shono
Advertisement
Syria Civil War

ইরানের ভুলেই পতন আসাদের, বলছেন ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত

২০১১ সাল থেকে গৃহযুদ্ধের আগুনে জ্বলছে সিরিয়া।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 09:29 PM Dec 09, 2024Updated: 02:01 PM Dec 10, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিরিয়ায় অবসান আসাদ যুগের। গৃহযুদ্ধে (Syria Civil War) বিদ্রোহীদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছেন গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন তিনি। এই লড়াইয়ে তাঁকে সাহায্য করছিল ইরান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। আর ইরানের ভুল হিসাবেই নাকি পতন ঘটেছে আসাদ সাম্রাজ্যের। এমনই দাবি করলেন ভারতে নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজার। তিনি সাফ বলেন, তেল আভিভের সঙ্গে তেহরানের সংঘাতের জড়ানোর ফলই ভুগতে হয়েছে সিরিয়াকে।  

Advertisement

২০১১ সালে আরব বসন্তের হাওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে সিরিয়ায়। আকাশ বাতাস কেঁপে ওঠে একনায়ক হঠাও, গণতন্ত্র ফেরাও স্লোগানে। শুরু হয়ে যায় গৃহযুদ্ধ। এই লড়াই তীব্র আকার ধারণ করে চলতি বছরের নভেম্বরে। গত ২৭ তারিখ আসাদ বাহিনীর হয়ে লড়তে অস্বীকার করে ইরানের মদতপুষ্ট হেজবোল্লা। সেদিনই সিরিয়ার অন্যতম প্রধান শহর আলেপ্পোর একটা বড় অংশ দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা। যাদের মাথায় রয়েছে আল কায়দার শাখা সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। তার পর ১৩ দিনের হামলা পালটার পর আসাদ বাহিনীকে পর্যদুস্ত করে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী।

এনিয়েই সোমবার রিউভেন আজার বলেন, "ইরানের হিসাবে খুব বড় ভুল ছিল। সেই পথে হেঁটে ভুল করেছে হেজবোল্লাও। ওঁরা বুঝতে পারেনি ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ফল কতটা ভয়ংকর হতে পারে। ইজরায়েলি সেনা হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লাকে খতম করেছে। নিকেশ করেছে হাজার হাজার জেহাদিকে। আর তাতেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল আসাদ বাহিনী। বিদ্রোহীরা তীক্ষ্ণভাবে এই ঘটনাপ্রবাহকে লক্ষ্য করেছিল। সুযোগ বুঝে আঘাত হানে আসাদ সাম্রাজ্যের উপর। সিরিয়ায় যা কিছু হয়েছে সেটা ইজরায়েলের সঙ্গে ইরানের সংঘাতে জড়ানোর ফল।

এই মুহূর্তে সিরিয়ার সঙ্গে ইজরায়েলের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ার কোনও ইচ্ছা নেই বলেই জানান রিউভেন। তিনি বলেন, "সিরিয়ার সঙ্গে আমাদের সংঘাতে যাওয়ার কোনও ইচ্ছে নেই। কিন্তু সিরিয়ার তরফ থেকে যদি আমাদের ভূখণ্ডে কোনও হামলা হয় তাহলে আমরা পালটা দিতে পিছপা হব না।" উল্লেখ্য, বাশারের আগে ১৯৭১ সাল থেকে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাঁর বাবা হাফেজ আল-আসাদ। ২০০০ সালে বাবার মৃত্যু হলে দেশটির প্রেসিডেন্ট হন বাশার। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ বছর ধরে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির ক্ষমতার রাশ ধরে রেখেছিল আসাদ পরিবার। কিন্তু জলঘোলা হতে শুরু করে ২০১১ সালে।আসাদকে গদিচ্যুত করতে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিদ্রোহীদের যৌথমঞ্চ ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস’ (এসডিএফ)। কুর্দ বাহিনী পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজি) নেতৃত্বে আরম্ভ হয় এক অসম যুদ্ধ। লড়াইয়ে বিদ্রোহীদের সাহায্য করতে শুরু করে আমেরিকা। পাশাপাশি আসাদের হয়ে আসরে নামে ইরানের মদতপুষ্ট হেজবোল্লা, রাশিয়া।

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজা সংঘাত বড় প্রভাব ফেলে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে। গাজায় হামাসের কোমড় ভেঙে দিয়েছে ইজরায়েল। যাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিল লেবাননের হেজবোল্লা। ইরানের মদতপুষ্ট এই জঙ্গি সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরাল্লাকে খতম করে ইজরায়েলি সেনা। ফলে দুর্বল হয়ে যায় হেজবোল্লা। প্রায় একদশক ধরে ইরানের নির্দেশে আসাদ সরকারের হয়ে লড়াই ছিল তারা। কিন্তু লেবাননের লড়াই ছেড়ে আসাদের পাশে দাঁড়ানো হেজবোল্লার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। তাই তারা সিরিয়া থেকে সরে আসার ঘোষণা করতেই হামলা শুরু করে আল শাম। এদিকে দীর্ঘ দুবছর ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে লড়াই করায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে গণ্য হয় গিয়েছে সিরিয়া। ফলে সব দিক থেকে সাঁড়াশি চাপে পড়েন আসাদ। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগায় বিদ্রোহীরা। মাত্র ১৩ দিনেই আসাদ সাম্রাজ্যের পতন ঘটায় তারা। কিন্তু গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াই এখন কার্যত হাইজ্যাক করে নিয়েছে জেহাদিরা। যা সিরিয়ার নাগরিকদের পাশাপাশি গোটা বিশ্বের কাছে নতুন করে ত্রাস হয়ে উঠতে পারে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছেন গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন তিনি।
  • ইরানের ভুল হিসাবেই নাকি পতন ঘটেছে আসাদ সাম্রাজ্যের। এমনই দাবি করলেন ভারতে নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজার।
  • রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজা সংঘাত বড় প্রভাব ফেলে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে। গাজায় হামাসের কোমড় ভেঙে দিয়েছে ইজরায়েল।
Advertisement