর (Durga Puja 2020) পর যদি সংক্রমণ আবার বাড়ে তবে সমস্যা আরও প্রকট হবে।

[আরও পড়ুন: বিষে বিষে বিষক্ষয়! ক্রনিক ব্যথা ভোলাতে ‘পেন কিলার’ হয়ে উঠছে করোনাই]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement