সুমন করাতি, হুগলি: প্রথমবার খো খো বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন ভারত। পুরুষ-মহিলা দুই দলই ছিনিয়ে নিয়েছে বিশ্বসেরার তাজ। বিশ্বজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন বাংলার ছেলে সুমন বর্মন। হুগলির চুঁচুড়ানিবাসী দিনমজুরের পুত্র সুমনের মাথাতেও উঠেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের শিরোপা। কিন্তু সাফল্য এলেও পেটে ভাত জুটবে কিনা, সংশয় হয়েছে চুঁচুড়ার বর্মন পরিবারে।
দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে বসেছিল খো খো বিশ্বকাপের আসর। ফাইনালে নেপালকে ৫৪-৩৬ পয়েন্টে হারিয়ে দেয় ভারত। সেই দলের সদস্য হুগলির চুঁচুড়া মিলন পল্লির সুমন। পাড়ার মাঠেই প্রথম খো খো খেলা শুরু করেন। সুমনের বাবা রামদেব বর্মন দিনমজুর। মা সুজাতা বর্মন পরিচারিকার কাজ করেন। সুমনের বাড়িতে রয়েছে দাদা এবং বোন। কিন্তু দাদা মূক-বধির। বোন রিয়া বর্মন মাধ্যমিক দেবে। সবমিলিয়ে, প্রবল অভাব রয়েছে হুগলির পরিবারে।
জানা গিয়েছে, খুব ছোট থেকেই খেলাধুলা পারদর্শী ছিলেন সুমন। ধীরে ধীরে খো খোর তারকা হয়ে ওঠেন তিনি। বহু পুরস্কার পেলেও বিশ্বকাপ জয়ের অনুভূতি একেবারে আলাদা। জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে খেলা দেখেছে সুমনের বন্ধুরা। ফাইনাল দেখার জন্য দক্ষিণ ভারত থেকে ফিরেছিলেন সুমনের বাবা। খো খো খেলোয়াড়ের মাও কালনা থেকে ফিরে এসেছেন ছেলেকে বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলতে দেখবেন বলে। ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে উচ্ছ্বাসে মেতেছে চুঁচুড়ার মিলন পল্লি।
কিন্তু বিশ্বকাপ জিতলেও কি পরিবারের দুর্দশা ঘুচবে? সুমনের বাবা-মায়ের কথায়, "আমরা খুব গরীব, তাই অন্য খেলায় ছেলে মেয়েকে দিতে পারিনি। খো খো খেলেই তারা মুখ উজ্বল করছে। কিন্তু সংসার টানতে আমাদের কষ্ট করে যেতে হচ্ছে।" বিশ্বজয়ীর প্রতিবেশীদের মতে, সুমনের একটা চাকরির প্রয়োজন। ক্রিকেট বা ফুটবল খেলা হলে যে উন্মাদনা চোখে পড়ে খো খো খেলায় তা নেই। বিশ্বকাপ জেতার পরেও প্রশাসন বা জন প্রতিনিধিরা কেউ সুমনের বাড়িতে গিয়ে খোঁজও নেয়নি। তবু পাড়ার ছেলে সুমনকে নিয়ে গর্বিত মিলন পল্লিবাসী।