সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লালগড়ের সভা থেকে বামেদের তৃণমূলের পাশে থাকার আহ্বান জানালেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বললেন, “নিজের দল করুন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে ভোটটা দিন তৃণমূলকে। তবেই বিজেপিকে রোখা সম্ভব হবে।” ‘বামবন্ধু’দের উদ্দেশে মমতার এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বুধবার লালগড়ে নির্বাচনী জনসভা ছিল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ‘বাম দূর্গে’ দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেত্রীর বার্তা, “বামপন্থী বন্ধুরা যাঁরা সত্যিই BJP-র বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান, তাঁরা ভোটটা আমাদের দিন। সিপিআইএমকে ভোট দিয়ে নিজের ভোট নষ্ট করবেন না।” জনসভা থেকে তৃণমূল নেত্রীর আক্ষেপ, “গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ঝাড়গ্রাম থেকে জিতে গিয়েছে। তবে তাঁরা কোনও কাজ করেননি।”
[আরও পড়ুন : ইস্তাহারে মমতার মাস্টারস্ট্রোক! দেশে প্রথমবার সকলের জন্য ন্যূনতম আয়ের প্রতিশ্রুতি]
কেন এমন কথা বললেন মমতা? তার ব্যাখ্যা পেতে গেলে ঝাড়গ্রামের ভোট চিত্রের দিকে নজর রাখতে হবে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে গেরুয়া শিবিরের পালে হাওয়া লেগেছে। সেইসময় ধস নেমেছিল বাম সংগঠনগুলির অন্দরেও। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার ৭৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বিজেপি দখল করেছিল ২৪টি। আসন পেয়েছিল পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদেও। এরপর ২০১৯ লোকসভা ভোটে বাজিমাত করে গেরুয়া শিবির। ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনটি তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় তারা। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিনপুর ছাড়া জেলার বাকি তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলকে টেক্কা দিয়েছিল বিজেপি। একমাত্র বিনপুর বিধানসভাতেই তিন হাজারে কিছু বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল গেরুয়া শিবির। আর এই জয়ের পিছনে ছিল বামেদের ভোটব্যাংক। এবার সেই ভোটব্যাংককে পাখির চোখ করতে চাইছে তৃণমূল। তাই পুরনো শত্রুকে কার্যত বন্ধু বানাতে তৎপর হলেন মমতা।
প্রসঙ্গত, মমতা একা নন, এর আগে বিজেপিও বারবার বাম সমর্থকদের ভোট নিজেদের দিকে টানতে চেয়েছে। সভামঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারীও বাম সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন। বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য স্বীকার করেছে, তৃণমূল বিরোধিতায় বাম সমর্থকদের ভোট আসছে গেরুয়া শিবিরে। এবার তাই বিজেপিকে রুখতে বামপন্থীদের ভোট নিজেদের দিকে টানতে চাইলেন তৃণমূল নেত্রী।