shono
Advertisement

রংবাহারি প্রজাপতিদের মাঝেই জমবে চড়ুইভাতি, শীতে হাতছানি দিচ্ছে পুরুলিয়ার এই রঙিন উদ্যান

হাতের নাগালেই বাংলার এই নয়া পিকনিক স্পট। দেখুন ভিডিও।
Posted: 10:34 PM Dec 29, 2020Updated: 10:48 PM Dec 29, 2020

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: চেক ড্যামের কোলে ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াচ্ছে লাইম বাটারফ্লাই, গ্রেম ব্লু, লেমন পেন্সি, কমন ব্যারনের মত প্রায় ১৫ রকমের রংবাহারি প্রজাপতি। পাশেই গাছ-গাছালিতে ঠাসা বাগানে দোল খাচ্ছে শিশুরা, হচ্ছে বোটিং। শীতের মরশুমে বাংলার এমনই এক পিকনিক স্পট এবার পর্যটকদের হাতের নাগালে। খুলে গেল পুরুলিয়ায় প্রজাপতি উদ্যানের দরজা। 

Advertisement

মঙ্গলবার পু়ঞ্চা ব্লকের লাখরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে বদরা গ্রাম ছুঁয়ে থাকা লাখরা প্রজাপতি উদ্যানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। এই বাটারফ্লাই গার্ডেনকে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরতে ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগ একটি ভিডিও তৈরি করে প্রচার করছে। আসলে জঙ্গলমহলের জেলাগুলির মধ্যে এটাই প্রথম সুসংহত প্রজাপতি উদ্যান। লাখরা গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে আপাতত তিন লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্কের  প্রতিনিধিদলও এই উদ্যান ঘুরে প্রশংসা করেছে। আসলে গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে এইরকম পর্যটন প্রকল্প জঙ্গলমহলে সেভাবে নেই। তাই বিশ্বব্যাঙ্কও এই প্রকল্পে অর্থ সাহায্য করতে পারে। এদিন এই অনুষ্ঠানে ছিলেন পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৃষ্ণচন্দ্র মাহাতো, বিডিও অনিন্দ্য ভট্টাচার্য, লাখরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নবীন সিং পাতর।

উদ্যান থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে থাকা পাকবিড়রা পর্যটনক্ষেত্রের সঙ্গে পর্যটন প্যাকেজে এই প্রজাপতি উদ্যানকে জুড়ে দিয়ে একটি সুংসহত ট্যুরিস্ট স্পট গড়ে তুলতে চাইছে লাখরা গ্রাম পঞ্চায়েত। তাই পটমজোড় চেক ড্যামকে ঘিরে জলাশয় তৈরি করে প্রজাপতি উদ্যানের পাশেই পিকনিক স্পটও তৈরি হচ্ছে। ওই চেক ড্যামে শুরু হয়ে গিয়েছে বোটিং। ৩০ মিনিট জলবিহারের জন্য ধার্য করা হয়েছে মাত্র ১০ টাকা।

[আরও পড়ুন: পর্যটকদের জন্য দরজা খুলল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য, মানতে হবে কড়া নিয়মবিধি]

লাখরা গ্রাম পঞ্চায়েত একেবারে এক্সপার্টদের নিয়ে এই প্রজাপতি উদ্যান গড়ে তুলেছে। একটি ওয়াইল্ড লাইফ ও ইকোলজি সংস্হার তত্ত্ববধানে এই কাজ হয়েছে। সভাধিপতি বলেন, “১২ একর জমিকে ঘিরে আমরা একটি জীব বৈচিত্র্য উদ্যান গড়ার কাজ হাতে নিয়েছি। তারই মধ্যে রয়েছে এই প্রজাপতি বাগান। সেই সঙ্গে লাগোয়া একটি চেকড্যামকে ঘিরে জলাশয় তৈরি করে আমরা পিকনিক স্পটও গড়ছি। তবে সামগ্রিকভাবে জীব বৈচিত্র্য বাগান তৈরিতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। আমাদের লক্ষ্য এই প্রজাপতি উদ্যান, পিকনিক স্পট ও জীববৈচিত্র্য বাগানকে পাকবিড়রা পর্যটনক্ষেত্রের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার। যাতে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে এই এলাকা একটি সুসংহত পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে জায়গা করে নেয়।” এই পাকবিরড়াতে রয়েছে নানান জৈন স্থাপত্য, দেউল । সাবেক মানভূমে  যে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে পুরুলিয়ার জন্ম হয়েছিল সেই লড়াই-র অন্যতম স্থান এই এলাকা। তাই ইতিহাসের সঙ্গে প্রকৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে এই এলাকায় পর্যটক টানতে চাইছে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত।

এই উদ্যান গড়তে প্রজাপতিদের পছন্দ অনুযায়ী কৎবেল, আকন্দ, লেবু, পেয়ারা ও তাদের মধু সংগ্রহে নানরকম ফুলের গাছ যেমন, গাঁদা, টগর, অপরাজিতা লাগানো হয়েছে। এসবই দেখভাল করছে লাকড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তত্বাবধানে থাকা স্বনির্ভর দল। ফলে প্রজাপতি গাছে ডিম পাড়লেই তা নজর রাখা হচ্ছে। লার্ভা হয়ে গেলে তা জারে ঢুকিয়ে চলছে পরিচর্যা। এক্সপার্ট সংস্হার তরফে শ্বেতাদ্রি ভান্ডারি বলেন, “ওই জারে গুটি পোকা তৈরি হয়ে গেল পছন্দসই পাতা খাইয়ে ওই বাগানেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবেই উদ্যানের প্রজাপতির সংখ্যা বাড়ানোর কাজ চলছে। এই কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর দলকে।” প্রজাপতি উদ্যান ছাড়াও জীব বৈচিত্র্য বাগানে আমবাগান, ওষধি বাগান, মিশ্র ফল বাগান তৈরি হচ্ছে। সবে মিলিয়ে প্রকল্প ধরা হয়েছে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা ।

ছবি ও ভিডিও – অমিতলাল সিং দেও

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার