shono
Advertisement

এবার বিষ খাওয়া রোগী হাসপাতালে ভরতি করলেই মলমূত্রের নমুনা যাবে ফরেনসিকে, তৈরি হচ্ছে ল্যাব

ল্যাবে কর্মী নিয়োগের সবুজ সংকেতও মিলেছে।
Posted: 01:22 PM Jul 15, 2021Updated: 01:22 PM Jul 15, 2021

গৌতম ব্রহ্ম: বিষ চিকিৎসায় নিঃশব্দ বিপ্লব। পরিস্থিতি পরে যাতে হাতের বাইরে চলে না যায়, সে জন্য গোড়াতেই শক্ত বাঁধন দরকার। তাই এবার বিষপান বা বিষ প্রয়োগের রোগী‌ হাসপাতালে এলে তৎক্ষণাৎ রক্ত, মূত্র বা বমির নমুনা নিয়ে ফরেনসিকে পাঠানো হবে, মৃত্যু হল কি না ‌তার অপেক্ষা করা হবে না। বিষের প্রকৃত চরিত্র ও পরিমাণ নির্ণয় হলে সেই মতো শুরু হবে চিকিৎসা। এতে দ্বিমুখী সুবিধা। চিকিৎসার কার্যকারিতা যেমন বাড়বে, তেমন রোগী মারা গেলে ওই ফরেনসিক রিপোর্ট‌ পুলিশের কাছে তদন্তের অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠবে। হ্যাঁ, চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে এবার ফরেনসিক বিদ্যাকে এভাবেই জুড়ে দিল বাংলা।

Advertisement

হাসপাতালে টানা বিষ উপশমের চিকিৎসা হয়েছে, অথচ মৃত্যুর পর রোগীর শরীরে বিষের কোনও চিহ্ন মিলল‌ না। প্যাথলজি, টক্সিকোলজি, সেরোলজি-ময়নাতদন্তের সব বিভাগ ডাহা ফেল। ফলে ডেথ সার্টিফিকেটে বিষের কথা উল্লেখ করাই গেল না। এমন উদাহরণ ভূরি ভূরি। পরিণতি যা হওয়ার তা-ই, দিশা হারিয়ে থমকে দাঁড়াচ্ছে বহু অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত। বিপাকে পড়ছেন তদন্তকারীরা, দীর্ঘসূত্রিতার ফাঁসে জড়িয়ে অন্ধকারের গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে মামলার ভবিষ্যৎ। এই কানাগলি থেকে বের হতেই কোমর বেঁধেছে রাজ্য। তৈরি হচ্ছে নতুন ফরেনসিক ল্যাবরেটরি। আরজি করের পয়জন (Poison)সেন্টারের পাশে‌ এই ল্যাব‌ পুজোর আগে যাত্রা শুরু করবে বলে স্বাস্থ্য দপ্তরের‌ দাবি। সেখানে কর্মী নিয়োগের সবুজ সংকেতও মিলেছে। এক প্যাথলজিস্ট, দুই কেমিস্ট, দুই ল্যাব টেকনিশিয়ান, এক এক্সরে টেকনিশিয়ান-সহ মোট দশজন কাজ করবেন‌ নতুন ফরেনসিক ল্যাবে। সেন্টারের কর্ণধার অধ্যাপক ডা. সোমনাথ দাসের নেতৃত্বে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে।

[আরও পড়ুন: খাবার খাওয়ার পর কেন ১০ মিনিট হাঁটা উচিত? উপকারিতা জানালেন বিশেষজ্ঞরা]

সোমনাথবাবুর কথায়, “পয়জনিং কেস পেলে হসপিটালগুলো রোগীর রক্ত, মূত্র ও স্টমাক ওয়াশ করা তরলের স্যাম্পল আমাদের পাঠাবে। অর্থাৎ রোগীর মৃত্যুর জন্যে অপেক্ষা করার দিন শেষ। রোগী হাসপাতালে ভরতি থাকা অবস্থাতেই বিষের প্রকৃতি বা পরিমাণ নির্ণয় করা হবে। তদন্তও গতি পাবে।” এই মুহূর্তে রাজ্যে ফরেনসিক ল্যাবরেটরি বলতে সেই বেলগাছিয়ার স্টেট ফরেনসিক ল্যাব, গোটা রাজ্য থেকে নমুনা যেখানে গিয়ে জমা হয়। কাজের চাপে অধিকাংশ সময় রিপোর্ট পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। আরজি করের নয়া ল্যাবরেটরি বেলগাছিয়া ল্যাবের চাপও অনেকটা কমিয়ে আনবে। সোমনাথবাবু জানালেন, কলকাতার যে কোনও হাসপাতাল থেকে নমুনা এই ল্যাবে পাঠানো যাবে রাসায়নিক বিশ্লেষণের জন্য। প্রসঙ্গত, করোনাকালে এই আরজিকর হাসপাতালই প্রথম কোভিড দেহের ময়নাতদন্ত করেছে। দেহদান আন্দোলনের পুরোধা, গণদর্পণের প্রতিষ্ঠাতা ব্রজ রায়ের কোভিডে মৃত্যুর পর তাঁর দেহের প্রথম প্যাথলজিকাল অটোপসি করেছেন সোমনাথবাবুরাই। রাজ্যের প্রথম পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার গড়ার কৃতিত্ব আরজি করের ঝুলিতে। এবার এক ছাতার তলায় প্যাথলজিক্যাল, টক্সিকোলজিক্যাল, সেরোলজিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের হাত মজবুত করল সেই আরজি কর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement