সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গেরুয়া পোশাক। মুণ্ডিত মস্তক। গোরক্ষপুরের মোহন্ত যেদিন মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছিলেন, সেদিনই অনেকে ভুরু কুঁচকেচিলেন। এক তো রাজনৈতিক বিষয় ছিল। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে দেখা যাবে, এমনটা কেউ ভাবতেই পারেননি। উলটে গেরুয়া পোশাকের কোনও সন্ন্যাসীকে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে দেখতে অভ্যস্তও নয় ভারতবাসী। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথ সর্বার্থেই ব্যতিক্রমী। এবার তারই প্রশংসা শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথায়।
[ আরও একটা জন্মদিন, কেমন আছেন ভারতীয় রাজনীতির ‘ভীষ্ম’? ]
দিল্লির ম্যাজেন্টা লাইন মেট্রোর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর নয়ডায় এক জনসভায় বক্তৃতা দিয়ে গিয়েই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর গেরুয়া পোশাকের প্রশংসা করেন তিনি। তবে নেহাত পোশাকের কারণে এই স্তুতি নয়। এ প্রসঙ্গ এসেছে প্রশাসনিক দক্ষতার নিরিখে। প্রধানমন্ত্রী জানান, আদিত্যনাথের পোশাকের কারণে গোড়ার দিকে অনেকেই তাঁকে ততটা আধুনিক ভাবেননি। কিন্তু আদিত্যনাথই উত্তরপ্রদেশকে এমন একটা জায়গায় পৌঁছে দিতে পেরেছেন, যা অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রীরা করতে পারেননি। একজন ভাল মুখ্যমন্ত্রীর এর থেকে বড় সার্টিফিকেট আর কী হতে পারে! এদিন উত্তরপ্রদেশকে নিজের রাজ্য বলেই ঘোষণা করেন মোদি। জানান, “এ অন্য অন্য কোনও রাজ্য নয়। এই রাজ্যই আমাকে সংসদে বসার অনুমোদন দিয়েছে। এ আমারই রাজ্য।” স্পষ্টতই আদিত্যনাথের প্রশংসার মধ্য দিয়েই উপেক্ষিত নয়ডার প্রশংসা তুলে অতীতের সপা সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন মোদি। জানিয়েছেন, “কুর্সিতে দীর্ঘদিন থাকার লোভে অনেকেই নিজের রাজ্যের বহু জায়গায় যান না। অতীতে বহু মুখ্যমন্ত্রী তা করেছেন। সেখানেই ব্যতিক্রম যোগী আদিত্যনাথ। পোশাকের কারণে তাঁকে যে যাই ভাবুক না কেন, একজন দক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর নমুনা তিনি তাঁর কাজে রেখে চলেছেন।”
উল্লেখযোগ্যভাবে এদিনটা ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন। যে দিনটাকে গুড গর্ভন্যান্স ডে হিসেবে পালন করা হয়। এদিনের বক্তৃতায় তাঁর কথাও তুলে ধরেন মোদি। পাশাপাশি স্মরণ করেন আর এক ভারতরত্ন মদন মোহন মালব্যের কথাও। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার প্রতিও শ্রদ্ধা জানান মোদি। এদিন ক্রিসমাস উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর আদর্শ আমাদের সকলেরই পাথেয়। নতুন মেট্রো লাইন বাসিন্দাদের ব্যবহার করার আরজি জানান প্রধানমন্ত্রী। পেট্রোলিোয়ামের ব্যবহার কমানোর পক্ষেও সওয়াল করেন। ২০২২ সালে ভারত পঁচাত্তর তম স্বাধীনতা দিবস পালন করবে। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন, তখন এক নতুন ভারত গড়ে উঠবে। আর সে ভারতে কমবে পেট্রোলিয়ামের আমদানি। প্রধানমন্ত্রীর তাই ঘোষণা, এই মেট্রো লাইন শুধু তাই পরিবহণ নয়, নতুন ভারতের সঙ্গে এক সংযোগও বটে। তবে নিজের রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত এই রেল প্রকল্পে অবশ্য ডাক পাননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তা নিয়ে অবশ্য বিস্তর জলঘোলা হয়েছে।
[ গরু পাচার ও গো-হত্যার শাস্তি মৃত্যু, বেপরোয়া মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের ]