সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার দালাল পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও আসিম মুনির। এমনই অভিযোগ তুলে গাজার সমর্থনে মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশে বিরাট মিছিল বের করেছে পাকিস্তানের কট্টরপন্থী সংগঠন 'তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান' (TLP)। এই ঘটনায় কার্যত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হল পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ২ জনের মৃত্যু ও অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কন্টেনার দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরির পাশাপাশি বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
টিএলপির অভিযোগ, আমেরিকার মদতে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। অথচ পাকিস্তান সরকার তার বিরোধিতা না করে আমেরিকার পুতুল হয়ে কাজ করছে। শাহবাজ ও মুনিরের এহেন আচরণের বিরুদ্ধেই ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাস ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয় টিএলপির তরফে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় আগেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয় ইসলামাবাদে। এরপর শুক্রবার সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন ইসলামাবাদে। মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশে তারা রওনা দিলে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশবাহিনী। কাঁদানে গ্যাস, লাঠি চার্জের পাশাপাশি গুলিও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। শুধু ইসলামাবাদ নয়, গতকাল লাহোরেও অভিযান চালিয়েছিল টিএলপি। সেখানেও পুলিশের মারে মৃত্যু হয় দু'জনের। শুক্রবারের অভিযান প্রসঙ্গে টিএলপি জানিয়েছে, এখানেও পুলিশের গুলিতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ব্যাপক জনরোষ ঠেকাতে ইসলামাবাদের রেড জোনকে কার্যত দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাস তো বটেই লাহোর, করাচি এবং পেশোয়ারে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসগুলিতেও কড়া সতর্কতা জারি করেছে পাক সরকার। ইসলামাবাদের সমস্ত হোটেল খালি করে দেওয়া হয়েছে। ইসমালাবাদের মার্কিন দূতাবাসের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, 'এই বিক্ষোভের জেরে রাস্তাঘাট বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি যান চলাচলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিক্ষোভের সময় অজানা। পাকিস্তানে অবস্থিত মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে বার্তা তাঁরা যেন এই সমাবেশ এড়িয়ে চলেন ও আশেপাশের পরিস্থিতি সম্পর্কের সচেতন থাকেন।'
এদিকে টিএলপিকে কড়া হাতে দমন করতে তৎপর হয়েছে শাহবাজ সরকার। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী বলেন, এই দলটি গাজার সংঘাতকে হাতিয়ার করে দেশের অন্দরে হিংসা ছড়াতে তৎপর হয়েছে। বিক্ষোভকারীর হাতে লাঠি, রাসায়নিক, কাচের মার্বেল, কাঁদানে গ্যাসের শেল এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গিয়েছে। যা স্পষ্ট করে ওরা হিংসা ছড়াতেই জড়ো হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের ভাড়াটে গুন্ডা বলে তোপ দেগেছেন তিনি। যদিও টিএলপির দাবি তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। পুলিশ তাদের উপর হামলা চালিয়েছে।
