নব্যেন্দু হাজরা: আগেই নাকি সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। এই অজুহাত দেখিয়ে নাগরিক কনভেনশন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিল সিপিএম। সুর একইরকম ছিল কংগ্রেসের। বাস্তবে দেখা গেল পুরো উলটো ছবি। রাজ্য দিবস নিয়ে খোলা মনে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা শহরের বিশিষ্টদের মতামত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
এদিনের কনভেনশনের দুটি উদ্দেশ্য ছিল, এক রাজ্যের নির্দিষ্ট দিবস চূড়ান্ত করা। অপরটি নিজস্ব গান। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, কম শুনলেন বেশি। সবার প্রস্তাব সামনে আসার পর বোঝা গেল, দিবসের নিরিখে আপাতত এগিয়ে ১লা বৈশাখ। এসেছে ১৫ আগস্ট, রাখী বন্ধন, এমনকি ২৩ জানুয়ারির কথাও। তবে বেশিরভাগের মত বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটির দিকেই।
[আরও পড়ুন: নিমেষে ক্যানভাসে রাধাকৃষ্ণ ফুটিয়ে তুলে বিশ্বরেকর্ড কাটোয়ার যুবকের, গর্বিত পরিবার]
রাজ্যের নিজস্ব সংগীত হওয়ার ক্ষেত্রে ধনধান্য পুষ্পে ভরার কথা উঠলেও বিষয়ের নিরিখে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ এগিয়ে রইল। সিদ্ধান্তগুলি অবশ্য কিছুই চূড়ান্ত করলেন না মমতা। আরও মত নেওয়ার জন্য ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দিলেন। ওই দিনের মধ্যে সকলের মতামত আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দিতে বললেন। সব একত্রিত করে ৭ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় পাশ হতে চলেছে একটি সর্বজনগ্রাহ্য প্রস্তাব।
তার আগে মঙ্গলবার নবান্ন সভাঘরে দাঁড়িয়ে নাগরিকসমাজ একবাক্যে একমত হয়ে জানিয়ে দিল দেশভাগের অসহনীয় জ্বালায় ক্ষতবিক্ষত কোনও দিন বাঙালির ‘দিবস’ হতে পারে না। এই সভায় খুব স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি বয়কট করবে তা বোঝাই গিয়েছিল। কিন্তু তাঁদের চাপে ফেলে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে সওয়াল করলেন অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার চন্দ্রচুড় গোস্বামী। বারবার মমতাকে মাতৃসমা বলে তাঁর পাশে থেকে বিজেপির সমালোচনা করলেন তিনি। সভায় উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি চন্দ্র বসুর।
[আরও পড়ুন: দত্তপুকুরের সেই গ্রাম যেন জতুগৃহ! বিস্ফোরণস্থলের ৫০ মিটার দূরে বাজি ঠাসা আরও গুদামের হদিশ]
আসলে গত ২০ জুন রাজভবনে দিল্লির নির্দেশে রাজ্যপাল ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করেন। এমনকি অসম-সহ বিভিন্ন রাজভবনে দিনটি পালন করা হয়। মা’য়ের চেয়ে মাসির দরদ হঠাৎ করে এতো বেশি হয়ে উঠলো, তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, ওইদিন বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল বেঙ্গল অ্যাসেম্বলিতে। কনভেনশনের চিঠি পেয়ে সিপিএম (CPIM) প্রশ্ন তুলেছিল এতো তাড়াহুড়ো কীসের! এদিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতার শুরুতেই বুঝিয়ে দেন, তাড়াহুড়ো এই কারণেই যে একটা কালো অধ্যায়কে স্বীকৃতি দিতে চলেছে দিল্লি। তার আগে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।