সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে মঞ্চে শপথ নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। চারপাশে শোনা যাচ্ছে 'আমেরিকা আমেরিকা' ধ্বনি। তখনই শোনা যায়, 'খলিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগানও। অন্য কেউ নয়, এই স্লোগান দিচ্ছিল খোদ শিখস ফর জাস্টিসের প্রধান গুরপতবন্ত সিং পান্নুন। এর আগে অযোধ্যার রামমন্দির বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল এই কুখ্যাত খলিস্তানি জঙ্গি। সোমবার তাকেই দেখা গেল ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে।
জানা গিয়েছে, ট্রাম্পের শপথগ্রহণে বল ডান্সের আসর বসেছিল। সেখানেই আমেরিকাপন্থী স্লোগান দেওয়া হচ্ছিল। হঠাৎই দেখা যায় অন্য অথিতিদের মাঝখান থেকে বেরিয়ে এসে পান্নুন 'খলিস্তান জিন্দাবাদ' বলে গলা তোলে। সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরার ফোকাস ঘুরে খলিস্তানি নেতার দিকে। খোশ মেজাজে অনুষ্ঠান উপভোগ করে সে। ইতিমধ্যেই পান্নুনের একাধিক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশাল মিডিয়ায়। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই পান্নুনকে নিয়েই সম্প্রতি ভারতের ও আমেরিকার মধ্যে চাপানউতোর বেড়েছিল।
গত অক্টোবরে প্রাক্তন বিকাশ যাদব নামে এক প্রাক্তন ‘র’ আধিকারিককে পান্নুন খুনের চেষ্টায় অভিযুক্ত হিসাবে ঘোষণা করে আমেরিকা। তার আগে পান্নুনেরই দায়ের করা মামলায় ভারত সরকারকে সমন পাঠায় আমেরিকার আদালত। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, প্রাক্তন ‘র’ প্রধান সমন্ত গোয়েল, ‘র’ এজেন্ট বিক্রম যাদব এবং ভারতীয় ব্যবসায়ী নিখিল গুপ্তার নামে ওই সমন আসে। ২১ দিনের মধ্যে জবাবদিহি করতে বলা হয়। তবে গোটা বিষয়টি ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ অভিযোগ বলে জানিয়ে দেন বিদেশ মন্ত্রকের সচিব বিক্রম মিশ্র।
বলে রাখা ভালো, ভারতে বহুবার হামলার ছক কষেছে পান্নুন। ২০১৯ সাল থেকে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-এর নজরে ছিল সে। এরপর ২০২০ সালের ১ জুলাই পান্নুনকে জঙ্গি তকমা দেয় ভারত। নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় তার সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসকেও। কিন্তু তাতেও থামেনি এই খলিস্তানি জঙ্গি। গত বছর রামমন্দির গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি একাধিকবার ভারতীয় বিমান উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয় সে। এবার সেই পান্নুনকেই দেখা গিয়েছে ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। সেখানে ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরও। ফলে একে অপরের নজরে দুজন এসেছেন কি না সেনিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর পান্নুন ভিডিও বার্তায় হুমকি দেয়, ১৬ থেকে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে হামলা চালানো হবে অযোধ্যার রামমন্দিরে। সেই ভিডিও শুট করা হয়েছে কানাডার ব্রাম্পটনে। যেখানে একাধিকবার হামলা চালিয়েছিল খলিস্তানি সমর্থকরা। এই মুহূর্তে পান্নুন আমেরিকায় থাকলেও তার কাছে কানাডার নাগরিকত্ব রয়েছে। তার নির্দেশে কানাডাতেও বাড়বাড়ন্ত বেড়েছে খলিস্তানিদের।