বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: লক্ষ্য পর্যটন শিল্পের বিকাশ। আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য শক্তিশালী করা। 'সিটি অব জয়' কলকাতার সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময়। এমনই কিছু ভ্রমণ ও উন্নয়নের স্বপ্ন সামনে রেখে ভুটানের গেলফু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ড্রুক এয়ারের গেলফু-কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমান যাত্রা শুরু হল। পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর গেলফু ভুটানের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি চালু হওয়ায় ভারতীয় ভ্রমণ পিপাসুদের হাতের কাছে বিদেশ ভ্রমণের স্বপ্নপূরণের পথ আরও মসৃণ হল বলেই মনে করছেন ভারতীয় ট্যুর অপারেটর সংস্থাগুলোর কর্ণধারেরা।
রাজকীয় সমারোহে ভুটানের গেলফু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম আন্তর্জাতিক বিমান কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে ঐতিহাসিক মাইলফলক নির্মাণ করেছে। এতদিন দক্ষিণ ভুটানে সরাসরি পৌঁছনোর উপায় ছিল না। সোমবার ড্রাগন দেশের দক্ষিণাংশে বিমানযোগে ভ্রমণের দরজা খুলেছে। রয়্যাল গভর্নমেন্ট অফ ভুটানের ড্রুকএয়ার গেলফু-কলকাতা রুটে বিমান পরিষেবা চালু করেছে। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে ওই বিমান পরিষেবার সূচনা করেন। ভুটানের সারপাং জেলার গেলফু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ভুটানের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটি ওই দেশের 'গেলফু মাইন্ডফুলনেস সিটি' প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ভুটান প্রশাসনের কর্তাদের আশা নির্মাণশৈলীর সুবাদে ৬৮ হাজার বর্গমিটার বিস্তৃত খোদ বিমানবন্দরটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে।বিমানবন্দরটি ভুটানি ঐতিহ্য এবং আধুনিক স্থাপত্যের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে। কাঠ ব্যবহার করে নির্মিত এর ডায়াগ্রিড কাঠামোতে ভুটানের হস্তশিল্প এবং ড্রাগনের মোটিফ নজর কাড়বে। বিমানবন্দরটি প্রতিদিন ১২৩টি পর্যন্ত উড়ান দক্ষতার সঙ্গে ওঠানামা পরিচালনার জন্য এবং ২০৪০ সালের মধ্যে বছরে ১.৩ মিলিয়ন যাত্রী পরিবহনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। বিমানবন্দরে রয়েছে যোগব্যায়াম এবং ধ্যানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান। বিমানবন্দরের মডুলার কাঠামো ভবিষ্যতে সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। বিমান চলাচল বেড়ে চলার সঙ্গে নকশাটি সহজে আপগ্রেড এবং ক্রমবর্ধমান যাত্রী চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া হবে।
ড্রুকএয়ারের তরফে জানানো হয়েছে, গেলফুকে কলকাতার সঙ্গে যুক্ত করে যে নতুন আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা চালু করেছে এর সুবাদে গেলফু অঞ্চলে পর্যটন বৃদ্ধি পাবে। আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শক্তিশালী হবে। ভুটান ও কলকাতার মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় সহজ হবে। উড়ানে একমুখী টিকিটের দাম ৫,৫০০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ট্যুর অপারেটর সংস্থাগুলো সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর থেকে ভারতীয় পর্যটকদের বড় অংশ ভুটান ভ্রমণে যাচ্ছে। ক্রমশ সেই ঝোক বাড়ছে। এতদিন সড়কপথে অথবা পারো বিমানবন্দরে নেমে ভুটান ভ্রমণ করতে হয়েছে। গেলফু বিমানবন্দর চালু হওয়ায় সেই সমস্যা কেটেছে।
