মুক্তকেশী হওয়ার শাস্তি! ইরানে ‘হিজাব-বিদ্রোহী’তরুণীকে গুলি করে হত্যা

09:29 AM Sep 29, 2022 |
Advertisement

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব বিদ্রোহে আগুন জ্বলছে ইরানে। ‘নীতি পুলিশে’র বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন মুক্তকেশী তরুণীরা। হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের শিকলবন্দি করার প্রতিবাদ করছেন তাঁরা। কিন্তু থেমে নেই শাসকও। বিক্ষোভ দমনে কড়া পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। এবার হিজাব বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় গুলি করে হত্যা করা হল ২০ বছরের  তরুণী হাদিস নাজাফিকে।

Advertisement

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হিজাব বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন হাদিস নাজাফি। তখনই তাঁকে গুলি করে ‘ইসলামিক গার্ড’-রা। প্রথমে মারধর করে তার পরে তাঁর মুখে, বুকে ও ঘাড়ে ছ’বার গুলি করেছে ইরানের সরকারি বাহিনী। বলে রাখা ভাল, সম্প্রতি নাজাফির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। সেখানে দেখা যায়, হিজাব সরিয়ে এলোচুলে খোপা বাঁধতে বাঁধতে এগিয়ে চলেছেন তিনি। ইরানে কার্যত বিক্ষোভকারীদের ‘পোস্টার গার্ল’ হয়ে ওঠেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে বিক্ষোভকারীদের বার্তা দিতে চাইছে প্রশাসন ও মৌলবাদীরা। ইরান হিউম্যান রাইটসের মতে, সরকারি পুলিশ ও বাহিনীর হাতে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৬ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ জনকে।

[আরও পড়ুন: হিজাব বিক্ষোভ দমনে ইরানের রাস্তায় রাইফেল হাতে মহিলা ‘হিজাব বাহিনী’

নাজাফির মৃত্যুর পরেও কিন্তু ইরানে থামছে না বিক্ষোভ। দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল। স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের (Iran) রাস্তায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আরব দুনিয়ার মেয়েরা। হিজাব বিরোধী (Anti-Hijab) সেই আন্দোলনে শামিল পুরুষদের একাংশও। তাঁদের কণ্ঠেও ‘বেলা চাও’। এহেন প্রতিবাদের ভিডিও নিয়ে এখন নেটদুনিয়ায় জোর চর্চা।

Advertising
Advertising

এদিকে, বেকায়দায় পড়লেও কিন্তু অবস্থান বদলে নারাজ ইরানের সরকার। তেহরানের দাবি, এই বিক্ষোভে আসলে ষড়যন্ত্র এতে হাত রয়েছে আমেরিকার। একইসঙ্গে সরকারের আরও দাবি, এই আন্দোলনকে মদত দিচ্ছে ‘কোমলা’ বলে ইরানের একটি বামপন্থী সংগঠন এবং বেশ কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠী। ইতিমধ্যেই ইরানের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের প্রদেশ থেকে একাধিক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর।

উল্লেখ্য, মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাক বিধি রয়েছে ইরানে। ওই আইনে বয়স সাত বছরের বেশি হলে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট নিয়মে পরতে হয় হিজাব। ‘নীতি পুলিশের’ দল হিজাব বিধি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কিনা তা তদারকি করে থাকে। মনে করা হচ্ছে, বছর বাইশের মাহসা আমিনিকে (Mahsa Amini) নীতি পুলিশের অভিযোগেই গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, মাহসাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয়। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি তরুণীকে মারধর করা হয়নি। তবে গ্রেপ্তারের পরেই অসুস্থ হন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর কোমায় চলে যান। হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।

[আরও পড়ুন: ‘আমেরিকার মদতেই হিজাব বিক্ষোভ’, দাবি ইরানের বিদেশমন্ত্রকের

Advertisement
Next