সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ানমারের জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভায় হামলা 'যন্ত্রপাখি'র। মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার থেকে ভিড়ের মধ্যে ছোড়া হয় দুটি বোমা। ভয়াবহ এই হামলায় অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি ৮০ জন মানুষ আহত হয়েছেন। মৃত ও আহতদের তালিকায় রয়েছে অসংখ্য শিশু ও মহিলা। ভয়াবহ এই হামলায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত সোমবার থাদিঙ্গুত পূর্ণিমা উৎসব ও জুন্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ শত শত মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন চাউং-উ শহরে। সেই সময় সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ হঠাৎ আকাশে চক্কর কাটতে দেখা যায় একটি মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার। সেখান থেকে দুটি বোমা ছোড়া হয় ভিড়ের মধ্যে। যার জেরে অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু ও প্রায় ৮০ জন আহত হয়েছেন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন বহু শিশু ও মহিলা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রতিবাদ সভার আয়োজকরা বিপদ বুঝে সতর্কবার্তা দেওয়ার ফলে সেখানে উপস্থিত জনতার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। না হলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ত।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই মায়ানমারে রক্তাক্ত বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে। ২০২৩ সাল থেকে জুন্টার সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে আরাকান আর্মির। রাখাইন প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষ চলছে দুই দলের। গত বছর এই অঞ্চলের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। এরপরেই আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়েছে জুন্টা। ২০২১ সালে জুন্টা দেশের ক্ষমতা দখলের পর থেকে জাতিগত সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। বাস্তুহারা হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
জুন্টার সাম্প্রতিক এই হামলার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। জানা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জেরে বর্তমানে জুন্টার পক্ষে সামরিক অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় বিমান ও হেলিকপ্টারের অভাবে প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করে হামলা চালাতে শুরু করেছে জুন্টা।
