অভিরূপ দাস: ক্ষুদ্রান্ত্রে আটকেছিল ক্যাপসুল। ঘুণাক্ষরেও টের পাননি রোগী। শারীরিক অস্বস্তিতে রাতের ঘুম কাবার। জড়ানো প্যাঁচানো সরু ক্ষুদ্রান্ত্রে ঢুকে ক্যাপসুল বের করবে কে? অবশেষে মুশকিল আসান। পাওয়ার স্পাইরাল এন্টেরোস্কপিতেই (Power spiral enteroscopy) মিলল মুক্তি। এ যন্ত্র দেখতে অনেকটা লিকলিকে সরু সাপের মতো। পায়ুদ্বার দিয়ে তা শরীরে প্রবেশ করবে। নিমেষে শনাক্ত করবে ক্ষুদ্রান্ত্রের সমস্যা। তারপর সমাধানও করবে।
সাধারণ এন্ডোস্কপি, ক্যাপসুল এন্ডোস্কপি কিম্বা বেলুন অ্যাসিস্টেড এন্ডোস্কোপি যা ধরতে পারতো না তাকেই ধরছে অত্যাধুনিক এই যন্ত্র। পূর্ব ভারতে প্রথম অ্যাপোলো হাসপাতালে উদ্বোধন হল এই যন্ত্রের। অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের (Apollo Multispeciality Hospital) ইন্সটিটিউট অফ গ্যাস্ট্রোসায়েন্স অ্যান্ড লিভার-এর ডিরেক্টর ডা. মহেশ কুমার গোয়েঙ্কা জানিয়েছেন, এতদিন এই ধরণের যন্ত্র স্রেফ রোগ শনাক্ত করতেই কাজে আসতো। কিন্তু এই প্রথম পাওয়ার স্পাইরাল এন্টেরোস্কপি দিয়ে ছোটোখাটো অস্ত্রোপচারও করা যাবে।
[আরও পড়ুন: ‘নিজের পায়ে কুড়ুল মেরেছে, নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে বিজেপি’, ফের বিস্ফোরক তথাগত রায়]
বিগত ৬ সপ্তাহে ১৯ জন রোগীর শরীরে এই যন্ত্র প্রবেশ করানো হয়েছে। অ্যাপোলো হাসপাতাল সূত্রে খবর, ১১ জনের মুখ দিয়ে এবং বাকি ৮ জনের পায়ুদ্বার দিয়ে প্রবেশ করানো হয় যন্ত্র। এমন অনেক রোগীরই পায়খানা দিয়ে রক্ত পড়ছিল। অসুখ শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। দেখা গিয়েছে, যখন সমস্ত যন্ত্র রোগ নির্ণয়ে ব্যর্থ হয়, গ্যারান্টি দিয়েই যন্ত্র ক্ষুদ্রান্ত্রের ঘা (Ulcer) শনাক্ত করে। ডা. মহেশ গোয়েঙ্কার কথায়, কোলোনোস্কপি যেখানে রোগ ধরতে পারছে না অত্যাধুনিক পাওয়ার স্পাইরাল এন্টেরোস্কপি চটজলদি রোগ ধরছে।
[আরও পড়ুন: ‘নিজের পায়ে কুড়ুল মেরেছে, নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে বিজেপি’, ফের বিস্ফোরক তথাগত রায়]
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ১৮ কিংবা তার বেশী বয়সি রোগীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র ব্যবহার যোগ্য নয়। ডা. মহেশকুমার গোয়েঙ্কার কথায়, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেই ক্ষুদ্রান্ত্রের সমস্যা সর্বাধিক। একরত্তির পায়খানার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের চেম্বারে আসার ঘটনা বিরল। তবে অতি শীঘ্রই ছোটদের জন্যেও এ ধরণের যন্ত্র আসবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক অবিনাশ তিওয়ারি। এই মুহূর্তে এই যন্ত্র ব্যবহার করে চিকিৎসা করতে খরচ হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ হাজার। রাজ্য সরকার যদি স্বাস্থ্যসাথীর লিস্টে এই যন্ত্রের খরচ তালিকাভুক্ত করে তবে বিনামূল্যে তা রোগীদের দিতে রাজি অ্যাপোলো হাসপাতাল।