শুভময় মণ্ডল: ভোটে দাঁড়ালে সবাই বলে, এটা করে দেব সেটা করে দেব। সস্তায় পুষ্টিকর খাবার দেব। গরিবদের জন্য বিশেষ সুবিধে দেব। প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেন নেতা-নেত্রীরা। এটাই দস্তুর। তবে এবার যেন উলটপুরাণ। কাজ করার পর বলছেন ভোটে দাঁড়াতে চান এক ব্যক্তি। চান জনপ্রতিনিধি হয়ে আরও কাজ করতে। তবে তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়াতে চান। আর যদি টিকিট না পান? কুছ পরোয়া নহি! দিদি টিকিট না দিলেও তৃণমূলের সমর্থনেই ভোটে দাঁড়াতে চান ভক্তিপদ দাস।
স্বামীজি বলেছিলেন, ‘জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর’! কাঁকুড়গাছির ভক্তিপদ দাস কাজ করে চলেছেন আপন মনে। সকলে তাঁকে চেনেন রেশন ভজা নামে। কেন রেশন ভজা? কারণ, সরকারি রেশন দোকানের মতো তাঁরও রয়েছে নিজস্ব রেশন ব্যবস্থা। রয়েছে হলুদ রেশন কার্ড। গত ৩ বছর ধরে এই রেশন ব্যবস্থা চালু করেছেন ভজা। সেই থেকেই তিনি পরিচিত রেশন ভজা নামে। কার্ড দেখালেই তাঁর দোকান থেকে মেলে মাসিক রেশন। কিন্তু গ্রাহক কারা? তাতেও রয়েছে চমক! নানান প্রান্তের দুঃস্থ মানুষরাই তাঁর গ্রাহক। কিন্তু রেশন ভজার গরিব চেনার অভিনব এক কায়দা আছে। প্রথমে হলুদ কার্ডের জন্য নাম লেখান গ্রাহকরা। তারপর ভজা নিজেই বাড়িতে যান আদৌও গরিব কিনা যাচাই করতে। গরিব প্রমাণ হলে ভজা পৌঁছে দেন চাল-ডাল-নুন-চিনি-আটা-তেল।
একটা সময় অবস্থা ছিল অসচ্ছল। বাবাকে হারিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন, দারিদ্র্যের যন্ত্রণা। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। তারপরই এই ছোট্ট রেশন ব্যবসায় নামেন ভজা। লাভের অংশ থেকে দুঃস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দান সামগ্রী। এখন চারটে দোকান। তবুও নেই এতটুকু অহংকার। মা ও দুভাইয়ের সংসারে তাঁর এই রোজনামচা। সরকারি রেশন দোকানের মতো তাঁর মাতৃভাণ্ডার দোকানের নামের নিচে লেখা ন্যায্য মূল্যের দোকান। সমবায়িকা তৈরি করে ন্যায্যমূল্যে রেশন বিলি ও কিছু মানুষের অন্নসংস্থানের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও দেন ভজা। এবছর পুরভোটে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে ফোন করে তারপর চিঠি লিখে আবেদন করেন পুরপ্রতিনিধি হিসাবে ভোটে দাঁড়ানোর। ভোটে জিতবেন, বিশ্বাস রয়েছে তাঁর। আর দিদি যদি সিট না দেন? তাহলে নির্দল প্রার্থী হয়ে তৃণমূলের সমর্থনে প্রার্থী হয়ে দাঁড়াবেন ভজা। বিজেপি থেকে ডাক পেলেও সাড়া দেননি এই ‘রেশনম্যান’।
[আরও পড়ুন: ছকভাঙার উদ্যোগ, বিয়েতে তত্ত্ব না পাঠিয়ে অনাথ শিশুদের উপহার দেবেন হবু কনে]
The post দুঃস্থদের পৌঁছে দেন চাল-ডাল-আটা, তৃণমূলের সমর্থনে পুরভোটে লড়তে চান ‘রেশন ভজা’ appeared first on Sangbad Pratidin.