সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরে উচ্ছ্বসিত চিন। তিন দেশ (ভারত, রাশিয়া ও চিন)কে গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বলে উল্লেখ করে চৈনিক বার্তা, 'এই তিন দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিন দেশ মিলে গ্লোবাল সাউথের ভবিষ্যৎ লিখব।' সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়ে আমেরিকার দাদাগিরি ও ট্রাম্পের খামখেয়ালি শুল্কনীতির মাঝে রুশ, ভারত ও চিনকে একসারিতে রেখে বেজিংয়ের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
পুতিনের ভারত সফর প্রসঙ্গে সম্প্রতি বিবৃতি জারি করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন। তিনি বলেন, ভারত, রাশিয়া এবং চিন উদীয়মান বাজার অর্থনীতি ও গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ফলে তিন দেশের বন্ধুত্ব শুধু নিজেদের জন্য নয়, বরং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি, নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি তথা স্থিতিশীলতার জন্যও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি ভারত প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, চিন দূরদর্শী পরিকল্পনায় ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী, শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সম্পর্ক গড়ে তুলতে ইচ্ছুক। যাতে উভয় দেশ এবং তাঁদের জনগণ লাভবান হয়। এবং এশিয়া ও তার বাইরেও শান্তি ও সমৃদ্ধিতে অবদান রাখা যায়।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে আমেরিকার লাগামছাড়া শুল্কের জেরে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছিল রাশিয়া, চিন ও ভারত। এখনও ভারতের উপর জারি রয়েছে ৫০ শতাংশ শুল্কের কোপ। এই অবস্থায় চলতি বছরেই চিনে এসসিও সামিটে রুশ-ভারত ও চিনের ঐক্যের ছবি দেখেছে গোটা বিশ্ব। কূটনৈতিক মহলের দাবি, ট্রাম্পের খামখেয়ালি নীতিই বুমেরাং হয়েছে আমেরিকার জন্য। এশিয়ার তিন শক্তিশালী দেশের একজোট হওয়া আমেরিকার জন্য যথেষ্ট বিপদের বার্তা। এই অবস্থায় পুতিনের ভারত সফর নিয়ে চিনের এহেন বার্তা আসলে আমেরিকাকে নিশানা করেই বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
এদিকে ভারত সফরে এসে পুতিনও জানিয়েছেন, ভারত ও চিন রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মস্কো এই সম্পর্ককে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়। তিনি বিশ্বাস করেন, ভারত ও চিন নিজেরাই পারস্পরিকভাবে নিজেদের বিরধ মিটিয়ে নিতে সক্ষম। রাশিয়া দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। পাশাপাশি, মার্কিন দাদাগিরিকে ফুৎকারে উড়িয়ে পুতিন জানিয়েছিলেন, “ভারতের অর্থনীতি ক্রমশ বড় হচ্ছে। বাধাহীনভাবে রুশ তেল ভারতের বুকে বয়ে যাবে। তেল-গ্যাস-কয়লার মতো জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে রাশিয়া নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী।” তিনি আরও বলেন, “দু’দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। আগামী দিনে বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা আমরা একসঙ্গে মোকাবিলা করব। দু’দেশের ভবিষ্যত যথেষ্ট উজ্বল।” এছাড়া, ভারত ও রাশিয়া ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা কর্মসূচিতে সম্মত হয়েছে।
