সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: বছরভর নানা পুজোর আয়োজন হয়। কিন্তু স্বয়ং মৃত্যুর দেবতা যমরাজের পুজো! এমনটা ভেবেছেন? দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ঝাঁঝরা গ্রামে প্রতিবছর মাঘের প্রথমদিন এই পুজো হয়। এবারও তার অন্যথা হল না। অর্ঘ্য দেওয়া হল মাটির ঘোড়া।
দুর্গাপুরের ঝাঁঝরা গ্রামের শেষ প্রান্তে রয়েছে যমরাজের মন্দির। বাসিন্দারা জানান, আগে মাঠের মধ্যেই পুজো হতো। মন্দির ছিল না। সম্প্রতি গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় সেখানে একটি মন্দির নির্মাণ হয়েছে। এবছর সেখানেই হল পুজো। গ্রামের সবাই এই পুজোতে অংশ নেন। যমরাজের পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে বহু অলৌকিক কাহিনী। প্রবীণ বাসিন্দা রাকেশ পাল বলেন, "গ্রামে ঠিক কত বছর আগে যমরাজের পুজোর সূচনা হয়েছে তা জানা নেই। তবে পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে এই পুজোর কথা শুনেছি। আজও নিষ্ঠাভরে এই পুজো করা হয়।"
পুজো ঘিরে প্রচলিত কাহিনীটি হল, অতীতে কোনও এক সময় গ্রামের এক চাষি মাঠে গরু চরাচ্ছিলেন। দুর্যোগের দিন ছিল। ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে হচ্ছিল বজ্রপাত। ওই চাষি একটি গাছের তলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। অদৃশ্য কেউ ওই চাষিকে সেখান থেকে টেনে অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। পরক্ষণেই গাছটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়ে। চাষি বেঁচে যান। অদৃশ্য ব্যক্তি স্বয়ং যমরাজ ছিলেন, এমনটাই গ্রামবাসীদের বিশ্বাস। সেই বিশ্বাসেই তারপর থেকে শুরু হয়েছে যমরাজের পুজো। যা এখনও রীতি মেনে চলছে।