সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে লিখিত বিবৃতি দিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লিখলেন, তাঁর প্রিয় দেশ জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন ধ্বংস করা হচ্ছে। কিন্তু আগের বিবৃতিগুলির সঙ্গে এবারের প্রতিক্রিয়ার একটা বিশাল ফারাক রয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া শেখ হাসিনার দীর্ঘ বিবৃতিতে কোথাও মহম্মদ ইউনুস বা কোনও বিএনপি নেতার নামের উল্লেখ নেই। এর পরই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি নয়াদিল্লির বার্তার পরই কৌশল বদল করলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা?
বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থানের পর ভারতে উড়ে আসেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদিও বর্তমানে তিনি কোথায় রয়েছেন তা স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে অভিযোগ, ভারত থেকেই হাসিনা মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়ে চলেছেন। যদিও ওই বিবৃতি সমর্থন করে না ভারত। ঢাকা থেকে ফিরে বিদেশ সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিতে জানিয়েছেন বিদেশসচিব বিক্রম মিসরি। ব্যাখ্যা করেন, ইউনুস এবং তাঁর সরকার সম্পর্কিত হাসিনার বাঁকাকথা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য কতটা ক্ষতিকারক। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ব্যক্তি বিশেষ বা নির্দিষ্ট সরকারে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে চায় নয়াদিল্লি। এই মন্তব্যের পর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে কারও নাম উল্লেখ না করেই কড়া বার্তা দিলেন হাসিনা।
বাংলাদেশের রক্তে লেখা ইতিহাস মনে করিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা লিখলেন, 'জাতির এক গভীর সংকটময় মুহূর্তে এ বছর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধী এবং বুদ্ধিজীবী নিধনকারীদের দোসররা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সাধারণ মানুষের উপর অমানবিক নিপীড়ন- নির্যাতন চালাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জলাঞ্জলি দিয়ে জামাতে ইসলামীসহ ১৯৭১-এর পরাজিত শক্তিকে পুনর্বাসন করছে। পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন ধ্বংস করেছে। প্রিয় দেশকে জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমিতে পরিণত করছে।' তিনি আরও লিখেছেন, 'স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির এসব অপকর্ম বীর বাঙালি কোনদিন মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না।' দেশকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়ে হাসিনার লেখেন, 'এদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়ার জন্য আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।' নাম না করেই সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলিকে বার্তা দিলেন হাসিনা। তাঁর এই বিবৃতি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ।