অভিষেক চৌধুরী, কালনা: স্পেনের জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করলেন কালনার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাঁতারু সায়নী দাস। সেইসঙ্গে ষষ্ঠ সিন্ধু জয়ের মুকুট উঠল তাঁর মাথায়। আরও একবার বিশ্বমঞ্চে ভারতের জাতীয় পতাকা ওড়ালেন ২৬ বছর বয়সি এই বঙ্গতনয়া। এই জয়ে সায়নী আরও দু'টি রেকর্ড গড়েছেন।
কী সেই রেকর্ড? মাত্র ৩ ঘণ্টা ৫১ মিনিটে ১৫.২ কিলোমিটার জিব্রাল্টার প্রণালী অতিক্রম করেন তিনি। পাশাপাশি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে প্রথম মহিলা হিসেবে ষষ্ঠ সিন্ধু জয় করেন সায়নী। সাত সাগর জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোনো সাঁতারু সায়নী আর মাত্র একটি চ্যানেল দূরে। জাপানের সুগারু জয় করতে পারলে সপ্তসিন্ধু জয়ের স্বপ্ন পূর্ণ হবে এই বঙ্গতনয়ার।
ভারতীয় সময় শুক্রবার রাতে জিব্রাল্টার জয়ের খবর আসতেই সায়নীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা। ২০১৭ সালে ইংলিশ চ্যানেল জয় দিয়েই যাত্রা শুরু কালনার শহরের বারুইপাড়ার সায়নীর। এরপর কুক স্ট্রেইট মলোকাই, ক্যাটলিনা, নর্থ চ্যানেলের মতো একের পর এক চ্যানেল জয় করে করেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাঁতারে এই অবদানের জন্য সায়নীকে কিছুদিন আগেই ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু 'তেনজিং নোরগে ন্যাশানাল অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ পুরস্কার তুলে দেন।
উল্লেখ্য, এক একটি সফর প্রচুর পরিমাণে ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় তাঁকে দফায় দফায় আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যেও পড়তে হয়। তা সত্ত্বেও থেমে থাকেননি সায়নী। দাঁতে দাঁত চেপে দৃঢ় প্রত্যয়ী মনোভাব নিয়ে একের পর এক চ্যানেল জয় করেছেন। স্পেনের জিব্রাল্টারে পা রেখে তাঁকে ঝড়বৃষ্টির মুখে পড়তে হয়। অনুশীলনেও বাধাপ্রাপ্ত হন। যদিও এবার তাঁকে অনুশীলনের গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেন সফরসঙ্গী দ্রোণাচার্য পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রশিক্ষক তপন কুমার পাণিগ্রাহী। সঙ্গে ছিলেন বাবা ও কোচ রাধেশ্যাম দাস।
শুক্রবার পেনের দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে তিনি জিব্রাল্টারে নামেন। নিজস্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই চ্যানেল জয় করে আরও একটি মুকুট তাঁর মাথায় তুলে নিলেন। বাবা ও কোচ রাধেশ্যাম দাস বলেন, "সায়নীকে এই চ্যানেল জয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ টিপস দিয়েছেন জাতীয় কোচ তপন কুমার পাণিগ্রাহী।" সায়নী জানান, "আরও একবার জয় পেয়ে খুব ভালো লাগছে। দেশের জাতীয় পতাকাকে বিশ্বের মঞ্চে তুলে ধরতে পেরে গর্ব অনুভব করছি।"