shono
Advertisement

মাঘী পূর্ণিমায় পূণ্যস্নানে পাপমুক্তি, কী করলে মা লক্ষ্মীর কৃপালাভ হবে?

এসব মেনে চললে সৌভাগ্য ধরা দেবেই।
Posted: 09:11 PM Feb 02, 2023Updated: 05:01 PM Feb 04, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দু (Hindu) শাস্ত্রে তিথি-নক্ষত্রের বিশেষ যোগ আছে। নির্দিষ্ট তিথিতে নিয়ম মেনে কয়েকটি কাজ করলে জীবনে সুখ-সমৃদ্ধির হদিশ মেলে। সেরকমই একটি গুরুত্বপূর্ণ তিথি মাঘী পূর্ণিমা। এই পূর্ণিমায় ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নানে জীবন কলুষমুক্ত হয়। স্নান শেষে প্রভু সত্যনারায়ণ ও মা লক্ষ্মীর পুজো করলে মেলে তাঁর অক্ষয় কৃপা।

Advertisement

সনাতন ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, পুণ্যস্নানের যে যে তিথি আছে, তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল মাঘী পূর্ণিমা (Maghi Purnima)। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৩-এ মাঘী পূর্ণিমা পালিত হবে ৫ ফেব্রুয়ারি, রবিবার। ৪ ফেব্রুয়ারি, শনিবার, ৯টা ২৯ মিনিট থেকেই পূর্ণিমার সূচনা, যা থাকবে ৫ ফেব্রুয়ারি, রবিবার, ১১টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত। সূর্যোদয়ের মুহূর্ত ধরলে রবিবারই মাঘী পূর্ণিমাতে স্নানের আয়োজন।

এদিন ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান সকল পাপ থেকে মুক্তি দেয় মানুষকে। সঙ্গমস্নান যদি একান্তই সম্ভব না হয়, তবে গঙ্গাস্নানেও (Ganga) মেলে পুণ্য। পুণ্যতোয়া যে কোনও নদীর জলেই এদিন স্নান করে অশান্ত মনকে শান্ত করেন ভক্তরা। এর যোগ আছে কল্পবাসের সঙ্গেও। প্রয়াগরাজে (Prayagraj)পৌষ পূর্ণিমা থেকেই শুরু হয়ে যায় কল্পবাস। অর্থাৎ পবিত্র সঙ্গমস্থলে বসে বেদপাঠ এবং ঈশ্বরের ধ্যান করার বিধি এই একমাস ধরে। যার সমাপ্তি হয় এই মাঘী পূর্ণিমার পুণ্যস্নানে। মন তখন আধ্যাত্মিকতায় ও প্রশান্তিতে পূর্ণ হয়ে ওঠে। পুষ্য নক্ষত্রের যোগে মাঘী পূর্ণিমার মাহাত্ম্য আরও বাড়ে। কথিত আছে, স্বয়ং দেবতারাও মানুষের রূপ ধারণ করে এদিন নেমে আসেন ধরাধামে। প্রয়াগরাজে মাঘী পূর্ণিমায় স্নান করে, জপ ও দান করে তাঁরা ফিরে যান। তাই এদিন পুণ্যস্নানে সকল মনবাসনা পূরণ হয় বলেই বিশ্বাস করেন পুণ্যাত্মাগণ। বৌদ্ধ ধর্ম মতেও মাঘী পূর্ণিমা গুরুত্বপূর্ণ। এদিনই ভগবান বুদ্ধ (Lord Buddha) পরিনির্বাণ লাভ করেন বলে মনে করা হয়।

[আরও পড়ুন: SSC Scam: এবারও মিলল না জামিন, আরও ১৪ দিন জেলই ঠিকানা পার্থ-কল্যাণময়দের]

স্নান, ধ্যান ও দান- এই তিনটি হল মাঘী পূর্ণিমায় অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। পবিত্র গঙ্গাজলে স্নান শেষে প্রথমেই পুজো করতে হয় সূর্য দেবতার। তিলজল অর্পণ করতে হয় তাঁর উদ্দেশে। এই পূর্ণিমাতেই অবশ্যই উপবাস করে আরাধানা করতে হয় প্রভু সত্যনারায়ণ ও মা লক্ষ্মীর। প্রথমে দুধ-গঙ্গাজলে তাঁদের অভিষেক করে নিয়ে, তারপর বিধি মেনে করতে হয় পুজো। প্রভু নারায়ণের উদ্দেশে নিবেদন করতে হয় ফুল-ফল-পান-সুপারি-দুর্বা ও অন্যান্য প্রসাদ।

এছাড়া যুগল মূর্তির সামনে এদিন ঘিয়ের প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করে সত্যনারায়ণের কথা শোনারও রীতি আছে। এই কাজে প্রসন্ন হন মা লক্ষ্মী। তাঁর অক্ষয় কৃপা বর্ষিত হয় ভক্তদের উপর। মাঘী পূর্ণিমায় দানের রীতি বহুল প্রচলিত। সাধ্য্যমতো গরিবদের দানধ্যান করলে এদিন প্রসন্ন হন দেবতারা। জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি লাভ করেন ভক্তরা। ভগবান বিষ্ণুর প্রিয় অশ্বত্থ গাছকেও এদিন পুজো করার রীতি আছে। অশ্বত্থের পুজোয় তুষ্ট হন শ্রীবিষ্ণু, আশীর্বাদ করেন পিতৃপুরুষগণ। অনেকে আবার এই তিথিতে শ্রীকৃষ্ণেরও পুজো করে থাকেন। পুষ্য-নক্ষত্র যোগের দরুন এদিন সোনা কেনা শুভ বলেও মত অনেকের। সেই সোনা অবশ্যই উৎসর্গ করতে হয় মা লক্ষ্মীকে (Goddess Lakshmi)। তবেই মেলে তাঁর কৃপা।

[আরও পড়ুন: ৯০ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ, চিটফান্ড মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার তৃণমূল নেতা]

মাঘী পূর্ণিমার আমাদের সাধনার শিক্ষা দেয়। বেদ ও শাস্ত্র অধ্যয়ন শেষে মন যেমন ক্লেদমুক্ত ঊর্ধমুখী হয়ে ওঠে, তারই প্রতীক যেন ত্রিবেণীর পুণ্যস্নানে সকল কলুষমুক্তি। ধ্যান ও দানের মধ্য দিয়ে মনকে আধ্যাত্মিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করাই লক্ষ্য। আর তাই বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে যদি মাঘী পূর্ণিমা পালন করা হয়, তবে অক্ষয় শান্তি নেমে আসে মানুষের জীবনে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement