shono
Advertisement
Donald Trump

দ্য ট্রাম্প এফেক্ট! কুর্সিতে বসার আগেই বিশ্বমঞ্চে বদলে যাচ্ছে সমীকরণ, বাড়ছে উদ্বেগ

জেরুজালেম থেকে কিয়েভ, লন্ডন থেকে দিল্লি...সকলের নজর হোয়াইট হাউসের দিকে।
Published By: Kishore GhoshPosted: 08:00 PM Jan 20, 2025Updated: 08:11 PM Jan 20, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর কয়েক ঘণ্টা। তার পরেই আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য ওভাল অফিসের দায়িত্ব নেবেন এই ধনকুবের শিল্পপতি। চমকে দেওয়া কাণ্ড হল, দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর আগেই গোটা বিশ্বে প্রভাব পড়ছে হবু মার্কিন প্রেসিডেন্টের। জেরুজালেম থেকে কিয়েভ, লন্ডন থেকে ওটোয়...সকলের নজর হোয়াইট হাউসের দিকে। প্রেসিডেন্ট হয়েই যে বিশ্ব ব্যবস্থায় বৃহত্তর ভূমিকা নেবেন ট্রাম্প, এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল দিল্লিও।

Advertisement

গাজায় ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি

ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার আগেই হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। ট্রাম্প নিজেই দাবি করেছেন, গাজায় শান্তিচুক্তির কৃতিত্ব আসলে তাঁর। হামাস-ইজরায়েলের শান্তিচুক্তি সম্ভব হয়েছে গত নভেম্বরে আমেরিকায় তাঁর নেতৃত্বে রিপাবলিকানরা ফিরে আসায়। সত্যিই কি তাই? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেমোক্র্যাট বাইডেন আমলে নেতানিয়াহু এবং তাঁর উগ্র জাতীয়তাবাদী জোট সরকার বার বার যুদ্ধবিরতি পিছিয়ে দিচ্ছিল। বিলম্বের সেই কৌশলে কুঠারাঘাত করেছেন মাচো ট্রাম্প। শান্তিচুক্তিতে বড় ভূমিকা নিয়েছেন ট্রাম্পের কাছের লোক মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ। হবু প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যে বার্তা দিয়েছেন, গাজা যাতে করে ভবিষ্যতে আর জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য না হয়ে ওঠে, সেই বিষয়ে ইজরায়েলের সঙ্গে কাজ করবে আমেরিকাও। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ট্রাম্পের ডাকাবুকো চরিত্র হামাস-ইজরায়েল যুদ্ধবিরতিতে কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে। মাঝে হবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি না হলে মধ্যপ্রাচ্যকে নরক বানিয়ে দেব। হয়তো বা যুদ্ধের ভয়েই যুদ্ধ থামল এযাত্রায়!


ট্রাম্প-উদ্বেগে ব্রিটেনে 'গোপন মন্ত্রিসভা'

ট্রাম্প কুর্সিতে বসছেন আর উদ্বেগে ভুগছে ব্রিটেন। ইতিমধ্যে একটি মন্ত্রিসভা কমিটি তৈরি করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। ওই কমিটিতে স্টারমার ছাড়াও রয়েছেন চান্সেলার ব়্যাচেল রিভস, বিদেশ সচিব ডেভিড ল্যামি এবং বাণিজ্য সচিব জোনাথন রেনল্ডস। এই 'গোপন কমিটি' বার বার বৈঠক করছে বলেই খবর। উদ্বেগের বিষয় একাধিক। যেমন, ট্রাম্প জমানায় ন্যাটোর নীতি, ইউরোপ-মার্কিন বাণিজ্য নীতি, কর ছাড় ইত্যাদি। চমকে দেওয়া সিদ্ধান্তই ট্রাম্পের চরিত্র। সেই কারণেই উদ্বেগে ব্রিটেন-সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের একাধিক দেশ। এদিকে হবু প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন---শপথগ্রহণের পরেই বেশকিছু বড় সিদ্ধান্ত নেবেন। যা রাতারাতি কার্যকর করা হবে। কী হবে সেই সিদ্ধান্ত! শঙ্কায় ব্রিটেন।


ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে ট্রাম্পের প্রভাব

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের গতি বদলাতে পারে। ইতিমধ্যে লম্বা যুদ্ধে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কয়েক লক্ষ ঘরছাড়া। ইউক্রেনের বহু শহর ভৌতিক নগরীতে পরিণত হয়েছে। অপরপক্ষে একটানা যুদ্ধ ক্লান্ত রুশ সেনাও। যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ভাড়াটে সৈন্য আনতে হচ্ছে মস্কোকে। এই অবস্থায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান চাইছে দুই দেশের শান্তিকামী মানুষ। মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে। তবে সেই চুক্তি কখনই ইউক্রেনের শর্ত মেনে হবে না বলেই খবর।

শুল্ক উদ্বেগে জড়সড় কানাডার

খলিস্তানি জঙ্গি নিয়ে একাধিক ভারত বিরোধী সিদ্ধান্তের পর ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পদত্যাগ করেছেন জাস্টিন ট্রুডো। নতুন প্রধানমন্ত্রী এখনও ঠিক হয়নি। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে ওটোয়া। গোদের উপর বিষফোড়া প্রতিবেশী দেশে ক্ষমতায় আসছেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগেই হবু মার্কিন প্রেসিডেন্ট কানাডিয়ান পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ কর আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। যদিও ট্রুডোর পদত্যাগের পর পরিস্থিতির খানিক বদল এসেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এরপরেও ট্রাম্পের কানাডা নীতি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে সে দেশের রাষ্ট্রনেতারা।

'বাণিজ্য যুদ্ধ' নিয়ে উদ্বেগে বেজিং

বর্তমান বিশ্বের দুই শক্তিশালী রাষ্ট্র আমেরিকা ও চিনা। বিশ্বায়নের যুগে বাণিজ্যই সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকার বাজারে চিনা সংস্থাগুলির আগ্রাসন নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। মার্কিন অর্থনীতিতে যার কুপ্রভাব পড়েছে। চিনা সংস্থাগুলির এই আগ্রাসন একেবারেই না পসন্দ ট্রাম্পের। এদিকে গত বছরের শেষ তিন মাসে চিনের অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে ৫ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে বেজিং। সাধারণত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয় না চিন। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরায় উদ্বেগে ভুগছে বহু চিনা সংস্থা। আপাতত তাঁরা পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে বলেই জানা গিয়েছে।

ট্রাম্প জমানায় বদলের জন্য তৈরি ভারত

ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকতে না পারলেও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর থাকছেন। জানা গিয়েছে, রিপাবলিকান নতুন কর্তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলি নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিরাপত্তা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ভারতের উদ্বেগের দিকটি তিনি তুলে ধরবেন বলেই খবর। এছাড়া রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল রপ্তানির ক্ষেত্রে আনা আমেরিকার নতুন নিষেধাজ্ঞায় ভারত যে সমস্যায় পড়তে পারে, সে কথাও তোলা হবে। আপাতত ট্রাম্পের ফিরে আসায় আশাবাদী জয়শংকর। তিনি স্পষ্ট করেন---ট্রাম্পের শপথগ্রহণ একটি বিশেষ ঘটনা। বিশ্ব ব্যবস্থায় এর বৃহত্তর ভূমিকা থাকবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার আগেই হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে ঐতিহাসিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে।
  • আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের গতি বদলাতে পারে।
  • ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকতে না পারলেও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর থাকছেন।
Advertisement