shono
Advertisement

নিরাপত্তার অভাবে ভুগতেন ঋদ্ধিমান, মানসিক যন্ত্রণায় ছিল পরিবারও! প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য

‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর হাতে এল বোর্ডের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট।
Posted: 11:03 AM May 07, 2022Updated: 11:03 AM May 07, 2022

স্টাফ রিপোর্টার: দিন দুই আগে ভারতীয় উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহার মেসেজ কাণ্ডে সাংবাদিক বোরিয়া মজুমদারকে দু’বছরের নির্বাসনে পাঠিয়েছে ভারতীয় বোর্ড (BCCI)। এবার ঋদ্ধিমান কাণ্ডের তদন্ত করতে যে রিপোর্ট তৈরি করেছিল বোর্ড নির্বাচিত কমিটি, তাদের সাত পাতার রিপোর্ট প্রকাশ্যে চলে এল।

Advertisement

বোর্ড ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লা, কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমাল এবং কাউন্সিলর, অ্যাপেক্স কাউন্সিল প্রভজ্যোৎ সিং ভাটিয়ার সই করা রিপোর্টটি জমা পড়ে গত ২৩ এপ্রিল, অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠকে। যার পর বোরিয়াকে নির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখানে বলে রাখা ভাল, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্য করেন ঋদ্ধিমান। যেখানে তাঁকে লেখা হয়েছিল, “তুমি আমাকে ফোন করলে না। আমি আর কখনও তোমার সাক্ষাৎকার নেব না। আমি অপমান ভাল ভাবে নিই না। এটা মনে রাখব আমি।” ঋদ্ধিমান (Wriddhiman Saha) যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট তুলে দিয়ে লিখে দেন, “ভারতীয় ক্রিকেটে আমার যাবতীয় অবদানের পর তথাকথিত ‘সম্মাননীয়’ সাংবাদিকের থেকে এ জিনিস পেলাম। কোথায় নেমেছে সাংবাদিকতা।” যার পর দেশজুড়ে ঝড় উঠে যায়। বোর্ড তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বসিয়ে দেয়। কমিটির কাছে সেই সাংবাদিকের নাম (বোরিয়া মজুমদার) বলে দেন ঋদ্ধিমান। আর দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রিপোর্ট তৈরি করে অ্যাপেক্স কাউন্সিলে পাঠায় সংশ্লিষ্ট সেই কমিটি।

[আরও পড়ুন: ‘রোজগারের ব্যবস্থা করুন!’ অমিত শাহর কাছে কাজ চেয়ে হাসির খোরাক রুদ্রনীল]

যে রিপোর্টে ঋদ্ধিমানের বক্তব্য, অভিযুক্ত সাংবাদিকের বক্তব্য এবং কমিটির রায়- সবই লেখা রয়েছে। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর হাতে আসা সেই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ঋদ্ধিমানের বক্তব্যকে দশ দফায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে গোটা দুই-তিন রীতিমতো বিস্ফোরক। নিচে সেগুলো তুলে দেওয়া হল।

১) ঋদ্ধিমান কমিটির কাছে বলেছেন, তাঁকে ওই সমস্ত মেসেজ করার পরেও বোরিয়া মজুমদার কোনও অনুতাপ দেখাননি, ক্ষমাও চাননি। একই সঙ্গে ঋদ্ধিমান বলেছেন যে, সাংবাদিকের নাম প্রকাশ না করার জন্য ঘুরিয়ে নানা মহল (চেনা-আধচেনা লোকজন মারফত) থেকে তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। আর সেই চাপে পড়ে বোর্ড কমিটির কাছে শুনানির দিন, নিরাপত্তার অভাবে নিজের গাড়ি করে বিমানবন্দর যেতে পারেননি ঋদ্ধিমান। অন্য একটা গাড়ি করে বিমানবন্দরে যান। ঋদ্ধিমান এটাও বলেন যে, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তিনি। ভয় পাচ্ছেন, কলকাতা ফিরলে কোনও ঝামেলায় না পড়তে হয়। ঋদ্ধিমানের ‘সাবমিশন’-এর ‘এইচ’ পয়েন্টে তা বলা আছে।

২) ঋদ্ধিমান কমিটির কাছে বলেন, সেই টুইট করার পর তিনি গুজব শুনেছিলেন যে, গুজরাট টাইটান্সের সঙ্গে তাঁর আইপিএল চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে। ঋদ্ধিমানের ‘সাবমিশন’-এর পয়েন্ট ‘আই’-এ তা বলা রয়েছে।

৩) ঋদ্ধিমান বলেছেন যে, তাঁর সঙ্গে তাঁর পরিবারকেও মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কারণ, অচেনা নানা মহল থেকে নিরন্তর চাপ দেওয়া চলত। যে কারণে ঋদ্ধিমান ঠিক করেন, নিজের বক্তব্য জমা করবেন। যাতে ভবিষ্যতে অন‌্য প্লেয়ারের সঙ্গে এ জিনিস এড়ানো যায়। ঋদ্ধিমানের ‘সাবমিশন’-এর পয়েন্ট ‘জে’-তে যা বলা রয়েছে।

[আরও পড়ুন: ‘শাহী’ সন্ধ্যায় এলাহি আয়োজন, অমিত শাহর সঙ্গে এক টেবিলে বসে নৈশভোজ সৌরভের]

বোর্ডের কেউ কেউ বলছিলেন, দেশের হয়ে চল্লিশটা টেস্ট খেলে ফেলা একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে এ জিনিস ঘটছে, ভাবাই যায় না। ভাবাই যায় না, একজন বোর্ড চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার নিরাপত্তার অভাবে নিজের গাড়ি করে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত যেতে পারছেন না! তাঁকে চাপ দেওয়া চলছে, তাঁর পরিবারকে মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। বলা হল, অভিযুক্তকে শাস্তি প্রদান করা হলেও ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এই ঘটনা অন্যতম কালো অধ্যায় হিসেবে থেকে যাবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement