shono
Advertisement

পিঁদাড়ে পলাশের বন পুরুলিয়া চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে শান্তিনিকেতনকে

অযোধ্যার হাতছানি রাজ্যবাসীকে, চেনা রুট বদলে ফেলছে বাঙালি। The post পিঁদাড়ে পলাশের বন পুরুলিয়া চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে শান্তিনিকেতনকে appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:25 PM Feb 23, 2018Updated: 02:40 PM Feb 23, 2018

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘পিঁদাড়ে পলাশের বন/ পালাব পালাব মন’। দোল-হোলিতে এক অন্যরকম বসন্ত উৎসবে মাততে শান্তিনিকেতনের চেনা রুট বদলে ফেলছে বাঙালি। বোলপুর-ভুবনডাঙা-খোয়াইকে সরিয়ে রেখে আপাতত বসন্তোৎসবের নয়া নেশায় বাঙালির ডেস্টিনেশন লাল পলাশে মোড়া অযোধ্যা পাহাড়। আরও একটু বিস্তৃত প্রকৃতির আঙিনার খোঁজে কলকাতার শহরবাসী ছুটছেন সবুজের গন্ধে মাখা বড়ন্তি, গড়পঞ্চকোট থেকে শুরু করে সত্যজিৎ রায়ের অমর কাহিনিচিত্র হীরক রাজার দেশের শুন্ডির পাহাড় জয়চণ্ডীতে। আসলে পলাশের অমোঘ টান সঙ্গে সাঁওতালি ও ছৌ নাচের ছন্দ এবং অবশ্যই বাহা পরবের উৎসবের গন্ধে হাজারে হাজারে মানুষ আসছেন জঙ্গলমহলের শাল-পিয়ালের বনে। একসময় ক্ষুধাতুর জঙ্গলবাসী ও মাও আতঙ্কে পর্যটকরা ভুলে গিয়েছিলেন অযোধ্যার ঐশ্বর্য আবার পরিবর্তনের হাওয়ায় ভর দিয়ে পিচ ঢালা কালো পথ বেয়ে শয়ে শয়ে গাড়িভর্তি পর্যটক ঢুকে পড়ছেন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলে ঘেরা প্রকৃতির সৌন্দর্য ভাণ্ডারে।

Advertisement

[পরিযায়ীদের আস্তানা হিসেবে সেজে উঠবে মালদহের বড় সাগরদিঘি]

ফাগুনের হাওয়ায়-হাওয়ায় লাল পলাশের আগুন দেখতে এই বসন্তে নয়া ডেস্টিনেশন জঙ্গলমহল। বলা ভাল পাহাড় আর জঙ্গলে লাল পলাশে ঢাকা লালমাটির দেশ পুরুলিয়া। খোঁপায় পলাশ গুঁজে মহুয়া খেয়ে মাতাল হয় প্রকৃতি। আসলে এই বসন্তে বাংলার জঙ্গলমহল যেন এক কল্পলোকের জগৎ!
আর সেই স্বপ্নমাখা অরন্যসুন্দরী যেন হারিয়েই গিয়েছিল বাংলার পর্যটন মানচিত্র থেকে। লাল পলাশে আগুন ঝরলেও রাঙামাটির পথ যে ভিজেছে লাল রক্তে। ধারাবাহিক নাশকতা, হিংসায় এই পুরুলিয়ার ল্যান্ডস্কেপ যেন মুখ লুকিয়ে ছিল। কিন্তু আজ বদলের হাওয়ায় এই লাল পাহাড়ের দেশ ডাকছে। তাই অযোধ্যা পাহাড়, খয়রাবেরা, মাঠা ফরেস্ট, দুয়ারসিনি, জয়চণ্ডী পাহাড়, গড়পঞ্চকোট, বড়ন্তি এই দোলে হাউসফুল। সমস্ত সরকারি-বেসরকারি পর্যটক আবাস, লজ, হোটেল, রিসর্ট কোথাও কোন খালি নেই। অথচ দোল-হোলির উইকএন্ডে একটা রুমের জন্য কটেজের ফোন বেজেই যাচ্ছে। একটা ঘরের জন্য এসেই যাচ্ছে মেল। শুধু তাই নয় এই ফাগুনে রাঙা পলাশ দেখতে গোটা মার্চ-ই যেন হাউসফুল পুরুলিয়ায়। একেবারে পরিবেশবান্ধব পর্যটনে পল্লি প্রকৃতির স্বাদে অযোধ্যা পাহাড়ে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগে গড়ে উঠছে কুশলপল্লি। তাদের কর্ণধার নরেশ আগরওয়াল বলেন, “মাটির গন্ধ মাখা পুরুলিয়ার স্বাদ তুলে দিতে আমাদের এই প্রজেক্ট। শুধু এদেশের নয় এই সবুজ উপত্যকায় বিদেশি পর্যটক টানাও আমাদের লক্ষ্য।” পাহাড়িয়া বন্ধুত্বের হাতছানি দিয়ে পলাশে ঘেরা পুরুলিয়া বলছে, ‘আজ ফাগুনি পূর্ণিমা রাতে চল পলাইয়ে যায়!’ প্রায় একই অবস্থা বাঁকুড়ার শুশুনিয়া থেকে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে। আসলে এই বসন্তে জঙ্গলমহলের পল্লি প্রকৃতি যেন পটে আঁকা ছবি! কুসুম গাছের গোটা শরীর জুড়ে লাল কচি-কচি পাতা। নিষ্পত্র পলাশের সরু-সরু ডালে কালো-কালো কুঁড়ি ফাটিয়ে সিঁদুরে লাল পাপড়ি। সেই সঙ্গে শিমুলের ডালে কোকিল-টিয়া-সহ নানান পাখির ডাক। আর মহুয়া গাছের তলায় হালকা সবুজের ফলে মাতাল করা গন্ধ। সেই সঙ্গে পাহাড় কোলের জনপদগুলিতে বাহা পরবের প্রস্তুতি।

[অরণ্যের দরজা যেখানে খোলা, প্রকৃতির মাঝে হারানোর ঠিকানা দুয়ারসিনি]

ফাগুনের এমন প্রকৃতিতে ডুব দিতে অযোধ্যা পাহাড় বা দুয়ারসিনির হোম ট্যুরিজমের ঘরগুলিতেও কোন জায়গা নেই। রিসর্ট থেকে হোম স্টে সব জায়গায় যেন হাউসফুলের বোর্ড ঝুলছে। গত এক দশকের হিসাব তো দূরে থাক শেষ বছর ছয়েক আগেও এই বসন্ত উৎসব বা দোল-হোলি তে পর্যটকদের এমন বুকিং দেখেনি জঙ্গলমহলের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম। তবে এবার পুজোর ছুটি থেকেই এই আভাস মিলছিল। শীতের মরশুমে তো উপচে পড়েছিল ভিড়। পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় একান্ত আলাপচারিতায় বলছিলেন,“শুধু শীতের মরসুম নয়। এই জেলার পর্যটন এখন সারা বছর। আসলে সব ঋতুতেই পুরুলিয়ার রূপ চোখ টানে। তাই এই দোল-হোলিতেও রেকর্ড ভিড় হবে।” আর এই উপচে পড়া ভিড়েই পর্যটন বিনিয়োগ বাড়ছে অযোধ্যা পাহাড় থেকে গড়পঞ্চকোটে। মুরগুমা থেকে বড়ন্তিতে।

[সামনেই রয়েছে বিরাট ছুটি, ঘুরে আসুন প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি শিমুলতলায়]

ছবি- অমিত সিং দেও

The post পিঁদাড়ে পলাশের বন পুরুলিয়া চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে শান্তিনিকেতনকে appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার