অর্ণব আইচ: আর জি করে নৃশংসতার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নতুন কীর্তি ফাঁস। দিনভর নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকা, পর্ন আসক্ত, একাধিক বিয়ে, স্ত্রীয়ের উপর অকথ্য অত্যাচারের মতো অভিযোগ তো ছিলই তার বিরুদ্ধে। এবার প্রকাশ্যে এল তার আরও এক কুকীর্তি। পুলিশের ভেক ধরে হাসপাতালে আসা মহিলা রোগী ও তাঁর মহিলা পরিজনদের সাহায্যের নামে মোবাইল নম্বর জোগাড় করত সঞ্জয়। তার পর বার বার ফোন করে চলত উত্যক্ত করা। কখনও সে দেখা করতে চাইত তো কখনও আবার যৌনসম্পর্ক তৈরির জন্য চাপ দিত। রাজি না হলেই, দেওয়া হত ধর্ষণ-খুনের হুমকিও। জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় গ্রেপ্তার হতেই সামনে আসছে তার একের পর এক কুকীর্তি।
সঞ্জয়কে গ্রেপ্তারের পর থেকেই তার মোবাইলটি রয়েছে পুলিশের হেফাজতে। খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে কললিস্ট। সেখান থেকেই একটি নম্বরের হদিশ পায় লালবাজার। দেখা যায়, গত তিন মাসে ওই নম্বরে একাধিকবার ফোন করেছে সঞ্জয়। কেন ফোন করা হয়েছিল? তার সঙ্গে সঞ্জয়ের কী সম্পর্ক, তা জানতে নম্বরের মালিককে সোমবার লালবাজারে ডাকা হয়েছিল। সেই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই নতুন তথ্য উঠে আসে।
[আরও পড়ুন: ‘উত্তেজনার বশে করে ফেলেছি!’, তরুণী চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডে ‘নির্বিকার’ ধৃত সঞ্জয়]
জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে চার বছরের অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে আর জি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়েছিলেন চিড়িয়ামোড়ের মহিলা। সঙ্গে কেউ ছিলেন না। চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশন লিখে দেওয়ার পর, সেই ওষুধ খুঁজতে হয়রান হয়ে যান তিনি। সেই সময় 'ত্রাতা' হিসেবে এগিয়ে এসেছিল সঞ্জয়। নিজেকে পুলিশ হিসেবে পরিচয় দিয়ে ওষুধ কিনতে সাহায্য করে। সেই সময়ই মহিলার সঙ্গে নম্বর আদানপ্রদান হয়েছিল। বাড়ি ফেরার পর থেকেই প্রায়শই সঞ্জয় তাঁকে ফোন করত। দেখা করতে চাপ দিত। রাজি না হওয়ায়, ধর্ষণ-খুনের হুমকি দিয়েছিল 'কীর্তিমান'। বিষয়টা জানতে পেরে হাসপাতালে চড়াওয় হয়েছিলেন মহিলার স্বামী। কিন্তু সঞ্জয়ের খোঁজ পায়নি।
জুনিয়র চিকিৎসকের হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসতেই সঞ্জয় রায়ের একের পর এক মুখোশ খুলছে। সে আর কী কী কুকীর্তি ঘটিয়েছে, তা জানতে জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ।