সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বদল নয়, বদলার পথেই হাঁটতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প! এই আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট পদের শেষলগ্নে 'কোভিড যোদ্ধা' অ্যান্টনি ফাউচি এবং প্রাক্তন সেনাকর্তা মার্ক মাইলিকে 'রক্ষাকবচ' দিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ২০২১-এর ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেস ভবনে (ক্যাপিটল হিল) হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন ফাউচি ও মাইলি। স্বাভাবিকভাবেই, তাঁরা এবার নতুন প্রেসিডেন্টের রোষানলে পড়তে পারেন বলে মনে করেন অনেকেই।
'প্রেসিডেনশিয়াল পাওয়ার' বা পদ প্রদত্ত বিশেষ ক্ষমতার এহেন প্রয়োগ আমেরিকায় বেনজির। আজ সোমবার আর কয়েক ঘণ্টা পরেই প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তে হবে বাইডেনকে। আমেরিকার ৪৭তম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শপথ নেবেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র। তার আগেই পদের শক্তি ব্যবহার করে ফাউচি ও মাইলিকে 'প্রেসিডেনশিয়াল পার্ডন ' বা ক্ষমার শংসাপত্র দিয়ে গেলেন বাইডেন। সাধারণত, দোষীদের এহেন শংসাপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ফাউচি ও জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ মাইলির বিরুদ্ধে এখনও কোনও তদন্ত শুরু হয়নি বা তাঁদের কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি।
জানা গিয়েছে, এই দুজন ছাড়াও প্রাক্তন রিপাবলিকান আইন প্রণেতা লিজ চেনিকেও বাইডেনের ক্ষমতার তালিকায় রয়েছেন। বলে রাখা ভালো, ক্যাপিটল হামলার তদন্তে গঠিত কংগ্রেসের সিলেক্ট কমিটিতে ছিলেন চেনি। এহেন বেনজির পদক্ষেপের পক্ষে বাইডেনের যুক্তি, "আমি আইনের শাসনে বিশ্বাসী। আশা করছি, আমাদের বিচার ব্যবস্থার শক্তি ও সামর্থ বজায় থাকবে। তবে বর্তমানে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই হাত-পা গুটিয়ে বসে থেকে বিবেকের দংশন সইতে পারব না।"
৫ নভেম্বর, ২০২৪ নির্বাচন জিতে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন ট্রাম্প। সিএনএন সূত্রে খবর, জয়লাভের সঙ্গে সঙ্গে নিজের 'শত্রু তালিকা' তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। সেখানেই নাম রয়েছে অ্যান্টনি ফাউচি এবং মার্ক মাইলির। কারণ ২০২০ সালের নির্বাচনের ক্ষত এখনও ট্রাম্পের মনে দগদগে। সেই সময়ই হোয়াইট হাউসের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ছিলেন ফাউচি। তাঁর সঙ্গে ট্রাম্পের আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক কারও অজানা নয়। সেই সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, "মূর্খ ফাউচির কথা শুনলে ৫ লক্ষ মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হত।" এদিকে, সেই সময় থেকে নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে ফাউচির বিরুদ্ধে। একই অভিযোগে বিদ্ধ প্রাক্তন সেনাকর্তা মাইলিও। তাই ক্ষমতায় এসে এই অভিযোগগুলোকে হাতিয়ার করে ট্রাম্প 'বদলা' নিতে পারেন এই দুজনের থেকে। ফলে যাওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট পদের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে কাছের লোকদের রক্ষা করলেন বাইডেন।