সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পশুদের দেহ থেকে কি মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে কোভিড-১৯ (COVID-19)? এমন প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে। উলটো সম্ভাবনা নিয়েও চলছিল আলোচনা। সম্প্রতি আমেরিকায় (US) প্রায় ১০,০০০ মিঙ্কের (American mink) মৃত্যু ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। সেখানকার উটা ও উইসকনসিনের পশুখামারের এই মৃত্যুমিছিল দেখে তাঁরা মনে করছেন, মানুষের শরীর থেকেই করোনা ছড়িয়েছিল ওই নিরীহ প্রাণীগুলির মধ্যে। এর মধ্যে কেবল উটাতেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৮ হাজার মিঙ্কের। প্রসঙ্গত, এই প্রাণীগুলির পশম খুবই দামি বাণিজ্যিক সম্পদ।
উটার এক পশু চিকিৎসক ড. ডিন টেলর জানিয়েছেন, মিঙ্কদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ প্রথম লক্ষ করা হয় আগস্টে। তার আগে জুলাইতেই খামারের কর্মীরা সংক্রমিত হয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে, সেখান থেকেই মারণ ভাইরাস প্রবেশ করেছিল ওই প্রাণীদের শরীরে। এর আগেও গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, করোনা ভাইরাস মানুষের শরীর থেকে পশুদের শরীরে ছড়াতে পারে। তবে পশুদের মানুষকে সংক্রমিত করার ক্ষমতার বিষয়ে এখনও কোনও প্রমাণ মেলেনি। ড. ডিন জানিয়েছেন, ‘‘উটাতে আমরা দেখেছি ভাইরাস মানুষের থেকে পশুদের শরীরে সংক্রমণ হয়েছে। পুরো ব্যাপারটাই একমুখী ভাবে ঘটেছে।’’ তবে এ বিষয়ে আরও পরীক্ষা প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: পুরুষ যৌন হরমোনের মাত্রা কমাচ্ছে করোনা, বাড়াচ্ছে মৃত্যুর সম্ভাবনা! চাঞ্চল্যকর দাবি গবেষকদের]
এদিকে উইসকনসিনেও প্রায় ২ হাজার মিঙ্কের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ওই খামারকে কোয়ারান্টাইন করে রেখেছে। দেখা গিয়েছে সবক্ষেত্রেই মিঙ্কগুলির শরীরে করোনার লক্ষণ ছিল মানুষের শরীরের মতোই। শ্বাসকষ্টে ভুগছিল তারা। তবে এদের শরীরে ভাইরাস অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়েছে। সংক্রমিত হওয়ার একদিনের মধ্যেই মারা গিয়েছে বহু প্রাণী।
প্রসঙ্গত, এটাই প্রথম নয়। অতীতে এই ধরনের সংক্রমণের দাবি শোনা গিয়েছে নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও ডেনমার্কেও। এদিকে কেবল ওই প্রাণীগুলিই নয়, আমেরিকার জাতীয় পশু চিকিৎসা পরিষেবা ল্যাবরেটরিগুলির দাবি, বহু কুকুর, বিড়ালের শরীরেও মিলেছে কোভিড সংক্রমণ। এছাড়াও একটি সিংহ ও একটি বাঘের শরীরেও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।